‘আদ তামিমি’ কি মুসলিম বিশ্বকে জাগাতে পেরেছে!

মাহফুজুর রহমান হোসাইনী
প্রকাশিত: ০৪:৪৮ পিএম, শনিবার, ৬ জানুয়ারী ২০১৮ | ৭০১

ছোট্ট এক কিশোরী। নাম আদ তামিমি। অত্যাচারী ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে এক দুঃসাহসী অগ্নিকণ্ঠ প্রতিবাদী।

বয়স মাত্র ষোল। জন্ম ফিলিস্তিনের নবী সালেহ গ্রামে, ২০০১ সালে। ছোট থেকেই প্রতিবাদের চেতনা প্রতিনিয়তই সে লালন করে আসছে। কৈশোরে তার ভাই মুহাম্মদকে গ্রেফতার করতে আসে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা। তখন তার বাবার সাথে সেও প্রতিবাদ করেছিল অগ্নিকণ্ঠে।

নিজের মাতৃভূমি অবৈধভাবে দখল করে নেবে তা কিছুতেই সে মানতে পারে না। সহ্য করতে পারে না’ মা-বাবা, পরিবারের ওপর নির্যাতন।

মাত্র চার বছর বয়স থেকেই আদ তামিমি পিতামাতার সঙ্গে অংশগ্রহণ করতো শুক্রবারের সাপ্তাহিক প্রতিবাদ মিছিলে। তার প্ল্যাকার্ডে লেখা থাকত ‘তোমরা বেরিয়ে যাও আমাদের মাতৃভূমি থেকে, এটি তোমাদের ভূমি নয়’।

বিগত পাঁচ বছর আগে ২০১২ সালে তার ও তার মা নারিমান তামিমির ওপর অত্যাচারী ইসরায়েলি বাহিনী আক্রমণ করেছিল, তখন তার রক্ত চেহারার আগুনে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছিল।

কয়েকদিন আগে ডিসেম্বরে বাড়িতে হানা দিয়ে আদ তামিমিকে ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে সে চড় বসিয়ে দেয় দখলদার দুই সৈন্যের গালে। পরবর্তীতে তাকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় ইসরাইলি সৈন্যরা।

অত্যাচারী ইসরায়েলি দুই সশস্ত্র সেনার গালে আদ তামিমির চপেটাঘাতে সাড়া বিশ্ব কেঁপে উঠেছে। তবুও মুসলিম বিশ্ব জাগ্রত হয়নি। নাকি হয়েছে? তাহলে কি ঘুমের ভান ধরে বসে আছে মুসলিম বিশ্ব।

মুসলমানদের প্রথম কিবলা, যেখানে রয়েছে মুসলমানদের শত শত বছরের ঐতিহ্য। সেই পবিত্র জেরুজালেমকে অমুসলিমরা ছিনিয়ে নিচ্ছে, আর তুমি তাদের সাথে বন্ধুসুবল আচরণ করছো! ভদ্র ব্যবহার করছো! এটা কোন ধরনের ভদ্রতা?

আজ এখনও যদি মুসলিম বিশ্বের বড় বড় দেশগুলো আমেরিকা, ইসরায়েলের সাথে সব ধরণের সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয় তাহলে মূহুর্তেই তাদের কম্পন শুরু হয়ে যাবে। শুধু সৌদিও যদি আমেরিকার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয় তবুও ট্রাম্পের স্বীকৃতি ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে।

কিছুদিন আগে করা হল রোহিঙ্গা মুসলিমদের নির্যাতন। এর প্রতিবাদে বিশ্ব মুসলিম এখন পর্যন্ত কিছুই করতে পারেনি। এই রেশ কাটতে না কাটতেই জেরুজালেমকে নিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠল ইসলাম বিরোধীরা।

এদিকে ভারতে আসামের মুসলিমদেরকে নিজ মাতৃভূমি থেকে বহিষ্কারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। অচিরেই শুরু হয়ে যেতে পারে বহিষ্কারের কার্যক্রম।

এখনও যদি মুসলিম বিশ্ব নিজেদেরকে না চেনে, নিজেদের আত্মমর্যাদা যদি ধরে না রাখে তাহলে এভাবে একের পর এক চলতেই থাকবে ইসলামের ওপর আক্রমণ।

হে মুসলিম বিশ্ব! তোমরা জেগে উঠো আবার। আর কতকাল ঘুমাবে? আর কতদিন অন্যের গোলামি করবে?
গর্জে উঠো আবারও। ইসলামের একটি ঐতিহ্যও যেনো বিনষ্ট না হয়। একটি মুসলমানের রক্তও যেনো বৃথা না যায়।