আর কত বয়স হলে বয়স্ক ভাতা পাবেন আমিন খান দম্পতি

নাগরপুর সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৭:০১ পিএম, শুক্রবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭ | ৬৬২

আর কত বয়স হলে বয়স্কভাতা পাবেন বয়োবৃদ্ধ আমিন খান দম্পতি। আমিন খান বয়স আর রোগ শোকে কাতর হয়ে বর্তমানে প্রায় অচল। সরকারি সহায়তা না থাকায় বৃদ্ধ স্ত্রী নূরী বেগম ভিক্ষা করে দুবেলা অসহায় স্বামীর মুখে অন্ন তুলে দেবার প্রানপণ লড়াই করছে। নিঃসন্তান আমিন খান দম্পতির এ কুলে নিকট আত্মীয় বলতে তাদের কেউ নেই। এবং তাদের দেখারও কেউ নেই। অর্থাভাবে রোগাক্রান্ত আমিন খান স্ত্রীসহ চরম মানবেতর করছে।


টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার গয়হাটা ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের মৃত ফটিক খানের ছেলে আমিন খান। বয়সের ভারে নূয়্যে পড়েছেন তিনি। জমিজমা নেই, আছে শুধু নাম মাত্র ভিটেবাড়ী। জীবন ও জীবিকা দুটোই থেমে যাওয়ার পথে । হাজারো অসুখ বাসা বেধেঁছে তার দেহে। লাঠির সাহায্যে পথ চলতে পারলেও ঔষধ কেনার মত সামর্থ নেই তার।

স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে ঘুরছেন দীর্ঘদিন। কোন সহায়তা না পেয়ে এই প্রতিবেদকের কাছে একটি কার্ডের জন্য (সরকারী সহায়তা) এসেছেন। সাংবাদিক যে কোন সরকারী সহায়তা দিতে পারে না, একথা জানালে সে বিশ্বাস না করে একাধিক বার আসতে থাকেন। দিন তারিখ মনে নেই তবে বিয়ে করেছেন সেই স্বাধীনতার আগে এটুকুই বলতে পারেন আমিন খান। স্ত্রী নুরী বেগম,বয়স দু’জনেরই কাছাকাছি। দীর্ঘ বিবাহীত জীবনে তাদের কোন সন্তান নেই। সঠিক বয়স নির্ধারনের জন্য জন্মসনদ বা জাতীয় পরিচয় পত্র কোন কিছুই নেই তাদের। তবে মুখের বলি রেখা দেখে ধারনা করা যায় জীবনের শেষ প্রান্তে তাদের অবস্থান।

স্থানীয় আব্দুল আলীম জানান, সত্তরোর্ধ আমিন খানের চেয়ে অনেক কম বয়সী বয়স্ক ভাতার সুবিধা ভোগ করছেন। অথচ আমিন খান ও তার স্ত্রী নূরী বেগমের ভাগ্যে জুটছে না বয়স্ক ভাতাসহ সরকারী কোন সাহায্য, সহায়তা। আামনি খান দম্পতি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে বছর খানেক আগে একবার নগদ কিছু সহায়তা পেয়েছিলেন।

তার পর থেকে শুধু আশ্বাস দিয়ে গেছেন সবাই। অসহায় এ লোকটির সাহায্যে এগিয়ে আসেনি কেউ। এখন ভিক্ষাবৃত্তি করে চলছে আমিন-নুরী দম্পতির দু’বেলা আহারের ব্যবস্থা। কান্নাজড়িত কন্ঠে আমিন খান জানান,সারাদিন ঘুরতে পারিনে পরান অস্থির করে। অসুদ(ঔষধ) কিনবার ট্যাহা(টাকা) নাই, চাইল (চাউল) কিনবার ট্যাহা নাই খামু কি।

একটা ট্যাহার কাড কইরা দিও। এ ব্যাপারে গয়হাটা ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান আসকর বলেন,আমিন খান ও তার স্ত্রীর কোন জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকায় তাদের কোন সরকারী সহায়তা দেয়া যাচ্ছে না। তবে আগামীতে জন্মসনদ অথবা জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদান সাপেক্ষে সরকারী সুবিধাভোগীর আওতায় আনা হবে বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান আসকর।