পেকুয়া ইউএনও এর সহায়তায় বাল্য বিয়ে বন্ধ


পেকুয়ায় তিন কিশোরীর বাল্য বিয়ে পন্ড করল প্রশাসন। সোমবার ২৬ ফেব্রুয়ারী পৃথক তিনটি বাল্য বিয়ে অনুষ্টানে হানা দেয় প্রশাসন।
এ সময় প্রশাসনের শক্ত অবস্থানের ফলে তিন শিক্ষার্থী বাল্য বিয়ে থেকে পেল রক্ষা। এ দিকে পেকুয়ায় বাল্য বিয়ের মহোৎসব চলছিল। নিরবে এ সব বিয়ে ছেলে ও কনে পক্ষ করেই চলছিল। ঐ দিন উপজেলার সদর ইউনিয়ন,মগনামা ইউনিয়ন ও রাজাখালী ইউনিয়নে তিনটি বাল্য বিয়ে পন্ড করা হয়েছে। বর বয়সে পরিপক্ক হয়েছে।
তবে কনে তিনজনই অপ্রাপ্ত বয়স্ক। অন্যদিকে কনে তিনজন মাদ্রাসা ও স্কুলের ৬ষ্ট, নবম ও দশম শ্রেনীর ছাত্রী। এ তিন ইউনিয়নে পৃথক তিন বিয়ের পিড়িতে বসছিলেন কোমলমতি তিন শিক্ষার্থী।
২৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দশম শ্রেনীর ছাত্রী আসমার বাল্য বিয়ের খবর ফলাও করে প্রকাশ করে। সংবাদের সূত্র ধরে স্থানীয় প্রশাসন ঐ দিন বিকেলে উপজেলার সদর ইউনিয়নের সৈকতপাড়ায় দশম শ্রেনীর ছাত্রী আসমার বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় বর ও বরযাত্রীরা কনের বাড়িতে উপস্থিত হন। সাজগোজ করে কনে গাড়ীতে তোলার আগ মুহুর্তে পুলিশ গিয়ে বিয়ে পন্ড করে দেয়।
পেকুয়া থানার এস,আই কিশোরসহ পুলিশ ফোর্সের সহায়তায় এ বিয়ে পন্ড করতে সক্ষম হন। অপরদিকে মগনামা ইউনিয়নেও একইদিন একটি বাল্য বিয়ে পন্ড হয়। মগনামা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ট শ্রেনীর ছাত্রী কলি আক্তার ও চকরিয়ার বরইতলী ইউনিয়নের পহরচাঁদা এলাকার আলমগীরের ছেলে পারভেজের বিয়ের অনুষ্টান চলছিল। ছেলে প্রবাসী, ঐসুবাদে ছোট মেয়েকে প্রবাসীর সাথে বিয়ে পড়িয়ে দেয়া হচ্ছিল। খবর পেয়ে পেকুয়ার ইউএনও মাহাবুব-উল করিম তাৎক্ষনিক ওই বিয়ে পন্ড করে দেন।
জানা গেছে, স্থানীয় ইউপির গ্রামপুলিশ গিয়ে ঐ ছাত্রীসহ তার অভিভাবকদের ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নিয়ে যায়। একই দিন উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নে পালাকাটা এলাকায় প্রবাসীর অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক কন্যা তাসমিন আক্তারের বিয়ে পন্ড করা হয়। তাসমিন পেকুয়া আদর্শ মহিলা মাদ্রাসার ৯ম শ্রেনীর ছাত্রী। একই ইউনিয়নের সুন্দরীপাড়া এলাকার জাবের আহমদের ছেলে আদরের সাথে তার বিয়ে হচ্ছিল।
ইউএনও ওই বিয়ে পন্ড করতে তৎপর হন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ছৈয়দ নুরকে নির্দেশ দেয় বিয়ে বন্ধ করতে। পরিষদের গ্রাম পুলিশ গিয়ে এ বিয়ের অনুষ্টান পন্ড করতে সক্ষম হন। দুপুরের দিকে এসব বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে তৎপর হন পেকুয়ার গনমাধ্যম কর্মীরা। তারা জেলা প্রশাসক কক্সবাজারকে বিষয়টি অবহিত করেন।
জেলা প্রশাসক পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ করতে তড়িৎ পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেন।ঐ দিন বাল্য বিয়ে পন্ড করতে প্রশাসনের দৃষ্টিনন্দন তৎপরতা স্থানীয়দের দৃষ্টি আকৃষ্ট করে। তাদের হস্তক্ষেপে বাল্য বিয়ের কুফল থেকে রক্ষা পেয়েছে প্রতিভাময়ী তিন ছাত্রী।