সাজব ঈদে
কথায় আছেÑ যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। মেয়েদের ক্ষেত্রে ঈদুল আজহার সময় এর যথার্থতা সবচেয়ে বেশি। কোরবানির ঈদ মানে সারা দিন মাংস নিয়ে ব্যস্ততা। এর পরও আছে অতিথি আপ্যায়ন। এত সব কাজের ভিড়ে নিজেকেও পরিপাটি রাখা চাই।
ঈদের দিনে সাজপোশাকে নিজেকে অনন্য করে তুলতে টিনএজার থেকে মাঝবয়সী সবার চেষ্টার যেন কমতি নেই। কেমন হবে এবারের ঈদের স্টাইলিং ফ্যাশন আর রূপকথা, বিশেষজ্ঞের পরামর্শে বিস্তারিত জানাচ্ছেনÑ তাপসী রহমান
আবহাওয়া প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় এবারের ঈদে রোজার ঈদের প্রতিফলন দেখা যাবে। সুতি কাপড়ে বিভিন্ন রকম উজ্জ্বল রঙের সমাবেশ হবে, এমনটাই মনে করেন ডিজাইনার লিপি খন্দকার। তিনি জানান, বিবিআনা সব সময় সুতি কাপড় নিয়ে কাজ করে।
আর সময়টা এখন বর্ষার দখলে হলেও গরম কিন্তু কাটেনি। তাই ঈদের পোশাকে সুতির প্রাধান্য থাকবে। সেই সঙ্গে লিনেনের তৈরি পোশাকও স্বস্তি দেবে। ঈদের সাজসজ্জায় পোশাকের রঙ নির্বাচন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। ডিজাইনার লিপির মতে, ফর্সাদের যেমন সব রঙ মানিয়ে যায় ঠিক, তেমনি কালো বলে সব রঙ পরা যাবে না এমন ধারনা ঠিক নয়।
নিজের কাছে যে রঙ ভালো লাগবে, যে রঙে মানাবে তাই পরা উচিত বলে মনে করেন এই ডিজাইনার। লিপির মতে, কালোদের কালো রঙের পোশাক পরলে আরও বেশি ভালো লাগে। তিনি বলেন, ঈদের দিন সকালে অনেক কাজ থাকে, তাই সকালবেলা মাঝবয়সী নারীরা ক্যাজুয়াল একটু গাঢ় রঙের পোশাক পরতে পারেন। দুপুর বা বিকালে হালকা আর রাতের বেলা যদি বাইরে প্রোগ্রাম থাকে, তবে যে কোনো গাঢ় রঙ পরতে পারেন। পোশাক যে রঙের হোক না কেন, গরমে তা যেন স্বাচ্ছন্দ্যময় হয় সে দিকটি সবার আগে দেখতে হবে।
পোশাকের কথা তো জানা গেল, মাঝবয়সী নারীর সাজের পরামর্শ দিয়েছেন বিউটি কনসালট্যান্ট ফারহানা রুমি। তিনি বলেন, কোরবানির ঈদে মেয়েদের হাতের ওপর চাপ পড়ে সবচেয়ে বেশি। তাই ঈদের আগের দিন মেনিকিউর আর পেডিকিউরের কাজটা সেরে নিতে পারেন।
এখন চলছে প্যারাফিন মেনিকিউর। ঈদের এক বা দুদিন আগে চুল কাটা, ফেসিয়ালের মতো কাজগুলো সেরে নেওয়ার পরামর্শ দিলেন ফারহানা রুমি। কোরবানির কাজ শেষ করে কুসুম গরম পানিতে লেবু, লবণ আর সামান্য শ্যাম্পু গুলে ১০ মিনিটে নখ পরিষ্কার করে নিতে হবে। তিনি বলেন, ঈদের দিন সব কাজ শেষ করে মুখে শসার রস তুলার প্যাডে করে পুরো মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট পর ধুয়ে নিলে ত্বকটা অনেক সজীব দেখাবে। মেকআপ করার আগে পুরো মুখে
একটু বরফ কুচি ঘষে নিতে পারেন, এতে করে মেকআপটা ভালো করে বসবে। দিনের বেলা হালকা বেস নিয়ে লাইট মেকআপ মানানসই হবে। তবে ঈদের রাতে সাজটা একটু ভারী নেওয়ার পরামর্শ দিলেন রুমি। মেকআপ নেওয়ার আগে মুখ ক্লিন করে প্রাইমার লাগাতে হবে ।
সান প্রটেক্ট ফাউন্ডেশন দিয়ে পিংক কালারের প্যান কেক লাগাতে পারেন। ফর্সা ত্বকের নারীরা হালকা রেড ব্লাশন আর যাদের রঙ একটু চাপা তারা ব্রাউন ব্যবহার করতে পারেন। এরপর মুখে হালকা করে শিমার লাগাতে হবে। চোখে কয়েক রঙের শেড মিলিয়ে দিলে ভালো লাগবে। চোখের ওপর-নিচে ল্যাশ লাগাতে পারেন। সব শেষে মেকআপ সেটিং স্প্রে দিতে হবে।
সকালবেলা চুলটাকে পনি টেল করে বা খোঁপা করে আটকে নিতে পারেন। রাতে চুলটাকে ছেড়ে বা দুপাশ থেকে দুটো ফ্রেঞ্চ বেণি করে পেছন থেকে একটি বেণি করলে ভালো লাগবে। মনে রাখতে হবে, ত্বক সুন্দর হলে মেকআপও ভালো হবে, তাই ঈদের দিন প্রচুর পানি আর জুস খেতে হবে। টিনএজাররা চুলটাকে সুন্দর করে কেটে ছেড়ে রাখতে পারে বা এক পাশে ছোট ফ্রেঞ্চ বেণি করে অথবা ছোট কয়েকটা বেণি করে চুল ছেড়ে দিতে পারে।
ঠোঁটে গাঢ় ম্যাট লিপস্টিক দিলে চোখটা হালকা হলে ভালো লাগবে।। টিনএজারদের সাজপোশাক কেমন হবে জেনে নিই এক্সপার্টদের বয়ানে। লা রিভের জ্যেষ্ঠ ডিজাইনার বিপ্লব বিপ্রদাশের মতে, এ সময় টিন ফ্যাশনে পাশ্চাত্যের প্রবেশ বেশি হচ্ছে।
এমব্রয়ডারির নকশা খানিকটা কমে সেমিট্রিক ইলাস্ট্রেশনের কাজ বেশি হচ্ছে। পোশাকের ঝুল কমে গেছে, ঘের বেড়েছে। প্লাজো এখন কম ঘেরের হচ্ছে। পোশাকে এখন কাটিং বেশি হচ্ছে। টিন পোশাকে ভিসকস, কটন আর জর্জেট কাপড়গুলো বেশি ব্যবহার হচ্ছে।
তবে এবার সিøভ নিয়ে বেশি কাজ হয়ে সিøভের কাটিং আর নকশায় বেশি পরিবর্ত এসেছে। ঈদ বা ঈদপরবর্তী দিনগুলোয় টিন পোশাকে টপ যদি ডার্ক প্রিন্টেড কালারের হয়, তবে বটম লাইট বেছে নিলে ভালো লাগবে বলে মনে করেন বিপ্লব।
