বাগাতিপাড়ায় ডাকবাংলার ভাড়া চাওয়ায় কেয়ারটেকারের প্রতি ক্ষুব্ধ ইউএনও

নাটোরে ডাকবাংলার ভাড়া চেয়ে বিপাকে কেয়ারটেকার

আরিফুল ইসলাম তপু, বাগাতিপাড়া (নাটোর) সংবাদতা
প্রকাশিত: ০৩:৩৫ পিএম, বুধবার, ২৮ মার্চ ২০১৮ | ৪৬৯

বাগাতিপাড়ার ডাকবাংলায় রাত্রীযাপনের ভাড়া চেয়ে বিপাকে পড়েছেন কেয়ারটেকার (চলতি দায়িত্ব) আব্দুল আজিজ। কথামতো কাজ না করায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। চাবি কেড়ে নিতে চাওয়া ও মেরে হাত-পা ভেঙ্গে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সূত্রে জানা যায়, গত ২১ ফেব্রুয়ারিতে উপজেলায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে আসেন মিনহাজ ও ওয়াসিম নামে দু’জন টেকনিশিয়ান। বাগাতিপাড়া ডাকবাংলায় রাত্রীযাপনের উদ্দেশ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসের নিম্নমান সহকারী জীবন বাবু তাদের উঠিয়ে দেন। নিয়ম মেনে ডাকবাংলার রেজিষ্টারে নাম দেখানোও হয়।

কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানু তাদেরকে ডাকবাংলার ভাড়া দিতে নিষেধ করেছেন বলে অভিযোগ উঠে। প্রায় বারি দিন রাত্রীযাপন করলে ভাড়া হয় আটচল্লিশ শ’ টাকা। কিন্তু টাকা না দিয়ে কক্ষের চাবি রেখে চলে যেতে চাইলে তাদের বাধা দেয় ওই কেয়ারটেকার। পরে ইউএনও অফিসের পিওন ও ড্রাইভার এসে ভাড়া না দিয়ে তাদেরকে চলে যেতে সাহোযোগিতা করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী কেয়ারটেকার আব্দুল আজিজ। এদিকে ওই ঘটনার সমাধান না হতেই আবারো ডাকবাংলার সোফা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্মচারীদের পাঠান। কিন্তু কেয়ারটেকার আব্দুল আজিজ প্রধান নির্বাহীর অনুমতি ছাড়া সোফা দিতে অস্বিকৃত জানালে তাকে জোরপূর্বক উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে মেরে হাত-পা ভেঙ্গে ঘরে তালা দিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছন বলে জানা যায়।

ভুক্তভোগী বাগাতিপাড়া ডাকবাংলার কেয়ারটেকার (চলতি দায়িত্ব) আব্দুল আজিজ দাবী করেন, ‘বার দিন যাবৎ দু’জন ব্যাক্তি ডাকবাংলায় থাকে। কিন্তু তাদের ভাড়ার টাকা চাওয়া আমার অপরাধ। আমাকে ইউএনও স্যার বলে তোমাকে ওদের নাম খাতায় কে লিখতে বলেছে, তাদের ভাড়া দিতে হবে না।

আবার পরে সোফা নিতে চাইলে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী স্যারের অনুমতির কথা বললে ইউএনও স্যার পিওন ও ড্রাইভার দিয়ে আমাকে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যায়। অফিসের কর্মচারীদের নির্দেশ দেন মেরে আমার হাত-পা ভেঙ্গে ঘরে আটকিয়ে রাখতে। বর্তমানে আমি খুব আতংকে দিন পার করছি।’

বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিষদের ১৩নং ওয়ার্ড সদস্য হাসানুর রহমান বিপ্লব বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হয়ে তিনি চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরর সাথে এমন আচরণ মোটেও ঠিক করেননি। কেয়ারটেকার ভাড়া দাবি করে সঠিক দায়িত্ব পালন করেছে। মাসিক মিটিং এ বিষয়টি উত্থাপন করা হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানু বিষয়টি সম্পর্কে বলেন, দু’জন ব্যাক্তি উপজেলা পরিষদ চক্তরে সিসি ক্যামেরা সেট করতে এসেছিল। তারা আমাকে জানিয়ে ডাকবাংলাতে ছিল। তবে ভাড়ার টাকার বিষয়ে আমি প্রধান নির্বাহীর সাথে কথা বলবো।

এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী এনামুল হক বলেন, ডাকবাংলায় থাকলে ভাড়া দিতে হবে। এটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোনভাবেই দেয়া হবে না বলতে পারেন না। কেয়ারটেকার ভাড়ার টাকা চেয়ে কোন ভ‚ল করেনি। সে তার দায়িত্ব পালন করেছেন। ডাকবাংলার ভাড়া আদায় প্রসঙ্গে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং পদক্ষেপ গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।