মসজিদে মসজিদে সেনাবাহিনীর সম্প্রীতির বার্তা


শান্তি, সম্প্রীতি আর উন্নয়নের মূলমন্ত্রকে বুকে ধারণ করে দেশের ভূখন্ড রক্ষার পাশাপাশি পাহাড়ে নানা ধরণের ব্যতিক্রমি উদ্যেগে নানা রুপে আর্বিভূত হতে দেখা যায় সেনাবাহিনীকে। কখনো মন্দিরে কখনো কিয়াং এ কিংবা কখনো মসজিদের দরজায়, নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী সহায়তার হাত বাড়িতে দিতে কার্পন্য করেনি সেনারা। আর এবার নতুন রুপে পাহাড়ের বিভিন্ন মসজিদে মসজিদে শান্তির বারতা নিয়ে হাজির সেনা সদস্যরা।
আজ ২৬ অক্টোবর রোজ শুক্রবার মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য বিশেষ প্রার্থনার দিন, আর মসজিদে মসজিদে হয়ে থাকে জুমার জামাত, যাকে বলা হয় গরীবের হজ্বেও দিন।
‘শান্তির সংকল্পে ঐক্যবদ্ধ সিন্দুকছড়ি’ এই মূলমন্ত্রকে সামনে রেখে সকাল থেকেই খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার ২৪ আর্টিলারি ব্রিগেড ও গুইমারা সেনা রিজিয়ন অধিনস্ত ১৪ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি সিন্দুকছড়ি জোন আওতাভূক্ত গুইমারা, রামগড় ও মানিকছড়ির বিভিন্ন মসজিদে মসজিদে ইমাম সাহেবদের কাছে রহস্যজনক এক চিঠি পাঠাতে ব্যস্ত দেখা গেছে সিন্দুকছড়ি জোনের সেনা সদস্যদের। এছাড়া জুমার নামাজের আগেই চিঠিটি হুবুহু মুসল্লীদের পড়ে শোনাতে ইমামদের প্রতি অনুরোধও ছিলো তাদের।
রহস্যর অন্তরালে ঘাটতে গিয়ে দেখা মিললো, সেনাবাহিনীর আদর্শ ও সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত। জামাত শুরু হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে দেখা মেললো রহস্যজনক চিঠির আসল রুপ। আসলে সেখানে লেখা ছিলো পাহাড়ে, পাহাড়ী-বাঙ্গালীর সম্প্রীতির কথা, ভ্রাতৃত্বেও কথা, ধর্মের কথা, মানবিকতার কথা।
মূলত সেখানে সিন্দুকছড়ি জোন অধিনায়ক লে:কর্ণেল রুবায়েত মাহমুদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিলো, গত ২২ এবং ২৩ অক্টোবর রাতে দূবৃত্তের হাতে ভাংচুর হওয়া গুইমারার কুকিছড়ার বৌদ্ধ মন্দিরটির কথা।
অধিনায়ক শুরুতেই ধর্মপ্রান মুসল্লিদের সালাম জানিয়ে মনে করিয়ে দিয়েছেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলাম অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, ইসলাম তথা মুসলিমের হাতে সর্বদা অন্য ধর্ম নিরাপদ, ইসলামে হানা-হানি, রক্তপাত এসব কখনো মেনে নেয়া হয়না। কুকিছড়ায় সন্ত্রাসীগোষ্ঠিী কর্তৃক বৌদ্ধ মূর্তি ভেঙ্গে ফেলার পর বর্তমানে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অনূভূতি আর আর কোন দূষ্কীতিকারী কর্র্তৃক মুসলমানদের মসজিদ ভেঙ্গে ফেলার অনূভূতি একই তাই সকল ধর্মপ্রান ও শান্তিপ্রিয় মুসলিক ভাইদের তাদের মর্মাহত বৌদ্ধ ভাইদের পাশে দাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এছাড়া চিঠিতে জোন অধিনায়ক রিজিয়ন কমান্ডার ব্রি.জেনারেল এ কে এম সাজেদুল ইসলামের পক্ষ হতে যেকোন ঘটনায় সকল মুসলমানদের মানবিকতার দৃষ্টিকোন থেকে কোনরুপ বিশৃংখলা না করে ধৈর্য ধারণ করে একে অন্যর প্রতি বিশ্বাস রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন।
এদিকে সেনা কর্মকর্তাদের সম্প্রীতির এমন দৃষ্টান্ত দেখে বিস্ময়ে হতবাক পাহাড়বাসী, অনুভূতি প্রকাশকালে স্থানীয় এক মুসল্লি জানান, বর্তমানে শান্তি, সম্প্রীতি আর মূল্যবোধ যেন সোনার হরিন, কিন্তু জোন অধিনায়ক মহোদয় সবাইকে আবারো মনে করিয়ে দিয়েছেন ইসলাম কি? কেন? এবং কিসের ওপর প্রতিষ্ঠিত।
সেনাবাহিনীর এমন উদ্যেগকে স্বাগত জানিয়ে স্থানীয়দেও প্রত্যাশা, সন্ত্রাস দমনের পাশাপাশি ভবিষ্যতেও সেনাবাহিনীর এমন মহতি উদ্যেগ অব্যাহত থাকবে পাহাড়বাসীর জন্য।