গোপালপুরে নবগ্রাম দাখিল মাদ্রাসায় ফরম ফিলাপের নামে অর্থ বাণিজ্য

গোপালপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৫:৪৪ এএম, মঙ্গলবার, ২০ নভেম্বর ২০১৮ | ৪০১

টাঙ্গাইলের গোপালপুরে নবগ্রাম দাখিল মাদ্রাসায় দাখিল পরীক্ষার নামে রমরমা অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ নানা অজুহাতে সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে দ্বিগুণের বেশি অর্থ নেয়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

নবগ্রামের মৃত শের আলীর পুত্র মো. ফারুক ভুক্তভোগীদের পক্ষে অভিযোগটি দায়ের করেন।

লিখিত অভিযোগে তিনি জানান, আমার ভাগ্নী হ্যাপী খাতুন ও ভাতিজা রাজু নবগ্রাম দাখিল মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার্থী। আমি তাদের ফরম পুরণের জন্য সরকার নির্ধারিত ফি নিয়ে মাদ্রাসায় যাই। কিছু প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ওই টাকায় ফরম প‚রণ না করে জনপ্রতি ৩৫০০/ তিন হাজার পাঁচশত টাকা দাবি করেন। যা অনেক শিক্ষার্থীর দরিদ্র অভিভাবককে নয়ছয় বুঝিয়ে আদায় করেছে।

এবার প্রায় অর্ধশত পরীক্ষার্থী টেস্টে অংশ নিয়ে মাত্র এগার জন কৃতকার্য হয়েছে। অকৃতকার্যদের পরীক্ষায় সুযোগ দেওয়া হবেনা মর্মে ভয়ভীতি দেখিয়ে উৎকোচের বিনিময়ে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে ফরম প‚রণ করা হয়েছে। গরীবদের কোন অনুরোধ বা কারো সুপারিশে কর্ণপাত করেনি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।

হ্যাপীর বাবা হাবীব দরিদ্র ভ্যান চালক আর রাজুর বাবা দিনমজুর। তাদের পক্ষে এতটাকা দিয়ে ফরম প‚রণ করা সম্ভব নয়। তাই তিনি দু’জনের জন্য পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে মাদ্রাসায় গিয়ে সহকারি শিক্ষক আমিন‚ল ইসলামের কাছে অপমানিত হয়ে বাড়ী ফেরত আসে। শেষে ধারদেনা করে দু’জনে সাত হাজার টাকায় ফরম পুরণ করেন।

হ্যাপী রাজুদের মতো ওই মাদ্রাসার প্রায় সকল দাখিল পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকের একই অভিযোগ। তবে এদের অনেকেই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মুখ খুলে কিছু বলতেও পারছে না আবার এ ধরণের অপকর্ম মানতেও পারছেন না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিকাশ বিশ্বাস বলেন, অভিযোগটি হাতে পেয়েছি। তদন্তপ‚র্বক বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থাা ব্যবস্থাা নেয়া হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তফা কবির জানান, অভিযোগের প্রমাণ পেলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের নিয়ে বসে সুন্দর সমাধান করতে হবে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত টাকা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের নিকট ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থাা করতে হবে।

প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও আলমনগর ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মোমেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মাদ্রাসার কিছু অর্থলোভী শিক্ষক পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও সদস্যদের সাথে পরামর্শ না করে শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অমান্য করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে। এ ধরণের কাজে জড়িত শিক্ষক ও পরামর্শ দাতার বিরুদ্ধে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বিধি সম্মত ব্যবস্থাা গ্রহণ করা প্রয়োজন।