প্রভাবশালীদের চাপে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০২:১৬ পিএম, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৯ | ৭০৫

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীকে জিম্মি করে নিয়ে কোমল পানীয়ের সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য পান করিয়ে কয়েকজন বখাটে গণধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলে চাপে গণধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা পড়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে অনিশ্চিত হয়ে গেছে  ওই ছাত্রীর এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া। লোক লজ্জার ভয়ে ধর্ষিতা ঐ ছাত্রী কোন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে না পেরে আশ্রয় নিয়েছে তার মামার বাড়িতে। 

জানা গেছে, গণধর্ষণের শিকার ঐ ছাত্রী দশম শ্রেণিতে পড়ে। চলতি মাসে নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০২০ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য সে ফরম পূরণ করে। ঐ ছাত্রীর বাবা পান বিক্রি করে পরিবারের ব্যয় নির্বাহ করে আসছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, বেলতৈল, চিতেশ্বরী ও হাটুভাঙ্গা বাজার এলাকার সোহান, রাকিব ও জসিমসহ তাদের সহযোগীরা স্কুলে আসা যাওয়ার পথে তার মেয়েকে কটূক্তি ও কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। কিন্তু তাদের কথায় রাজি না হওয়ায় তারা মেয়ের উপর ক্ষিপ্ত ছিল। গরীব ও নিরীহ হওয়ায় মেয়ের পড়াশোনার কথা চিন্তাা করে ও লোক লজ্জার ভয়ে তিনি এই ঘটনা কাউকে বলতে সাহস পাননি।

গত বুধবার সকাল ৯টার দিকে স্কুলে যাওয়ার পথে সোহান, রাকিব ও জসিমসহ তাদের সহযোগীরা তার মেয়েকে তুলে নিয়ে কোমল পানীয়ের সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য পান করিয়ে অজ্ঞান করে জসিমের বাড়িতে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর বখাটেরা তাকে রক্তাক্ত ও অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে চলে যায়।

স্থানীয় লোকজন ঘটনাটি জানতে পেরে তার পরিবারকে খবর দেয়। খবর পেয়ে তারা মেয়েকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে।

এদিকে পরিবারের একমাত্র সন্তাানের এমন করুন অবস্থা দেখে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন মা-বাবা। মেয়েকে নিয়ে এখন কি করবেন কোথায় দাঁড়াবেন কিছুই বুঝতে পারছেন না বলে জানিয়েছে তার পরিবার।

মেয়ের বাবা বলেন, যারা আমার মেয়েকে গণধর্ষণ করেছে তাদের পরিবার প্রভাবশালী নেতা। ধর্ষণকারীদের ভয়ে পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা।

বংশাই স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমজাদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঐ ছাত্রী এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ফরম পূরণ করেছে। মূল ঘটনা এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন এর চেয়ে বেশি আমি কিছু বলতে পারবো না।

এ ব্যাপারে দেওহাটা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ও পুলিশের উপপরিদর্শক মো. রফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বংশাই স্কুল এন্ড কলেজের এক ছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে এমন অভিযোগ এসেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। পরিদর্শনে গিয়ে ঐ ছাত্রীকে বাড়িতে না পাওয়ায় তার পরিবারকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত লিখিত কোন অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে মামলা রেকর্ড হলে আসামিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে