ঘটছে দুর্ঘটনা
সরকারী নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মহাসড়কে টমটমের রাজত্ব


চকরিয়া উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে পড়ছে। সম্প্রতি পৌর শহর ও মহাসড়কে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক (টমটম) সংঘর্ষে একাধিক নারীপুরুষ লাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে।
ব্যাটারি চালিত টমটম মহাসড়কে চলাচলে সরকারী নিষেধাজ্ঞা থাকলেও দখলে নিয়েছে পৌর এলাকাসহ নিকটস্থ মহাসড়ক। চকরিয়ায় গেল দু’মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় অর্ধ শতাধিক হতাহতের তত্ত্ব নিশ্চিত করেন নিসচা নামক বেসরকারি সংঘটন।
সম্প্রতি ডুলাহাজারা ডিগ্রি কলেজের সামনে মহাসড়কে টমটম-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত হয় এক মেধাবী কলেজ ছাত্র। মহাসড়কে ধীরগতি যান টমটমের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় অন্যান্য যানবাহন চলাচল মারাত্মক সমস্যা বলে জানায় চালকরা। হাইওয়ে পুলিশ এসব টমটম আটক করে মামলা ও জরিমানার টাকা আদায় করে ফের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে বলে সচেতন মহল জানায়।
এদিকে পৌর শহর থেকে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হাঁসের দিঘি পর্যন্ত রাম রাজত্ব কায়েম করছে ব্যাটারি চালিত এ টমটম। যানবাহন চালকদের দাবী এসব এলাকার মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের অভিযান কখনো দেখা যায়নি।
এ ব্যাপারে চিরিংগা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সার্জেন্ট মোঃ নুরে আলম পলাশ বলেন স্থানীয়দের সহযোগীতা না থাকায় ওদিক (ফাঁসিয়াখালী) থেকে টমটম আটক করে আনতে সমস্যায় পড়তে হয়। তবে এখন থেকে ব্যবস্থা নেবেন বলে তিনি জানান।
সরেজমিনে চকরিয়া থানা রাস্তার মাথা আর নিউ মার্কেটের সামনে যান ও জন চলাচল সড়ক জুড়ে রয়েছে টমটম টার্মিনাল। এসব টার্মিনাল থেকে পৌর শহরের অদূরবর্তী বিভিন্ন এলাকা ও বাজার পর্যন্ত লাইন দেওয়া হয়েছে। এতে দুর্ঘটনার পাশাপাশি টমটম জড়তায় পথযাত্রী চলাচল ও কেনাকাটায় অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে বলে জানায় ক্রেতা-বিক্রেতারা।
শহরে টমটম জড়তা থেকে পরিত্রাণের উপায় আছে কিনা জানতে চকরিয়া পৌর মেয়র আলমগির চৌধুরীর সাথে মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মিটিং-এ আছে বলে জানান। মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক আলমগির হোসেন জানায় মহাসড়ক থেকে তিন চাকাযান ছাড় দিচ্ছি না। তারপরও অজান্তে গুটিকয়েক চলাচল অসম্ভব নয় বলে তিনি জানায়।
এদিকে ১২ মার্চ চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)'র চকরিয়া উপজেলার সন্মানিত প্রধান উপদেষ্টা নুরুদ্দীন মো.শিবলী নোমান'র সভাপতিত্ববে মাসিক আইন শৃংঙ্খলা বিষয়ক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় চকরিয়া উপজেলায় আইন শৃংঙ্খলা বিষয়ক আলোচনায় চকরিয়াতে যানজট ও সড়ক দূর্ঘটনার বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব পায়। উপস্থিত সকল অথিতিরা নির্বাহী অফিসারকে সড়কে যানজট ও সড়ক দূর্ঘটনা বন্ধের ব্যাপারে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরামর্শ প্রদান করেন।
এক পর্যায়ে চকরিয়াকে যানজটমুক্ত ও সড়ক দূর্ঘটনা বন্ধ করার লক্ষ্যে নিসচা'র চকরিয়া উপজেলা শাখার সভাপতি সোহেল মাহমুদ বলেন, সড়ক যানজটমুক্ত করা ও সড়ক দূর্ঘটনা বন্ধের জন্য প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য নিসচা'র কর্মী বাহিনী সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে। তিনি আরো বলেন, নিসচা'র চেয়ারম্যান চিত্র নায়ক ইলিয়াছ কাঞ্চন সারা দেশে নিসচা'র পরিবারকে সবসময় প্রস্তুত থাকা এবং যেকোনো পদক্ষেপে প্রশাসনকে সহযোগিতা করার নির্দেশ প্রদান করেছেন।
চকরিয়া নিসচা'র উপদেষ্টা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সঞ্চালনায় উক্ত আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বদরখালী নৌ পুলিশ ফাড়ি পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) ইনচার্জ মোঃ পায়েল হোসেন, আরকান সড়ক পরিবহনের শ্রমিক ইউনিয়েনের যুগ্ন সম্পাদক কামাল আযাদ, সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ ইসমাইল, টমটম মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ ইসমাইল, ট্রাক মালিক সমিতির রফিকুল ইসলাম, টৈটং যানবাহন মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল আবছার সহ জনপ্রতিনিধি সাংবাদিকগণ উপস্থমিত ছিলেন। সভায় নির্বাহী কর্মকর্তা সকলের মতামত গ্রহণ করেন এবং এ বিষয়ে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করবেন বলে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন।
পরে সবার সামনে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে চকরিয়া উপজেলায় জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি'১৮ এর সড়ক দূর্ঘটনার প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন। প্রতিবেন পাওয়ার পর নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুদ্দীন মো. শিবলী নোমান চকরিয়া নিসচা'র সভাপতিসহ সকল কর্মকর্তাকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান।