এমআইএস তথ্যে ভুল; ভাতা তুলতে পারছেন না মুক্তিযোদ্ধারা

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৭:৩২ পিএম, শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১ | ৪৮১

টাঙ্গাইলের সখীপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের এমআইএস (ম্যানেজম্যান্ট ইনফরমেশন সিস্টেম) করার সময় ব্যাংকের শাখার নাম সখীপুরের স্থলে বাগেরহাট হওয়ায় তারা তাদের সম্মানী ভাতা তুলতে পারছেন না। গত তিনদিন ধরে এ উপজেলার তিন শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা সোনালী ব্যাংকে এসে ভাতা তুলতে না পেরে ফিরে গেছেন। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলায় ৯৯৮জন তালিকাভূক্ত মুক্তিযোদ্ধা থাকলেও এমআইএসের অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন ৯৮৩ জন। এরমধ্যে জীবিত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন ৬২০জন। সরকার এখন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ইএফটি-এর মাধ্যমে (ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার) সরাসরি তাঁদের ব্যাংক হিসাবে (অ্যাকাউন্টে) পৌঁছানোর উদ্যোগ নিয়েছেন।

গত সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা জিটুপি (গভম্যান্ট টু পারসন) প্রক্রিয়ায় সরাসরি তাদের ব্যাংক হিসাবে পাঠানোর কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায় ১ লাখ ৬৮ হাজার মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের উপকার ভোগীকে জানুয়ারি মাসের ভাতা বাবদ ১৮২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরাসরি ভাতা ভোগীর ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয়।

সখীপুর সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল কর্মকর্তা (পিও) সাইফুল ইসলাম বলেন, তিন শতাধিক মুক্তিযোদ্ধার অ্যাকাউন্টে এখনো টাকা পৌঁছেনি। পরে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের এমআইএস করার সময় ভুলবশত ব্যাংকের শাখার লেখার অপশনে সখীপুর লেখা হলেও অটোমেটিক বাগেরহাট হয়ে গেছে। ফলে তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা আসেনি। গত তিনদিন ধরে বীরমুক্তিযোদ্ধারা ব্যাংকে এসে টাকা তুলতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন।

ওই ব্যাংক কর্মকর্তা আরও বলেন, সখীপুরে ১৩২জন বীরমুক্তিযোদ্ধা তাদের ভাতার বিপরীতে তিন লাখ টাকা করে ঋণ নিয়েছেন। প্রতিমাসে আমরা ওই ভাতা থেকে সাড়ে সাত হাজার টাকা কিস্তি হিসেবে কেটে রাখি। তাদের ভাতা না আসায় ঋণের কিস্তিও কাটা যাচ্ছে না।

এ ব্যাপারে উপজেলার গোহাইলবাড়ী গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা মিয়া উল্লাহ, বাঘেরবাড়ী গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আলম, বহুরিয়া গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা ময়েজ উদ্দিন বয়সের ভারে নুজ্ব হয়ে পড়েছেন। তাঁরা তিনজনই বলেন, আমরা তিনদিন ধরে ২০০ টাকা খরচ করে ভাতা তোলার জন্য সখীপুর সোনালী ব্যাংকে ঘণ্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে ভাতা না পেয়ে নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। কবে ভাতা তুলতে পারব তা কেউ বলতে পারছেন না।

সখীপুর পৌরশহরের বাসিন্দা বীরমুক্তিযোদ্ধা মনির উদ্দিন মন্টু বলেন, শুক্র, শনি ও ২১ শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে টানা তিনদিন ব্যাংক বন্ধ থাকবে। আগামী সোমবারেও ভাতা পাওয়া নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মনসুর আহমেদ বলেন, এমআইএস করার সময় তথ্য পূরণে আমাদের কোনো ভুল হয়নি। তবে শাখার অপশনে অটোমেটিক সখীপুরের স্থলে বাগেরহাট হয়েছে। বিষয়টি সংশোধনের জন্য পাঠানো হয়েছে। আশা করি খুব শিগগিরই বিষয়টি সমাধান হবে।