পুলিশ কর্মকর্তার ভূমিকায় হতাশ পরিবারসহ গ্রামবাসি

প্রতিবন্ধী ধর্ষণে ১ জন কারাগারে থাকলেও প্রকাশ্যে ঘুরছে ২জন

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: ০২:৫৮ পিএম, বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০১৭ | ৫৩৭

টাঙ্গাইল সদর উপজেলা ঢেলি করটিয়া গ্রামের প্রতিবন্ধি তরুণী ধর্ষণ অতঃপর অন্তঃসত্ত্বায় জড়িত ১ আসামী কারাগারে থাকলেও দেদারসে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ২ আসামী।

মামলায় ১জনকে আসামী করা হলেও আদালতে ২২ ধারায় দেয়া জবানবন্ধিতে ধর্ষিতা প্রতিবন্ধির বক্তব্যে প্রকাশ পায় ঘটনায় জড়িত ৩ আসামী।

এ স্বত্তেও জড়িত ২ আসামীর প্রকাশ্যে বিচরন নিয়ে প্রশ্নের মুখে পরেছে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তার ভূমিকা। এর ফলে মামলার ভবিষ্যৎ ও সুষ্ঠু বিচার নিয়েও শঙ্কায় রয়েছে বিচার প্রার্থির পরিবারসহ গ্রামবাসি।

মামলার বিবরনে জানা যায়, চলতি বছরের ১ থেকে ৩১ জানুয়ারি তারিখের মধ্যে ধর্ষণ অতঃপর অন্তঃসত্ত্বার শিকার হন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের ঢেলি করটিয়াস্থ সাবেক সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুর রহমান এর বাসার ভাড়াটিয়া ও মির্জাপুর উপজেলার কাটরা গ্রামের মোঃ লাল মিয়া ও আলো বেগমের মেয়ে মানসিক প্রতিবন্ধি এবং মৃগি রোগে আক্রান্ত তরুণী আঁখি আক্তার (১৭)।

মানসিক প্রতিবন্ধি হলেও ধর্ষিতা ঘটনার বিবরণ ও জড়িতদের নাম প্রকাশ করতে পারেন বলে ধর্ষিতার দেয়া ভাষ্যে প্রকাশ পায় ঘটনায় জড়িত বাসার মালিক ও সাবেক সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুর রহমান, বাসার ভাড়াটিয়া ও কারখানার মালিক সাহাবুদ্দিন এবং কারখানার দর্জি মোঃ হামিদ মিয়া ওরফে হামদুর নাম।

জড়িতদের এ নামের উপর টাঙ্গাইল মডেল থানায় অভিযোগ করা হয়। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে কারখানার মালিক সাহাবুদ্দিন ও দর্জি মোঃ হামিদ মিয়া ওরফে হামদুকে আটক করে টাঙ্গাইল মডেল থানা পুলিশ।

তবে ২ দিন আটক রেখে কারখানার মালিক সাহাবুদ্দিনকে ছেড়ে দিয়ে হয় ২১ সেপ্টেম্বর। অপরজন কারখানার দর্জি মোঃ হামিদ মিয়া ওরফে হামদুকে একমাত্র আসামী করে মামলা দায়ের ও জেলহাজতে পাঠানো হয়।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের শিকার মানসিক প্রতিবন্ধি তরুণী আখি আক্তার (১৭) এর ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।

টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাসুম এর আদালতে ধর্ষণের শিকার মানসিক প্রতিবন্ধি তরুণী আঁখি আক্তার (১৭) এর ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।

এ জবানবন্দিতেও ধর্ষিতা তিনজনের নাম উল্লেখ করে জবানবন্দি প্রদান করেন নিশ্চিত করেন বিবাদী পক্ষের আইনজীবি মুকুল আক্তার ও মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা জেসমিন।

তবে এ নিয়ে গ্রামবাসির অভিযোগ, আজ বুধবার ১১ অক্টোবর প্রতিবন্ধি তরুণী আঁখি আক্তার (১৭) কে গর্ভপাত ঘটানোর জন্য টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কিন্তু গত ২৪ সেপ্টেম্বর আদালতে ধর্ষিতার জবানবন্দি দেয়ার পর দীর্ঘ ১৭ দিনের পার হয়ে গেলেও ঘটনায় জড়িত অপর দুই আসামীকে কোন অদৃশ্য কারণে গ্রেফতার করছে পুলিশ কর্মকর্তা তা নিয়ে প্রশ্নে জর্জরিত এখন গ্রামের সাধারণ মানুষ।

এর ফলে মামলার ভবিষ্যৎ ও সুষ্ঠু বিচার নিয়েও শঙ্কায় রয়েছে বিচার প্রার্থির পরিবারসহ গ্রামবাসি। এছাড়াও যে কোন মুহুর্তে মেয়েটির গর্ভপাতের সম্ভাবনা দেখা দিলেও জন্ম নেয়া শিশুর পরিচয় কি হবে এমন প্রশ্নেও দিশেহারা পরিবারসহ গ্রামবাসি।

টাঙ্গাইল মডেল থানার উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার জানান, এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার মানসিক প্রতিবন্ধি এবং মৃগি রোগে আক্রান্ত তরুণী আঁখি আক্তার (১৭) মামলার আগে শুধু কারখানার দর্জি মোঃ হামিদ মিয়া ওরফে হামদুর নাম উল্লেখ করায় একজনের নামে মামলা দায়ের করা হয়।

তবে গত ২৪ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাসুম এর আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে ধর্ষিতা বাসার মালিক ও সাবেক সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুর রহমান ও কারখানার দর্জি মোঃ হামিদ মিয়া ওরফে হামদুর নাম উল্লেখ করে জবানবন্দি দেন।

তবে বিনা কারণে যেন কেউ হয়রানির শিকার না হয় সে কারণে তিনি ডিএনএ টেস্টের অপেক্ষায় রয়েছেন। ইতোমধ্যেই তিনি ডিএনএ টেস্টের আবেদন করেছেন। ধর্ষিতাকে আজ টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গর্ভপাত হলেই শিশুটির ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে মূল আসামী সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি।