দিশেহারা ভূক্তভোগীরা
প্রতারণা করে দেড় কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা এক গৃহবধূ


টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নিরীহ দরিদ্রদের সাথে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে মিনা সাহাদত (৪৫) নামে এক গৃহবধূ লাপাত্তা রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সে উপজেলা সদরের বাইমহাটী গ্রামের সাহাদত হোসেনের স্ত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলা সদরের বাইমহাটী পশ্চিমপাড়া গ্রামে।
বাইমহাটী গ্রামের প্রফেসর পাড়া ও মাস্টার পাড়ার ভূক্তভোগীরা জানান, সাহাদত হোসেন ও তার স্ত্রী মিনা সাহাদত এলাকার দরিদ্র ও দিন মজুর মহিলাদের বিভিন্ন ভাবে লোভ দেখিয়ে এনজিওর সদস্য করেন। পরে ওই সদস্যদের নামে ৫০ হাজার থেকে ২লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ তুলেন। সেখান থেকে ৫/১০ হাজার টাকা এনজিও সদস্যদের দেন এবং বাকি টাকা মিনা হাতিয়ে নেন। এভাবে প্রায় অর্ধশত দরিদ্র মহিলার নামে ঋণ তুলে লাখ লাখ টাকা নিয়ে গত দুই সপ্তাহ আগে চম্পট দেয় মিনা সাহাদত।
গত দুই সপ্তাহ ধরে এনজিও কর্মীরা ঋণ নেওয়া ওইসব সদস্যদের কাছে কিস্তির টাকা তুলতে আসলে এতে দরিদ্র মহিলারা বিপাকে পড়েন বলে জানা গেছে।
মিনা সাহাদত এনজিওর ঋণ ছাড়াও বাইমহাটী গ্রামের প্রফেসর পাড়া, মাস্টার পাড়া, পশ্চিমপাড়া ও পুষ্টকামুরী গ্রাম থেকে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকেও প্রায় কোটি টাকা সুদে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। মিনা সাহাদত ও তার স্বামী সাহাদত হোসেন গত দুই সপ্তাহ আগে বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে সন্তানদের নিয়ে পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মিনা সাহাদত বাইমহাটী গ্রামের সামাদ মিয়ার স্ত্রী কুলসুম বেগমের এনজিও থেকে ৫০ হাজার ও নগদ ৪০ হাজার, শহীদ মিয়ার স্ত্রী আনোয়ারা বেগমের ১০ হাজার, শহীদ মিয়ার স্ত্রী মরিয়ম বেগমের ১ লাখ ৬০ হাজার, ছোরহাব মিয়ার ৫০ হাজার, বাবুলের স্ত্রী জোৎস্না বেগমের ১ লাখ ৬০ হাজার, নুরুল ইসলামের স্ত্রী আছমা বেগমের নগদ ১ লাখ ও ব্রাক এনজিও থেকে ১ লাখ, বাবুলের স্ত্রী সেলিনা বেগমের ১ লাখ ৩০ হাজার ও এনজিওর ৪০হাজার, মুছা মিয়ার স্ত্রী রাশেদা বেগমের ৭০ হাজার, আলমগীরের স্ত্রী রুনুর ৪০ হাজার করিমের স্ত্রী হাসিনা বেগমের ৭০ হাজার, রাশেদার ৫৫ হাজার, সাইদুলের স্ত্রী ফিরোজা বেগমের ১ লাখ ৫০ হাজার, রাজীব চৌধুরীর ৫২ হাজার টাকাসহ ওই গ্রামের অর্ধশত মহিলার কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সাহাদত হোসেন ও মিনা সাহাদতের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
সোসাল এডভান্সমেন্ট থ্রু ইউনিটি (সেতু) এনজিওর সহকারি ম্যানেজার মো. সরোয়ার আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মিনা সাহাদত তাদের এনজিও থেকে ১লাখ ২০হাজার টাকা ঋণ নিয়েছেন। এছাড়া কয়েকজন সদস্যের ঋণে বিষয়ে মিনা সুপারিশও করেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মির্জাপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) এ কে এম মিজানুল হকের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। #