সুঠাম ও আকর্ষণীয় দেহ পেতে যা করবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:০১ পিএম, মঙ্গলবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৮ | ১৮৯৮

বিভিন্ন কারণে আপনার শরীরটা আকর্ষণীয় নাও হতে পারে। যেকোনো কারণে হয়তো আপনি মুটিয়ে গেছেন। সে জন্য অবশ্য হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। ইচ্ছা এবং চেষ্টা থাকলে আপনি নিজেই গড়ে নিতে পারেন আপনার পছন্দমতো শরীর। অবশ্য এ জন্য আপনাকে বেশ কিছু নিয়ম যেমন পালন করে চলতে হবে, তেমনি লোভনীয় কিছু খাবার থেকে আপনার নজরটা সরিয়ে নিতে হবে। অন্যথায় ইচ্ছা ও চেষ্টা থাকলেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে না। আবার অনেকের ইচ্ছে থাকে বলিউড হলিউড দাপিয়ে বেড়ানো নায়কদের মতো পেশীবহুল শরীরের অধিকারী হবার। কিন্তু কীভাবে? আসুন জেনে নেই সেইরকম কিছু টিপস।

১)খেতে হবে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটঃ ফ্যাট জাতীয় খাবার আবার স্বাস্থ্যকর হয় কী করে? অবাক হচ্ছেন, তাহলে জেনে রাখুন স্বাস্থ্যকর ফ্যাট জাতীয় খাবারগুলো হচ্ছে ডিমের কুসুম, নারকেল ইত্যাদি। এসব খাবার রয়েছে মাঝারি আকারের কার্বন শিকল যা সহজেই বিপাকযোগ্য। অন্যদিকে অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট জাতীয় খাবার হচ্ছে গরু, খাসির মাংস।

২)বাড়িয়ে ফেলুন প্রোটিন গ্রহনের পরিমাণঃ একজন সুস্থ স্বাভাবিক ওজনের কর্মক্ষম মানুষের প্রতিদিন প্রতিকেজি ওজনের জন্য দুই গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা প্রয়োজন অর্থাত্‍ ব্যক্তির ওজন যদি হয় পঞ্চাশ কেজি তবে দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা একশ গ্রাম। মনে রাখা প্রয়োজন দৈহিক ক্ষয়পূরণের পর অতিরিক্ত প্রোটিন মাসেল অর্থাত্‍ পেশিতে জমা হয়।তাই যারা সুন্দর পেশীবহুল বডি বানাতে চান ব্যায়ামের পাশাপাশি ডিম, দুধ,মাছ, শিমের বীচি, বাদাম ও ডাল জাতীয় খাবার খান। 

৩)খেতে হবে ক্যালরি সমৃদ্ধ খাদ্য: খেতে হবে ক্যালরিবহুল খাবার। যেমন: কলা। একটি কলায় থাকে প্রায় ১০০ ক্যালরি, এক পিস পনিরে থাকে ৭০ ক্যালরি সেইসাথে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফ্যাট ও কোলেস্টেরল। প্রতিটি গমের রুটিতে থাকে প্রায় ৬৯ ক্যালরি।

৪)প্রতিদিনের রুটিনে আনুন পরিবর্তনঃ প্রতিদিন নিয়ম করে কয়েকটি মিষ্টি ফল খান। যেমনঃ আপেল, আম, কলা, কমলা, ডালিম ইত্যাদি। নিয়মিত পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেয়া ভালোস্বাস্থ্যের জন্য জরুরী। 

৫)খাদ্যাভাসে আনুন পরিবর্তনঃ যেমন প্রতিদিন দুপুর বা রাতের খাবারের পর খেতে পারেন মিষ্টি দই। প্রতিদিন মিষ্টি দই খেলে দ্রুত ওজন বাড়বে। খাবার ভালো করে চিবিয়ে খাবেন।

৬)গ্রহণ করতে পারেন কিছু হেলথ সাপ্লিমেন্টঃ চিকিত্সকের পরামর্শ অনুসারে খেতে পারেন কিছু হেলথ সাপ্লিমেন্ট যেমন মাল্টি ভিটামিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি।

৭)রান্নায় আনুন বৈচিত্র্য: এক রেসিপি প্রতিদিন খেলে তার স্বাদে বিরক্তি এসে যায়। তাই রান্নায় বৈচিত্র্য আনা খুব জরুরী। প্রতি বেলার খাবারের স্বাদ বাড়াতে যোগ করতে পারেন সস,আচার চাটনি। 

৮)কিছু অভ্যাসকে দিন বিদায়ঃ কফি ও চা খাওয়া কমিয়ে ফেলুন। বিশেষ করে দুপুর বা রাতের খাবার গ্রহনের পরপরই চা কফি খাবার অভ্যাস ত্যাগ করুন। কেননা খাবার গ্রহনের পরপরই চা কফি খেলে তা মিনারেল গ্রহনের হারকে কমিয়ে দেয়। বিশেষ করে খাবারের আয়রন দেহ শোষন করতে পারেনা। সরু,লিকলিকে চেহারাকে বিদায় দিয়ে সুন্দর সুঠাম দেহের অধিকারী হতে হলে এই টিপসগুলো কাজে লাগাতে পারেন অনায়াসেই।

৯)ব্যায়ামঃ শরীর-মন সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে হলে আমাদের ব্যায়াম করার নিয়মগুলো ভালোভাবে জেনে শুরু করতে হবে। যেমন: শারীরিক ক্ষমতা ও বয়স অনুযায়ী ব্যায়ামের ধরন নির্ধারন করুন। ব্যায়াম এর শুরুতেই আপনার ওজন, বিএমআই ইত্যাদি লিখে রাখুন, কেমন উন্নতি হচ্ছে তা প্রতিমাসে খেয়াল করুন। ভরপেট খাবার খেয়ে ব্যায়াম করা যাবে না। খাওয়ার অন্তত ২ ঘণ্টা পর ব্যায়াম করুন। খুব টাইট পোশাক পরে ব্যায়াম করা ঠিক না। হালকা ঢিলেঢালা আরামদায়দ পোশাক পরে ব্যায়াম করুন। প্রথমেই ভারী ব্যায়াম করা ঠিক নয়। আগে ১০ মিনিট ওর্য়াম আপ করে নিন। ব্যায়াম করার সময় নিঃশ্বাস স্বাভাবিকভাবে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। কখনও খুব কষ্ট করে নিঃশ্বাস নেবেন না। যে কোনো ধরণের শারীরিক কষ্ট বা অসস্তি হওয়া মাত্র ব্যায়াম থামিয়ে দেবেন। সকাল অথবা সন্ধা যখনই হোক প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় ব্যায়াম করুন। সব বয়সের মানুষের জন্যই নির্দিষ্ট ব্যায়াম রয়েছে। প্রয়োজনে চিকিৎসক এবং প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিন। গর্ভবতীদের জন্য কিছু ব্যায়াম রয়েছে, এগুলো নিয়মিত করলে আপনি থাকবেন মানসিক চাপমুক্ত এবং আপনার শরীরও থাকবে সুস্থ্। মন খারাপ নিয়ে ব্যায়াম করতে যাবেন না। প্রথমে মন ভালো করুন, আনন্দ নিয়ে ব্যায়াম করুন। ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে আমরা যদি নিয়মিত কিছু ব্যায়াম, শরীর চর্চা বা শারীরিক পরিশ্রম না করি। অদূর ভবিষ্যতে বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভানা বেড়ে যাবে। অন্য কোনো কিছু না করলে নিয়মিত হাটার অভ্যেস গড়ে তুলুন। সুস্থ থাকুন।