২ দিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক কবি মিলন মেলা-কবিতা উৎসব

স্টার্ফ রিপোটার
প্রকাশিত: ০৭:৩৪ পিএম, বৃহস্পতিবার, ১২ মার্চ ২০২০ | ৮৪০
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের শালিয়াবহ গ্রামের রুহুল আমিনের কন্যা মতিয়ারা মুক্তা(মাটির মা), যিনি কুমারী হয়েও জন্ম দিয়েছেন হাজারও সন্তানের। দেশের প্রায় সব জেলাতে আছে তার সন্তান। এমন মধুর অপূর্ব বাণী আর শত বছরের বৃদ্ধার মুখেও অল্প বয়সের এক কুমারী স্বীকৃতি পেয়েছে মা হিসেবে।
 
যার পথচলা শুরু ২০০৩ সাল থেকে ২০১৬ সালের প্রথম দিকে "মাটির মা" ক্লাবের প্রতিষ্ঠা করেন এবং মাটির মা নামে একটি বই প্রকাশ করেন আর সেই থেকে ভূষিত হয়েছেন "মাটির মা" নামে।তাকে "মা' হিসেবেই শিশু কিশোর থেকে শুরু করে শত বছরের বৃদ্ধারাও এই মধুর সুরেই ডেকে আসছে।তারই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছর তার গ্রামের বাড়িতে মার্চ মাসে আন্তর্জাতিক কবি মিলন মেলা  কবিতা উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
 
৯ ও ১০ মার্চ সোম ও মঙ্গলবার দুদিন ব্যাপী দিনরাত  লোকে লোকারন্য ছিলো পুরো অনুষ্ঠান। শুধু বাংলাদেশ নয় ওপার বাংলা থেকে লেখক,কবি,সাহিত্যিক, গীতিকার, নাট্য অভিনেতা, সাংবাদিক সহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ অনুষ্ঠানে এসে তার বাড়িতে পারি জমিয়েছিলো।
 
স্থানীয়রা জানান, মাটির মা'য়ের এই অল্প বয়সে মার্চ মাসে এত বড় আয়োজন এটা অকল্পনীয়। আর তার দেশ বিদেশে এত গুলো সন্তান এবং তার সন্তানের মা ডাক ও সম্মান করা দেখে আমরা বিস্মিত হই। শুধু তাই নয়  স্কুল,কলেজ, ভার্সিটির শিক্ষক এমনকি তার সহপাঠীরাও তাকে মা বলে সম্বোধন করেন।মাটির মা জানান, আমার জীবনে এমন ভাবে আল্লাহ্ সফলতা দিবেন আমি কখনো কল্পনা করিনি। আমার সন্তানেরা আমাকে যেভাবে সম্মান করে, যেভাবে মা বলে ডাকে শুধু তাই নয় আমার এ কবি মিলন মেলাকে উদ্দেশ্য করে, ভারত থেকে অর্ধশতাধিক কবি ও সাহিত্যিক গন গ্রহণ করেন। আর যারা আমার সন্তান, যারা আমাকে মা বলে বুকে আগলে নিচ্ছে, তারা এমনো পদ পদবীতে আছে যাদের সাথে সাক্ষাতের জন্য ১সপ্তাহ আগে সিরিয়াল দিতে হয় এবং আমার প্রবাসী সন্তানেরা এত কষ্ট করে ১টা দিনের জন্য সাত সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ছুটে আসে এই ক্ষুদ্র মা'কে দেখার জন্য। তাই আমি এবার থেকে প্রতি বছর নূন্যতম ২দিন কবি মিলন মেলা করবো। যাতে করে আমার সন্তানদের মায়ের আদরে একটু তৃপ্তি দিতে পারি।তিনি তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হিসেবে জানান, আমি রাজনৈতিক নেতা নই, আমার নেই কোন সামর্থ,তবে সৎ সাহসে ৪বছরেই আল্লাহ্ আমাকে বাংলাদেশের ৫৪ টি জেলায় মাটির মা ক্লাব গড়তে সক্ষম হয়েছি। তবে ভবিষ্যতে ইচ্ছা আছে আল্লাহ সহায় থাকলে মা হিসেবে আমার গ্রামে মাটির মা স্কুল, পাঠাগার এবং চিকিৎসা কেন্দ্র এবং মাটির মা বৃদ্ধাশ্রমের ব্যবস্থা করবো  মাটির মা নামে  হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করবো। ইতিমধ্যে জায়গা নির্ধারণ করা হয়ে গিয়েছে।
 
আরেকটা স্বপ্ন হলো-আমি আমার সর্বাত্তক চেষ্টা করবো পতিতাবৃত্তি করা অবহেলিত মামনিদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করার এবং তাদের জন্য কবরস্থানের ব্যবস্থা করার।
 
৯ ও ১০ মার্চের আন্তর্জাতিক কবি মিলন মেলা-২০২০ সমাপ্তিকালে মাটির মা তার দেশ বিদেশি সন্তানের বিদায় জানানোর সময় একটা অনুরোধ করেন, তোমরা যেমন এ মায়ের  মুখ দেখার জন্য সাত সাগর পাড়ি দিয়ে ছুটে এসেছো, তেমনি ৭ শত বিপদ আসলেও নিজের গর্ভবতি মা বাবাকে কষ্ট দিওনা। তোমরা এত কষ্ট করে দূর দুরান্ত থেকে আসলে হাসি মুখে ফুল দিয়ে বরণ করে নিই অথচ চলে যাওয়ার সময় চোখের পানি আটকে রাখতে পারিনা, আমার হাজারও সন্তান তবুও এমন। যাদের একটি মাত্র সন্তান তাদের কেমন লাগে? আর তোমরা সবাই সবার স্ব স্ব মনুষ্যত্বকে জাগ্রত রেখে চলবে।