স্বামী হাতে স্ত্রীর অমানুষিক নির্যাতন


স্বামীর নির্যাতনের ভয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে বাঁচতে চেয়েছিলেন গৃহবধূ রিনা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তার। স্বামী তাকে ধরে এনে চারদিন ঘরে আটকে রেখে চালায় অমানুষিক নির্যাতন। শিকলে বেঁধে মাথার চুল কেটে জোর পূর্বক প্রস্রাব খাইয়ে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তার ওপর নির্যাতন চালায় পাষণ্ড স্বামী। অমানবিক এ ঘটনাটি ঘটেছে ফেনীর ছাগলনাইয়ায়।
খবর পেয়ে রোববার (৮ জুলাই) রাতে নির্যাতিতা গৃহবধূকে উদ্ধার করে অভিযুক্ত স্বামী মঞ্জুরুল আলম বাদল হাজারীকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ২০১৭ সালের ২২ মার্চ ফেনী সদর উপজেলার কাতালিয়া গ্রামের মৃত আমিনুল এহসান বাবুলের মেয়ে তাহেরা আক্তার রিনার (২৪) সঙ্গে ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নের উত্তর হরিপুর গ্রামের মৃত নজির আহাম্মদ হাজারীর ছেলে মঞ্জুরুল আলম বাদল হাজারীর সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাহেরার ওপর চলে স্বামী মঞ্জুরুল আলম বাদল হাজারীর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।
একপর্যায়ে স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে তাহেরা স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। ৫ জুলাই বৃহস্পতিবার স্বামী মঞ্জুরুল তাহেরাকে তার নানার বাড়ি থেকে বাড়িতে এনে টানা চারদিন ঘরে শিকলে বেঁধে মাথার চুল কেটে জোরপূর্বক প্রস্রাব খাইয়ে পিটিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানুষিক নির্যাতন চালায়।
পরে খবর পেয়ে ছাগলনাইয়া থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) নাঈম উদ্দিন ও এসআই মো. শহিদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল রোববার বিকালে হাজারীর বাড়ি থেকে নির্যাতিত গৃহবধূ তাহেরাকে উদ্ধার করে ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে রাতেই একই ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকা থেকে স্বামী মঞ্জুরুল আলম বাদল হাজারীকে আটক করে পুলিশ।
এলাকাবাসী জানায়, রিনাকে বিয়ে করার পূর্বে বাদল হাজারী আরো ২টি বিয়ে করেছে। ওই দুই স্ত্রীর দুটি সন্তান রয়েছে। বাদল হাজারীর অমানুষিক নির্যাতন সইতে না পেরে তারা সংসার ছেড়ে চলে যায়।
ছাগলনাইয়া থানার ওসি এম এম মোরশেদ বলেন, মঞ্জুরুল আলম বাদল হাজারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা হয়েছে। দ্রুতই তাকে আদারতে হাজির করা হবে।