ঠাকুরগাঁওয়ে
বাল্যবিবাহের কারণে জেএসসি পরিক্ষা দেয়নি ৫৫ ছাত্রী


ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় ৫৫ জন ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। এরা সবাই জেএসসি পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেছিল। কিন্তু কেউই পরীক্ষাকেন্দ্রে যায়নি। এর বদলে গিয়েছে শ্বশুরবাড়ি।
পরীক্ষা কেন্দ্রগুলো সূত্রে জানা গেছে, পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক হাজার ৫৫৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ৫২ জন। এদের মধ্যে ৩১ জনই ছাত্রী। পীরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৯৭৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১২ জন অনুপস্থিত। তাদের মধ্যে আটজন ছাত্রী। ভোমরাদহ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৭২০ জন পরীক্ষার্থী।
এদের মধ্যে অনুপস্থিত ২১ জন। এদের সাতজন ছাত্রী। জাবরহাট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৬৪৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ১৫ জন। এদের মধ্যে নয়জন ছাত্রী।
বেগুনগাঁও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন জানান, তার বিদ্যালয় থেকে এবার জেএসসি পরীক্ষায় ১১ জন অনুপস্থিত। এর মধ্যে ১০ ছাত্রীই বাল্যবিয়ের শিকার। বাকি একজন ছাত্র পোশাক কারখানায় কাজ করতে চলে গেছে।
এসএন জুনিয়র বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজেন্দ্র নাথ রায় জানান, তার বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতির ১০ জন ছাত্রীই বাল্যবিয়ে হয়েছে।
পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিজুল হক জানান, জেএসসি পরীক্ষায় তার বিদ্যালয়ের চারজন অনুপস্থিত ছিল। তারা সবাই বাল্যবিয়ের শিকার।
পরীক্ষায় অনুপস্থিত শালগড়া গ্রামের এক শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, ‘সপ্তম শ্রেণীতে থাকতেই মেয়েটির শারীরিক গঠন বেড়ে উঠেছিল। আমারও বয়স হয়ে যাচ্ছে।
আত্মীয়দের মধ্যে পাত্র জুটে গেল। এ সুযোগ হাতছাড়া না করে মেয়েটাকে বিয়ে দিলাম।’
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আরিফুল্লাহ বলেন, ‘বাল্যবিয়ে শুধু একজনের জীবনেই ক্ষতির কারণ নয়। এটা সমাজের ব্যাধি। এটা নির্মূলের জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’