এইচ.এস.সি ও সমমান পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে কঠোর গোয়েন্দা নজরদারী

টাঙ্গাইলে এইচ.এস.সি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ৩৬ হাজার ৮২১ পরীক্ষার্থী

তনয় কুমার বিশ্বাস
প্রকাশিত: ১১:৪৪ এএম, সোমবার, ২ এপ্রিল ২০১৮ | ৯৮০

প্রতিবারের মত এবারও এইচ.এস.সি ও সমমান পরীক্ষায় টাঙ্গাইলে ৩৬ হাজার ৮২১ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। প্রতিটি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস একটি আলোচিত বিষয় হলেও এবছর প্রশ্ন ফাঁস রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করেছে জেলা প্রশাসন। একই সাথে কঠোর গোয়েন্দা নজরদারীর পাশাপাশি পরীক্ষা কেন্দ্র গুলোর আশপাশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে জেলা পুলিশ।

এছাড়াও পরীক্ষা সুষ্ঠু, সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে অনুষ্ঠিত করতে শুরুর দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত সকল কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ রাখার জন্য টাঙ্গাইল জেলায় ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছে প্রশাসন।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের শিক্ষা কল্যান শাখা সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইল জেলার ৪৩ টি কেন্দ্র ও ১৫ টি ভেন্যুতে মোট এইচএসসি পরীক্ষার্থী ২৮৭৬৫ জন।

এর মধ্যে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় এইচএসসি পরীক্ষার ছয়টি কেন্দ্র ও তিনটি ভেন্যুতে মোট পরীক্ষার্থী ৮০১৮ জন, দেলদুয়ার উপজেলার দুইটি কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ১৪২৪ জন, মির্জাপুর উপজেলার দুইটি কেন্দ্র ও একটি ভেন্যুতে মোট পরীক্ষার্থী ২৫৬০ জন।

মধুপুর উপজেলার দুইটি কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ১৪৩২ জন, গোপালপুর উপজেলার দুইটি কেন্দ্র ও দুইটি ভেন্যুতে মোট পরীক্ষার্থী ২১৯৩ জন, কালিহাতী উপজেলার তিনটি কেন্দ্র ও তিনটি ভেন্যুতে মোট পরীক্ষার্থী ১৮১৪ জন, সখিপুরের দুইটি কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ২৫২৩ জন, ভূঞাপুর উপজেলার দুইটি কেন্দ্র ও ৩ টি ভেন্যুতে মোট পরীক্ষার্থী ২৭৩১ জন, নাগরপুর উপজেলার দুইটি কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ১৪১০ জন, ঘাটাইল উপজেলার দুইটি কেন্দ্র ও দুইটি ভেন্যুতে মোট পরীক্ষার্থী ২৩৯২ জন, বাসাইল উপজেলার একটি কেন্দ্র ও একটি ভেন্যুতে মোট পরীক্ষার্থী ৮০৫ জন।

জেলায় আলিম পরীক্ষায় ১৩ টি কেন্দ্র ও দুইটি ভেন্যুতে মোট পরীক্ষার্থী ১৯৪৮ জন। এদের মধ্যে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় আলিম পরীক্ষায় ২২৭ জন, মধুপুরে ২৫০ জন, ধনবাড়ীতে ৮৭ জন, গোপালপুরে ৪০৩ জন, ভূঞাপুরে ২২২ জন, ঘাটাইলের দুইটি কেন্দ্রে ২৪৯ জন, দেলদুয়ারে ১৬৩ জন, নাগরপুরে ১৩২ জন, বাসাইলে ৯২ জন এবং সখিপুরে ১২৩ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহন করবে।

জেলায় এইচ.এস.সি ভোকেশনাল ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা (বিএম) বিভাগের ৩৯ টি কেন্দ্র ও ১৮ টি ভেন্যুতে মোট পরীক্ষার্থী ৬১০৮ জন। এদের মধ্যে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার দুইটি কেন্দ্র ও একটি ভেন্যুতে মোট পরীক্ষার্থী ৫৬৮ জন, দেলদুয়ারে একটি কেন্দ্র ও একটি ভেন্যুতে ২৫২ জন, মির্জাপুরে একটি কেন্দ্র ও একটি ভেন্যুতে ৫০৬ জন, মধুপুরে ১৪৪ জন, গোপালপুরে তিনটি কেন্দ্র ও তিনটি ভেন্যুতে ৮১৪ জন, কালিহাতীতে চারটি কেন্দ্র ও চারটি ভেন্যুতে ১৭১৭ জন, সখিপুরে ৪৪৫ জন, ভূঞাপুরে তিনটি কেন্দ্র ও তিনটি ভেন্যুতে ৬৯৩ জন, ধনবাড়ীতে দুইটি কেন্দ্র ও দুইটি ভেন্যুতে ৭৩১ জন, নাগরপুরে একটি কেন্দ্র ও একটি ভেন্যুতে ২৭৬ জন, ঘাটাইলের একটি কেন্দ্র ও একটি ভেন্যুতে ১২৮ জন, বাসাইলের একটি কেন্দ্র ও একটি ভেন্যুতে ১০৪ জন।

টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. আশরাফুল মমিন খান বলেন,“আমরা এবছর এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করার ব্যাপারে ইতিমধ্যেই প্রত্যেকটি কেন্দ্রে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ দিয়েছি। বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা হবে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৩০ মিনিট পূর্বেই পরীক্ষার্থীদের হলে প্রবেশ করতে হবে। নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করার ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করেছে জেলা প্রশাসন। কেউ যদি নকল সরবরাহ করে থাকে তাহলে সেই সব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও তিনি জানান। এবছর টাঙ্গাইল জেলার সবগুলো কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ এবং নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, এবছর এইচএসসি পরীক্ষা উপলক্ষ্যে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যপক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। প্রশ্নপত্র যাতে ফাঁস না হয় সে জন্য গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। প্রশ্নপত্র খোলার সময় আমাদের পুলিশের একজন প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। রাস্তাঘাটে যাতে প্রশ্নপত্র ছিনতাইয়ের মত ঘটনা না ঘটে সে জন্যও পুলিশ প্রশাসন তৎপর রয়েছে বলেও তিনি জানান।