চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভাতার কার্ড দেয়ার নামে টাকা নেয়ার অভিযোগ

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৪:২৬ পিএম, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ | ৬৫২

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভাতার কার্ড দেয়ার নাম করে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

উপজেলার আনাইতারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনেন ১৯ অসহায় নারী পুরুষ ও প্রতিবন্ধি।

জানা গেছে, আনাইতারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর আলম ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ জুলহাস মিয়ার হাত দিয়ে ভাতার কার্ড দেয়ার কথা বলে গত তিন বছর আগে আঘৈদ, খাগুটিয়া ও আনাইতারা গ্রামের হতদরিদ্র ১৯ জন বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধি নারী পুরুষের কাছ থেকে ৬ হাজার করে মোট ১ লাখ ১৪ হাজার টাকা নেন। কিন্ত দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও চেয়ারম্যান তাদের ভাতার কার্ড না দিয়ে কালক্ষেপন করতে থাকেন। এদিকে কার্ড না পেয়ে রোববার ভুক্তভোগী ওই ১৯ নারী পুরুষ অভিযোগ দিতে উপজেলা পরিষদে আসেন। এ সময় তাদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, চৌকিদার জুলহাস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীরের মাধ্যমে ভাতার কার্ড করে দেবে বলে তিন বছর আগে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৬ হাজার করে টাকা নিয়েছেন। কিন্ত তিন বছর পার হয়ে গেলেও চেয়ারম্যান বা চৌকিদার আমাদের কার্ড দেয়নি। এরমধ্যে ধারকর্জ ও সুদে টাকা নিয়ে চৌকিদারের কাছে দিয়েছেন বলেও জানান তারা। অনেকে এনওজিও থেকে কিস্তিতে ঋণ নিয়ে টাকা দিয়েছেন বলেও জানান। 

ভুক্তভোগী ১৯ জন হলেন  আঘৈদ গ্রামের মৃত তাইজ উদ্দিনের স্ত্রী ফুলভানু বেগম, মৃত গোলাম মোস্তফার স্ত্রী জালেমন বেওয়া. ভরত দাসের স্ত্রী চিন্তা রানী দাস, আনাইতারা গ্রামের মৃত চন্দ্র মোহন দাসের স্ত্রী আদুরী দাস, হারান দাসের স্ত্রী শান্তি রানী দাস, সুনীল দাসের স্ত্রী বাতাসী রানী দাস, মৃত যোগেশ দাসের স্ত্রী বাসন্তী রানী দাস, স্বদেশ দাসের স্ত্রী আরতী রানী দাস, গোপাল দাসের স্ত্রী যমুনা রানী দাস, শুকুর আলীর স্ত্রী হাজেরা বেগম, কান্দু দাসের ছেলে স্বদেশ দাস, আব্দুল জলিলের ছেলে আব্দুস সালাম মিয়া, মাঠু মিয়ার ছেলে আলাউদ্দিন মিয়া, মোখছেদ আলীর ছেলে রকিব উদ্দিন, ছদু মিয়ার ছেলে শামসুল মিয়া, হাছেন মিয়ার ছেলে ফালু মিয়া, জালাল মিয়ার ছেলে গনি মিয়া, খাগুটিয়া গ্রামের সাইদুল্লা মিয়ার স্ত্রী রাফেজা আক্তার ও একই গ্রামের মজিদ মিয়ার স্ত্রী সুফিয়া বেগম। 

এ ব্যাপারে গ্রাম পুলিশ জুলহাসের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, চেয়ারম্যানের কথা অনুযায়ী তিন বছর আগে ভাতার কার্ড দেয়ার জন্য ১৯ জনের কাছ থেকে ৬ হাজার করে টাকা নিয়ে চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর স্যারকে দিয়েছি। কিন্ত চেয়ারম্যান কার্ড দেই দিচ্ছি বলে দিচ্ছেন না।

অভিযোগের ব্যাপারে আনাইতারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভাতার কার্ড দেয়ার কথা বলে আমি কারো কাছ থেকে একটি টাকাও নেয়নি এবং কাউকে নিতে বলিনি। আমি এ পর্যন্ত ৩শর মতো দরিদ্র নারী পুরুষ ও প্রতিবন্ধিকে নিয়ম অনুয়ায়ী ভাতার কার্ডের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। টাকা নেয়ার বিষয়ে একজন লোকও অভিযোগ করতে পারেনি। প্রতিপক্ষের লোকজন আমাকে হেয় করার জন্য গ্রাম পুলিশ জুলহাসের মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়াচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এ ব্যাপারে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাঈনুল হক অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।