গ্রামীন সড়ক দখলের অভিযোগ জনযান চলাচলে বিঘ্নিত


টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার আনাইতারা ইউনিয়নের আঘৈদ গ্রামে একটি গ্রামীন সড়ক দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ওই রাস্তা দিয়ে জনযান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা প্রভাবশালী এম এ লতিফ লেবু সড়কটি দখল করে বাঁশের প্রাচীর তৈরি ও কয়েকটি গাছের চারা রোপন করেছনে বলে গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ইউনিয়নের খাগুটিয়া বাজার থেকে আঘৈদ-আনাইতারা গ্রামে যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটির আঘৈদ এলাকায় জনযান চলাচলের সুবিধার্থে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ইট সলিং করা হচ্ছে। ওই ইট সলিংয়ের উপর সিমেন্টের খুঁটি স্থাপন করে বাঁশের প্রাচীর দিয়ে রাস্তার জায়গা দখল করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এম এ লতিফ লেবু। তিনি সেখানে বিভিন্ন ধরনের প্রায় ২০টি গাছের চারাও রোপন করেছেন। এম এ লতিফ গত ইউপি নির্বাচনে আনাইতারা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বিদ্বতা করে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৭০ বছরের পুরোনো ওই রাস্তা দিয়ে ইউনিয়নটির প্রায় ৫ হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে। সড়কটি দিয়ে আনাইতারা বাজার, আটঘড়ি বাজার, খাগুটিয়া বাজার, আনাইতারা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, খাগুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ মির্জাপুর উপজেলা সদরে স্থানীয় লোকজন যাতায়াত করেন। আংশিক কাঁচা হলেও এই সড়কে প্রতিদিন তিন শতাধিক ভাড়ায় চালিত ও ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও অন্যান্য যানবাহন চলাচল করে।
কিন্তু প্রায় ১০ দিন আগে ১৪ ফুট প্রশস্ত সড়কটির প্রায় ১০ ফুট জায়গায় বাঁশের প্রাচীর তৈরি করে গাছ লাগানোর কারণে জনদুর্ভোগ বেড়েই চলছে।
আনাইতারা গ্রামের বাসিন্দা মনিন্দ্র কৈবর্ত্য দাস (৭২) বলেন, জন্মের পর থেকে তাঁরা ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করছেন। রাস্তাটি এভাবে কেউ দখল করবে তা তিনি চিন্তাও করেননি। একই গ্রামের আব্দুল গনি মিয়া (৬৫) বলেন, জনযান চলাচলের জনন্য রাস্তাটি রক্ষা করা খুবই দরকার। অন্যথায় এলাকার লোকজনের চলাচলের উপায় থাকবেনা।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতা এম এ লতিফ লেবু বলেন, তাদের পৈত্রিক সম্পত্তির জায়গায় পুকুর কাটা হয়েছিল। সেই পুকুরের পাড় দিয়ে মানুষ চলাচল করতে করতে তা রাস্তায় পরিনত হয়েছে। তাছাড়া রাস্তার দক্ষিণ পাশ দিয়ে সরকারি রাস্তা রয়েছে। অন্য ব্যক্তিরা রাস্তার জায়গা দখল করে রেখেছেন। আমাদের জমির ওপর দিয়ে যাওয়া রাস্তাটি এখন ইট সলিং করা হচ্ছে। ইট সলিংয়ের আগে যদি আমাদের জায়গা উদ্ধার করতে না পারি তাহলে আমর পৈত্রিক সম্পত্তি ফিরে পাবোনা। তাই আনাইতারা গ্রামের স্থানীয় মাতাব্বরগণের উপস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সার্ভেয়ার তার জমির সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তারপর তিনি তার জমির সীমানায় বেড়া ও গাছের চারা লাগিয়েছেন বলে জানান।
আনাইতারা ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী ব্যবহার করছেন। এ রাস্তা তিনি কোনভাবেই দখল করতে পারেননা। তাছাড়া আমার পরিষদের সার্ভেয়ার ওই জমি পরিমাপ করেননি। তিনি নিজেই অন্য সার্ভেয়ার নিয়ে নিজের মতো পরিমাপ করেছেন বলে তিনি শুনেছেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।