তিন স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণে আরও এক আসামীর স্বীকারোক্তি

নিজস্ব প্রকিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:০০ পিএম, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২০ | ১২১৭

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে নবম শ্রেণীর তিন স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণ ও এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামী রাসেল (২২) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

বুধবার বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ফারজানা হাসানাতের আদালতে তাকে উপস্থিত করা হলে রাসেল ধর্ষণে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে আদালতের বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

রাসেল ঘাটাইল উপজেলার সন্ধ্যানপুর গ্রামের শুকুর মাহমুদের ছেলে। এর আগে আজ দুপুরে তাকে টাঙ্গাইল আদালতে আনা হয়।

টাঙ্গাইলের কোর্ট ইন্সপেক্টর তানবীর আহাম্মেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ নিয়ে এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া ৪ আসামীর মধ্যে ৩ জন আসামী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলো।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্রেফতাকৃত অপর দুই আসামী বাবুল হোসেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আরিফুল ইসলামের কাছে ও ইউসুফ আলী খান জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সুমন কুমার কর্মকারের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। এছাড়া এই মামলায় গ্রেফতারকৃত অপর আসামী সবুজ ওরফে বাবু এখনও কোন জবানবন্দী দেননি।

উল্লেখ্য, গত রোববার দুপুরে ঘাটাইলের একটি স্কুলের মিলাদের অনুষ্ঠানে যাবার কথা বলে নবম শ্রেনীর ওই চার ছাত্রী তাদের দুই ছেলে বন্ধুর সাথে ঘাটাইল সেনানিবাসের ফায়ারিং রেঞ্জের ঝড়কা বন এলাকায় বেড়াতে যায়। এসময় স্থানীয় ১০/১২ জন বখাটে তাদের পিছু নেয়। পরে গভীর জঙ্গলের ভিতরে গিয়ে ছেলে বন্ধুদের নিয়ে টিলায় উঠলে সেখানে বখাটে যুবকরা তাদের উপরে আক্রমন করে। এসময় তাদের দুই ছেলে বন্ধুকে মারধর করর তাড়িয়ে দেয় বখাটেরা। পরে চার ছাত্রীর মধ্যে তিনজনকে গণধর্ষণ ও এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করে। নিজের মা নেই বলে আকুতি করে ওই ছাত্রী ধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা পান।

বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পালাক্রমে চলে ছাত্রীদের উপরে নির্যাতন। পরে রাতে ধর্ষকরা তাদের রেখে পালিয়ে যায়। এরপর ওই চার ছাত্রী সেখান থেকে বের হয়ে তাদের একজনের নানীর বাড়ি বন এলাকার কাছে থাকায় সবাই মিলে সেখানে আশ্রয় নেয়। পরে নানীর বাড়ির লোকজন নির্যাতনের শিকার কিশোরীদের বাড়িতে সংবাদ দিলে পরিবারের লোকজন ঘাটাইল থানায় বিষয়টি অবহিত করে। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে আসে।

এ ব্যাপারে নির্যাতনের শিকার এক ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে আসামী করে ঘাটাইল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার পরদিন পুলিশ ৪ জনকে ঘাটাইলের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।

এদিকে গত মঙ্গলবার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে করা নির্যাতনের শিকার তিন ছাত্রীর ডাক্তারী পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত মিলেছে।