শাহজাহানের দা বাহিনী

চকরিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি

চকরিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৪:৫৪ পিএম, বুধবার, ২১ মার্চ ২০১৮ | ৪৯১

কক্সবাজারের চকরিয়ায় দুই দিনে তিন ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে মারধর ও টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে দা বাহিনীর সন্ত্রাসীরা। গত সোমবার দুইজন ও গত মঙ্গলবার এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ওই বাহিনীর সন্ত্রাসীরা। এতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের বানিয়ারছড়া এলাকায় এঘটনা ঘটে ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার ও শান্তিবাজারের ব্যবসায়ী বশির আহমদ মোটরসাইকেল নিয়ে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের যাওয়ার সময় কক্সবাজার-চট্টগ্রাম- কক্সবাজার মহাসড়কের বানিয়ারছড়ার আমতলী এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে জঙ্গলের ভেতরে নিয়ে যায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী শাহজাহানের নেতৃত্বে দা বাহিনীর সন্ত্রাসীরা। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধারে অভিযান চালায়।

পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে শাহজাহানের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা ২০-২২ রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে পালিয়ে যায়। এসময় পাহাড় থেকে সাবেক মেম্বার বশির আহমদ ও তাঁর মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে।

ব্যবসায়ীরা বলেন, গত সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বানিয়ারছড়া বাজার থেকে দুই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ব্যাপক মারধর করা হয়। এসময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

এরপর রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাঁদের ছেড়ে দেয়। অপহরণ ও মারধরের শিকার ব্যবসায়ীরা হলেন মো. জমির উদ্দিন ও মো. নান্নু। জমির তরকারির ব্যবসা ও নান্নু শুটকির ব্যবসা করেন। রাত ১০টার দিকে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জমির উদ্দিনকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।  

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, বানিয়ারছড়ার পাহাড়ে দা বাহিনী নামের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে। এই গ্রুপের নেতা ছিলেন মুসা কাক্কা। টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ২০১৬ সালের ৩ মার্চ দা বাহিনীর সদস্যদের অন্ত:কোন্দলে খুন হন মোরশেদ নামের এক সদস্য।

ওই মামলার প্রধান আসামি হন বাহিনী প্রধান মুসা কাক্কা। কয়েকমাস আগে মুসা কাক্কা গ্রেপ্তার হলে বাহিনীর দায়িত্ব নেন শাহাজাহান। শাহাজাহানের বিরুদ্ধে অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। তৎমধ্যে একটি হত্যা মামলা, দুটি অপহরণ মামলা, ফাইতং ইউনিয়ন পরিষদে হামলা ও বরইতলী বনবিট কর্মকর্তা সজিব দেবরায়কে পিটিয়ে জখম মামলার প্রধান আসামি তিনি।

এছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে আরও পাঁচটি বনমামলা রয়েছে। শাহজাহানের দা বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা। তাঁর বিরুদ্ধে কেউ নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দিতে চাননি।

জানতে চাইলে ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, শাহজাহানের বিরুদ্ধে হত্যা-অপহরণসহ অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। ব্যবসায়ীকে উদ্ধার ও দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী শাহজাহানকে ধরতে পুলিশ অভিযান চালায়। তবে তাকে ধরা সম্ভব হয়নি।

এঘটনায় অপহরণ ও হামলার শিকার ব্যবসায়ী বশির আহমদ মামলার প্রস্ততি নিচ্ছেন। তবে পুলিশকে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসী কর্তৃক গুলি ছোঁড়ার কথা অস্বীকার করেন তিনি।