পেকুয়ার একজন শ্রেষ্ট মেধাবী ছাত্রের গল্প


পেকুয়ায় উচ্চতর ডিগ্রি নিতে কানাডায় যাবে নার্সের ছেলে। ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক ট্যালেন্ট হান্ট প্রতিযোগিতা অনুষ্টিত হয়েছে।
কুইজ প্রতিযোগিতায় নার্সের এ ছেলে দেশ সেরা হয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্টিত হয়। বাংলাদেশ থেকে একমাত্র প্রতিযোগি আন্তর্জাতিক এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এ সময় নার্সের ওই ছেলে দক্ষিন এশিয়া উপমহাদেশের মধ্যে শ্রেষ্ট প্রতিযোগি হিসেবে মেধা তালিকায় বিবেচিত হয়।
আন্তর্জাতিক ব্রিটিশ কাউন্সিল এ প্রতিযোগিতার আয়োজক। ওই প্রতিযোগিতায় বিশে^র উন্নয়নশীল ও ধনী রাষ্ট্রের প্রতিযোগিরা অংশ নিয়েছিল। বাংলাদেশ থেকে ৫ জন প্রতিযোগিকে বাছাই করা হয়েছিল।
এ ৫ জনের মধ্যে প্রতিযোগিতা হয়। এদের মধ্যে একমাত্র বিজয়ী হয়েছেন নার্সের ছেলে মাশরাফী ছরওয়ার হিরণ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ভারত উপমহাদেশের দেশসমুহ ছাড়াও ইউরোপ মহাদেশ উত্তর আমেরিকা ও ল্যাটিন আমেরিকা,আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের প্রতিযোগিরা আন্তর্জাতিক কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। এ সময় মাশরাফী ছরওয়ার হিরণ এশিয়া মহাদেশের মধ্যে তৃতীয় হয়েছেন। দক্ষিন এশিয়ায় ও ওই ছেলে প্রথম হয়েছেন।
বিশ্বের মধ্যে হিরণ ৩৭তম মেধা তালিকায় বিবেচিত। এ দিকে মাশরাফী ছরওয়ার হিরণ উচ্চতর ডিগ্রি নিতে কানাডা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। উন্নত পড়ালেখা করতে ব্রিটিশ কাউন্সিল তার জন্য তিনটি উন্নত দেশকে নির্ধারন করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে স্বপ্নের দেশ কানাডায় পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত পৌছে। ব্রিট্রিশ কাউন্সিল ওই মেধাবী ছাত্রের জন্য ভিসা প্রসেস করেছে। কানাডার মন্ট্রিয়াল শহরে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে তাকে সে দেশের বিদ্যা নিকেতনে ভর্তি হতে হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা। তবে স্বপ্নের ওই দেশে পৌছতে ওই অর্থ এ ছাত্রের পরিবারের নেই। মাশরাফী ছরওয়ার হিরণ দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তার মা একজন সরকারী চাকুরীজীবি।
পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পেশায় একজন জুনিয়র নার্স তার মা। মায়ের নাম মনছফা বেগম। পেশায় সেবিকা। সামান্য যা বেতন পেয়ে থাকে তা দিয়ে সংসার ও ছেলে মেয়েদের পড়ালেখায় ব্যয়ভার বহন করে। এ দিকে উন্নত বিশ্বে একমাত্র মেধাবী সন্তান হিরণকে পৌছাতে মা শিক্ষা সহায়তার জন্য এনজিও সংস্থা ব্র্যাকে ঋন আবেদন করছিলেন। ব্র্যাক পেকুয়া শাখায় ৫ লক্ষ টাকার লোন নিতে এ নারী ছেলের জন্য আবেদন করে। তার এ আবেদন গৃহীত হয়েছে। ব্র্যাকের কর্মকর্তা আবদুল মোনাফ তাকে ঋন সহায়তার আশ্বাস দেয়। এ সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ব্যাংক চেক(খালি), চাকুরীর সেলারী সিটসহ তথ্যাদি পৌছায়।
এ সময় ৫ লক্ষ টাকার শিক্ষা সহায়তার জন্য চুড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌছে ব্র্যাক শাখা। এ দিকে অভিযোগ উঠে ওই টাকা ছাড় পেতে দুই দফায় ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় ব্র্যাকের ওই কর্মকর্তা। শিক্ষা সহায়তার এ টাকা প্রায় ১ বছর ধরে ঝুলে রয়েছে। ছাড় দেয়া হয়নি ঋন প্রস্তাবের ৫ লক্ষ টাকা। ঘুষ নিয়েছিলেন ৭০ হাজার টাকা। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ এ সব ব্র্যাকের ঋন শাখায় আটকিয়ে রাখা হয়েছে। মনছফা জানায়, আমার ছেলে হিরন ৯ম শ্রেনীতে থাকতে দেশ সেরা মেধাবী হয়েছিলেন। ১শ বছরের টার্গেট টপকিয়ে সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়েছিলেন।
যা বাংলাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ সুচকে বিজয়ী প্রতিযোগি। ওই প্রতিযোগিতায় ৫ ভরি ওজনের স্বর্ণের মেডেল পেয়েছিলেন। উপজেলা প্রশাসন তাকে সম্বর্ধিত করে এ পদক তুলে দেয়। ব্রিটিশ কাউন্সিল আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় দক্ষিন এশিয়ায় প্রথম হয়েছে। এশিয়া মহাদেশে তৃতীয়। ব্রিটিশ কাউন্সিল শিক্ষার জন্য কানাডার ভিসা প্রসেস করে। তবে তার উচ্চতর ডিগ্রির জন ব্র্যাকের ঋনের উপর তৈরী হয়েছে ভবিষ্যত নির্ভর। আমি টাকা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়েছি। ব্যাংক চেকও দিয়েছি। এখন টাকা না দিয়ে প্রতারনা শুরু করছে।
পিএইচপি/এম,জুনাইদ উদ্দিন