স্কুল ছাত্রী ধর্ষিত! ৭ মাসের অন্তঃসত্তা
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার নিকলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ধর্ষণের ঘটনায় মেয়েটি বর্তমানে ৭ মাসের অন্তঃসত্তা।
মেয়েটি কালিহাতী উপজেলার গিলাবাড়ি গ্রামের ৬০ বছরের বৃদ্ধ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আনছের আলী কর্তৃক এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। আনছের আলী ও তার ছেলে সুমন বাচ্চা নষ্ট করার জন্য মেয়েকে ও তার পরিবারের সদস্যদের মারধর ও নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করে আসছে। অসুস্থ অবস্থায় মেয়েটি টাঙ্গাইল মুন নার্সিং হোমে চিকিৎসাধীন।
সরেজমিনে জানা যায়, কালিহাতী উপজেলার গিলাবাড়ি গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে নিকলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী একই গ্রামের এজিপির সাবেক অডিট অফিসার আনছের আলীর বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করতো। দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় ওই ছাত্রী পড়াশোনার ফাঁকে আনছের আলীর বাড়িতে কাজ করে দিতো। বিনিময়ে দু'বেলা দু'মুঠো খাবার খেতো।
আনছের আলীর স্ত্রী বেশিরভাগ সময় ঢাকায় অবস্থান করার একপর্যায়ে ওই ছাত্রীর উপর কুনজর পরে ৬০ বছরের আনছের আলীর। টাকা-পয়সা ও বিভিন্ন জিনিসপত্রের লোভ দেখিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। নিজের অজান্তেই কিশোরী অন্তঃসত্তা হয়ে পড়ে। তারপরও ভয় দেখিয়ে নিয়মিত চালিয়ে যেতে থাকে শারীরিক সম্পর্ক।
কিছুদিন আগে মেয়েটির শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন দেখতে পায় পরিবারের লোকজন। জিজ্ঞসাবাদে সে সব কিছু খুলে বলে। পরে ডাক্তারি পরীক্ষায় অন্তঃসত্তার বিষয়টি ধরা পড়ে। বিষয়টি আনছের আলী ও তার ছেলে সুমন জানার পর মেয়ের পরিবারকে কাউকে কিছু না বলার জন্য হুমকি দেয়।
এ নিয়ে মেয়ের পিতা মেয়েকে নিয়ে আনছের আলীর বাড়িতে গেলে সে কয়েক দফা তাদের মারধর করে। আনছের আলী প্রভাবশালী হওয়ায় নীরবে সহ্য করে চলে আসে মেয়ে ও তার বাবা। এরই মধ্যে বাচ্চা নষ্ট করার জন্য মেয়ের পরিবারকে চাপ দেয় আনছের আলী ও তার ছেলে সুমন।
এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার বিকালে মেয়েকে টাঙ্গাইল মুন নার্সিং হোমে বাচ্চা নষ্ট করার জন্য ভর্তি করা হয়। কিন্তু ৭ মাসের অন্তঃসত্তা হওয়ায় গাইনী ডাক্তার মালেকা শফি মঞ্জু তা নষ্ট করতে অস্বীকৃতি জানায়। এ বিষয়ে ডাঃ মালেকা শফি মঞ্জু বলেন, শনিবার পেটের ব্যাথা নিয়ে ক্লিনিকে আসে। পরীক্ষায় ৭ মাসের অন্তঃসত্তা ধরা পড়ে। মেয়েটির পরিবার বাচ্চাটি নষ্ট করতে চাইলেও আমি তা করিনি।
মুন নার্সিং হোমে চিকিৎসাধীন ধর্ষিতা ওই কিশোরী জানায়, আমাকে টাকা-পয়সা ও বিভিন্ন জিনিসপত্রের লোভ দেখিয়ে নিয়মিত এ কাজ করতো। বিষয়টি আমি যাতে কাউকে না বলি এ জন্য প্রায়ই আমাকে মারতো। আমি ছোট মানুষ কোন কিছু বুঝতে পারিনি। এখন আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে।
মেয়ের বাবা আবুল হোসেন বলেন, আমার বাচ্চা মেয়েটিকে লোভ দেখিয়ে আনছের আলী যে সর্বনাশ করেছে আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।
এবিষয়ে কথা বলতে আনছের আলীর বাড়িতে গেলে তিনি ঢাকায় আছেন বলে জানান তার এক প্রতিবেশি। মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। পরে আনছের আলীর ছেলে সুমনের মোবাইলে ফোন দিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে সে অশালীন বাক্য প্রয়োগ করে ফোন কেটে দেয়।
এ ব্যাপারে কালিহাতী থানা অফিসার ইনচার্জ মীর মোসারফ হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
