মির্জাপুরের
১২৫ বছর বয়সী আইন উদ্দিনের শেষ ইচ্ছে শেখ হাসিনার স্বাক্ষাত


১শ ২৫ বছরে পা রাখা টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের আইন উদ্দিন মিয়া ১৯৫৭ সালে কাগমারি সম্মেলনের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। তিনি বলেন, তার কন্যা শেখ হাসিনা বর্তমানে দেশ ভালো ভাবে চালাচ্ছেন। তার জীবনের শেষ ইচ্ছা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে তিনি যাতে দেশটা আরো ভালো ভাবে চালাতে পারেন সেজন্য তাকে একটু আশির্বাদ করা।
কারো সাহায্য ও সহযোগীতা ছাড়াই একাই চলাফেরা করতে পারেন এই বৃদ্ধ। এছাড়া বৃদ্ধ বয়সেও তিনি চশমা ছাড়াই পত্রিকা পড়েন। আইন উদ্দিনের বাড়ি মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের কদিম দেওহাটা গ্রামে। পিতার নাম মৃত. হাসেম উদ্দিন। মায়ের নাম মৃত. মারজান বেগম।.চার ভাই বোনের মধ্যে আইন উদ্দিন দ্বিতীয়। বাকি সকল ভাই বোনই প্রয়াত হয়েছেন।
জাতীয় পরিচয় পত্র অনুসারে তার জন্ম তারিখ ১৮৯৩ সালে ১০ মে। সে হিসেবে তার বর্তমান বয়স প্রায় ১২৪ পার হয়েছে। দ্বীতীয় শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন উপজেলা সদরের পোষ্টকামুরী গ্রামের আকালী সরকারের মক্তবে। পাখির পলক, করচা এবং বাঁশের কঞ্চি দিয়ে কলম বানিয়ে কলাপাতা এবং তালপাতায় তিনি লিখেছেন।
তিনি বিবাহিত জীবনে ১১ ছেলে ও ৬ মেয়ের জনক। এরমধ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধে তার এক ভাতিজা রফিকুল ইসলাম পাক বাহিনীর গুলিতে শহীদ হন। বর্তমানে ২ ছেলে শহিদুল ইসলাম ও হাবিবুর রহমান এবং ১ মেয়ে নুরজাহান জীবিত রয়েছেন। নাতী নাতনীর সংখ্যা ৩৫জন। এছাড়া দীর্ঘ এই বয়সে তিনি কোন ওষুধ খান না বলে তার দুই ছেলে শহিদুল ইসলাম ও হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন।
এই বয়সেও বৃদ্ধ আইন উদ্দিন মিয়ার স্মৃতিশক্তি এখনও ঠিক আছে বলে জানান, তার ভাতিজা মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিকুর রহমান ও শাজাহান সিরাজ।
স্মৃতি মন্থন করে আইন উদ্দিন জানান, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ দেখেছি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ দেখেছি, দেখেছি পঞ্চাশের মর্মান্তর। ওই সময় না খেয়ে হাজার হাজার মানুষকে মরতেও দেখেছি। সে আকালে না খেয়ে তার এক ছেলে মফিজ উদ্দিনও মারা যান বলে তিনি জানিয়েছেন।
প্রতিদিন সকালে তিনি তার ভাতিজা মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান সিরাজের মোটরসাইকেলের পেছনে বসে দেওহাটা বাজারে চা খেতে যান। সেখানে প্রতিদিনের পত্র-পত্রিকা পড়ে দেশ বিদেশের খবর জানার চেষ্টা করেন। প্রতিদিন ফজরের নামাজ আদায় করে তিনি হেঁটে হেঁটে প্রতিবেশিদের খোজ-খবরও নেন।
শতাধিক বছরের প্রবীণ আইন উদ্দিন রাজনৈতিক ভাবেও সচেতন। এই বয়সে এসে তিনি তার জীবনের শেষ ইচ্ছে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে স্বাক্ষাত করার প্রহর গুনছেন। তিনি আদৌ জানেননা তার এই আশা বাস্তবে রুপ নিবে কিনা।