হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর থাকলেও অধ্যক্ষের নেতৃত্বে সফরে শিক্ষক কর্মচারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৩২ পিএম, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৭ | ৫৭১

হাজিরা খাতায় উপস্থিত স্বাক্ষর দিয়ে ও বিনা ছুটিতে অধ্যক্ষের নেতৃত্বে গাজীপুর সফরে রয়েছেন শিক্ষক কর্মচারিরা। বৃহস্পতিবার এ ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইল পৌর এলাকার মেজর জেনারেল (অবঃ) মাহমুদুল হাসান আর্দশ মহাবিদ্যালয়ে।

এর ফলে দূর্ভোগ পোহাচ্ছে কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের বিভিন্ন বিভাগের ক্লাসে আগত শিক্ষার্থী, দ্বিতীয় বর্ষের টেস্ট পরিক্ষা এবং শনিবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ইচ্ছুক এইচএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের নম্বরপত্র গ্রহণের দাবিদার শিক্ষার্থীরা। এ নম্বরপত্র উত্তোলনের জন্য কেন দেড় শতাধিক টাকা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ এমন অভিযোগও শিক্ষার্থীদের।

সরেজমিনে জানা যায়, ১৯৮৯ সালে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ঢাকার মেয়র মেজর জেনারেল (অবঃ) মাহমুদুল হাসান টাঙ্গাইল পৌর এলাকার শহীদ জগলু রোডে ১৭৪ শতাংশ জমির উপর নির্মাণ করেন মেজর জেনারেল (অবঃ) মাহমুদুল হাসান আদর্শ মহাবিদ্যালয়। বর্তমানে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রমে চলছে উচ্চ মাধ্যমিক ও ¯œাতক পর্যন্ত।

এর শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। এ সময় ২০১৭ সালে এইচএসসি পরিক্ষায় উত্তীর্ণ মেহেদী হাসান, আলআমিন, খাদিজা, শুক্লাসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, আগামী শনিবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরিক্ষা। এর জন্য তাদের নম্বরপত্র প্রয়োজন কিন্তু কলেজ খোলা থাকার কথা যেনে আসার পর দেখছি অফিস কক্ষ বন্ধ রেখে অধ্যক্ষসহ শিক্ষক কর্মচারিরা গাজীপুর গেছেন। কলেজের উপাধ্যক্ষের সাথে যোগাযোগ করলেও তিনি সমস্যা সমাধানের কোন ব্যবস্থা করতে পারেনি। এ নিয়ে তারা কঠিন সমস্যায় পরেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, কলেজ বন্ধ না থাকলে শিক্ষকরা না ধাকার কারণে তাদের কোন ক্লাস হচ্ছেনা। কলেজের অধ্যক্ষসহ প্রায় ২০ জন শিক্ষক কর্মচারি গাজীপুর ভ্রমণের যাওয়ার কারণে তাদের ক্লাস বন্ধ রয়েছে বলেও জানান তারা।

কলেজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, আজ কলেজে শিক্ষক সংকট থাকায় ঠিক মত ক্লাস গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছেনা। এর ফলে কলেজের শুধু বিজ্ঞান বিভাগের ক্লাস নেয়া সম্ভব হচ্ছে, বাকি সকল বিভাগের ক্লাব বন্ধ রয়েছে।


এ নিয়ে কলেজের উপাধ্যক্ষ মোঃ আমিনুল ইসলাম জানান, কলেজের গ্রন্থাগারিক ও গাজীপুরের কালিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা স্বপন চন্দ্র গোপের মায়ের পারলৌকিক ক্রীয়া অনুষ্ঠানে যোগদান করতে গেছেন অধ্যক্ষসহ ১৭জন শিক্ষক কর্মচারি। এ কারণে কলেজ পরিচালনায় কিছুটা সমস্যা হলেও বেশি সমস্যা হচ্ছে অফিস কক্ষের কার্যাক্রম বন্ধ থাকা নিয়ে।

এ কক্ষের দায়িত্বে থাকা অফিসের প্রধান সহকারি আশরাফ হোসেন, হিসাব রক্ষক জহুরুল ইসলাম, অফিস সহকারি ফজলুল হক ও ছানোয়ার হোসেন অফিস কক্ষের কার্যক্রম বন্ধ রেখে ওই অনুষ্ঠানে যোগদান করায় শিক্ষার্থীদের জরুরি ভিত্তিতে নম্বরপত্র গ্রহণের সমস্যাটা তীব্র আকার ধারণ করেছে।

এছাড়াও অফিস কক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ উপস্থিত না থাকায় কম্পিউটার অপারেটর জুলি কলেজে এসেও বাসায় ফিরে গেছেন। তবে এদের কেউ কলেজ থেকে ছুটি গ্রহণ নেননি বলেও জানান তিনি।

অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুর রহমান বলেন, ক্লাস কার্যাক্রম পরিচালনার জন্য বেশ কয়েকজন শিক্ষক কলেজে রয়েছেন। এছাড়াও অফিস কার্যাক্রম পরিচালনার জন্য অফিস সহকারিকে কলেজে ফেরৎ পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল-৫ সদর আসনের এমপি ও কলেজ গর্ভানিং বডির সভাপতি ছানোয়ার হোসেন জানান, বিষয়টি আমাকে অবহিত করা হয়েছিল। তবে অফিসের কার্যাক্রম বন্ধ রেখে অফিস সহকারিদের কেন ওই অনুষ্ঠানে নেয়া হলো এটি আমার জানা নেই।