এক মাসে ১২ কিশোরী নিখোঁজ, একজনের আত্মহত্যা

মির্জাপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৫:০৫ পিএম, রোববার, ৩ ডিসেম্বর ২০১৭ | ১১০৭

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এক মাসে বার জন স্কুল পড়–য়া কিশোরী নিখোজের ঘটনা ঘটেছে। এদের মধ্যে ৬ জনেরই বাল্য বিয়ে হয়েছে বলে খোজ নিয়ে জানা গেছে। পুলিশ উদ্ধার করেছে ৪ কিশোরীকে।

বিয়ে মেনে না নেওয়ায় এক কিশোরী গলায় ফাস দিয়ে আতœহত্যা করেছে বলেও জানা গেছে। এদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আরো তিনটি বাল্য বিয়ে হয়েছে।

গত ১ নভেম্বর বাশতৈল নয়াপাড়া গ্রামের আবুল কাশেমের অষ্টম শ্রেণীতে পড়–য়া মেয়ে উর্মী নিখোজ হয়। বিয়ের স্বীকৃতির দাবীতে আজগানা গ্রামের হেলাল উদ্দিনের বাড়িতে তার সন্ধান মেরে।নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে হেলাল উদ্দিনের ছেলে রবিনের সাথে তার বিয়ের ঘোষনা দিলে পরিবারের লোকজন তা মানেনি।

ফলে সে পালিয়ে ওই বাড়িতে চলে যায়। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির ওই কিশোরীর সিদ্ধান্তের পরিবর্তন করাতে ব্যার্থ হলে সে এখনো ওই বাড়িতেই রয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

তেলিনা গ্রামের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সিমি প্রেমের টানে এক সন্তানের জনক একই গ্রামের শাহিন আলমের সাথে পালিয়ে গেছে। পরিবারে পক্ষ থেকে মামলা কররে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

পৌর এলাকার বাইমহাটী গ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দয়ালে মেয়ে ্এক মুসলিম যুবকের সাথে পালিয়ে যায়। পরিবার মামলা করলে পুলিশ ওই মেয়েকে উদ্ধার করে। একই গ্রামে বাসা ভাড়া করে থাকা দিলরুবা নামের স্কুল পড়–য়া ছাত্রী প্রেমের টানে প্রেমীকের সাথে পালিয়ে বিয়ে করে।

পরিবারের পক্ষ থেকে বিয়ে মেনে না নেওয়ায় ওই ছাত্রী গলায় ফাস দিয়ে আতœহত্যা করে।

উয়ার্শী ইউনিয়নের বরটিয়া দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী তার সহপাঠির সাথে পালিয়ে বিয়ে করেছে। তাদের সন্ধান পাওয়ার পর বিয়ে মেনে নিয়েছে বলে জানা গেছ্েদুল্যা মনসুর গ্রামের হাবেলের কিশোরী মেয়ে শ্যামলী আক্তার প্রেমের টানে পুষ্টকামুরী গ্রামের জলিল ড্রাইভারের ছেলে প্রেমীক হাসানের হাত ধরে পালিয়ে গেছে। তার সন্ধান পাওয়ার পর জানা যায় তারা কয়েক মাস আগেই বিয়ে করেছে।গত ২৭ নভেম্বর শ্যালী একটি কন্যা সন্তান প্রসব করে।

দুল্যা বেগম গ্রামের লাল মিয়ার নাতনি প্রেমীকের হাত ধরে পালিয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেচে।

পৌর এলাকার গাড়াইল গ্রামের পাটনী পাড়ার স্বপনের স্কুল পড়–য়া মেয়ে বিয়ের আগের দিন প্রেমীকের হাত ধরে পালিয়ে গেলে বর পক্ষের কঠোর চাপের মুখে তার ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়–য়া মেয়েকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দেয়। এছাড়া আনাইতারা ইউনিয়নের আটিয়া মামুদপুর গ্রমে দুই স্কুল পড়–য়া ছাত্রীর বাল্য বিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।
বহুরিয়া গ্রামের মোবারক খানের কিশোরী মেয়ে জুই তার প্রেমীকের হাত ধরে পালিয়ে যায়। মির্জাপুর থানায় অভিযোগের পর পুলিশ তাকে উদ্ধার করে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেন।

সর্বশেষ গত ১৯ নভেম্বর গোড়াইল গ্রামের শহদি সিদ্দিকীর দশম শ্রেণিতে পড়–য়া মেয়ে সাদিয়া নিখোজ হয়। সাদিয়া বাবা মির্জাপুর থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করার পর পুলিশ সাদিয়াকে উদ্ধার করে আদালতের মাধ্যমে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে।
এছাড়াও শিরিন ও খাদিজা নামের আরো দুইজন কিশোরী নিখোজের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে

মির্জাপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ এ কে এম মিজানুল হক বলেন ৪ জনকে আমারা উদ্ধার করেছি। বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে প্রশাসনের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত সাদমীন বলেন খবর পাওয়া মাত্র্ই বাল্য বিয়ে বন্ধে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। এর সাথে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।