সম্প্রতি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার শাসনামলে বিশেষ সুবিধা পাওয়ার অভিযোগ ওঠে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, টিউলিপ ও তার পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাজ্যে এমন তিনটি বাড়িতে বসবাস করেছেন, যেগুলো শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠরা তাদেরকে বিনামূল্যে দিয়েছেন।
লন্ডনে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে উপহার নেয়া ছাড়াও সাবেক এক বাংলাদেশী সংসদ সদস্যের কাছ থেকে ২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের দুটি টিকিটও নিয়েছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক। এসব কারণে দেশটির বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি টিউলিপকে বরখাস্তের দাবি জানিয়েছিল। তারা বলছিল, টিউলিপের ওপর ব্রিটেনের দুর্নীতি প্রতিরোধের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারই নাম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়েছে। এতে তিনি মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব পালনের নৈতিকতা হারিয়েছেন।
টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের কাছে তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তবে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার বিরুদ্ধে তদন্তে মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস।
টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের চিঠি গ্রহণ করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার। টিউলিপের এ পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় তাকে একটি চিঠিও লিখেছেন দেশটির সরকারপ্রধান। ওই চিঠিতে কিয়ার স্টারমার লিখেছেন, দুঃখের সঙ্গে তিনি টিউলিপের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) হিসেবে টিউলিপ যে ভূমিকা রেখেছেন, সে জন্য তাকে ধন্যবাদও জানাচ্ছেন।
কিয়ার স্টারমার লিখেছেন, ‘আমি আপনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছি। আমি স্পষ্ট করছি যে একজন স্বাধীন উপদেষ্টা (ইনডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার অন মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস) হিসেবে লাউরি ম্যাগনাস আমাকে নিশ্চিত করেছেন যে, তিনি আপনার দিক থেকে মন্ত্রিত্বের বিধির (মিনিস্ট্রিয়াল কোড) কোনো লঙ্ঘন পাননি এবং কোনো আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পাননি।’
নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের জন্য লাউরি ম্যাগনাসের প্রতি আহ্বান জানানোয় টিউলিপ সিদ্দিককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কিয়ার স্টারমার। এ বিষয়ে চিঠিতে লিখেছেন, ‘ব্রিটেনকে বদলে দেয়ার যে লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি, সেখান থেকে আমাদের মনোযোগ ব্যাহত করার চলমান যে ঘটনাপ্রবাহ, তার সমাপ্তি টানার জন্য আমি আপনার প্রশংসা করছি। আপনি একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি স্পষ্ট করতে চাই যে, সামনের দিনগুলোয় আপনার জন্য দরজা খোলা রইল।’
টিউলিপ সিদ্দিক গত বছর লেবার পার্টির মনোনয়নে টানা চতুর্থবারের মতো যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর গত জুলাইয়ে তাকে ইকোনমিক সেক্রেটারি টু দ্য ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার পদে নিয়োগ দেয় প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার নেতৃত্বাধীন সরকার। টিউলিপ প্রথম পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন ২০১৫ সালে।
 
                         
 
												 
																			 
             
            