মির্জাপুরে চোখ হারানো মিলনের পরিবারের বিরুদ্ধে তিন মামলা

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৬:১৮ এএম, রোববার, ১৬ জুন ২০১৯ | ৫২২

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কাজের মজুরি চাওয়ায় চাচাতো ভাইয়ের টেস্টারের আঘাতে দুই চোখ হারানো কিশোর বিল্লাল হোসেন মিলনের (১৬) পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে উল্টো তিনটি মামলা করা হয়েছে। মুল মামলা ভিন্ন খাতে নেয়ার জন্য এই উল্টো মামলা করা হয়েছে বলে মিলনের পরিবার অভিযোগ করেছে।

এর তিনটি মামলায়ই মিলনের বাবা গিয়াস উদ্দিন, মা জাহানারা বেগম, বড় বোন মোছা. নাছরিন আক্তার ও উকিল বোনের স্বামী নুর নবীকে; দুই মামলায় ছোট বোন পারভীন আক্তারকে; একটিতে মামা মো. লাবু মিয়াকে আসামী করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

মামলার বাদীরা হলেন মিলনের চাচাত ভাই মামলার প্রধান আসামী মামুনের (২৫) মা মোছা. আফরোজা বেগম, দুই নম্বর আসামী আলামিনের (১৯) মা মোছা. কুলছুম বেগম এবং মিলনের চাচা মো. নাজিম উদ্দিন। তাঁদের বাড়ি উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের রাজাবাড়ি বানিয়াচালা গ্রামে।

হুমকী ও হত্যার ভয় দেখানোর অভিযোগে গত ২৯ ও ৩০ মে মামলাগুলো করা হয়। এ ঘটনার তিন আসামির মধ্যে গত ২৮ মে মঙ্গলবার গ্রেপ্তারকৃত মিলনের চাচাতো ভাই মামুন ও তাঁর সহকারী আলামিন টাঙ্গাইল জেল হাজতে রয়েছেন। মিলন উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের রাজাবাড়ি বানিয়াচালা গ্রামের গিয়াস উদ্দিন ও জাহানারা বেগম দম্পতির ছেলে।

গত ১২ এপ্রিল মিলনের চোখ নষ্ট করে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এদিকে মিলনের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে করা মামলার বিষয়ে খোঁজ নিতে রাজাবাড়ি বানিয়াচালা গ্রামে গিয়ে জানা যায়, ঈদের দিন ৫ জুন মিলনের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করতে মামুনের বাবা মজিবর রহমান নিজেই তাঁদের ঘরের বিভিন্ন স্থানে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিত ঠিক করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাঁদের প্রতিবেশিরা জানান, শুধু ঘরে লাঠির আঘাত নয়। মিলনের পরিবারের সদস্যদের মারধোর করতে তিনি লাঠিসোটাসহ ধারালো অস্ত্রও সংগ্রহ করেছিলেন। পুলিশ আসার পর পরিস্থিত শান্ত হয়। মামলাগুলোর বাদীদের মধ্যে মোছা. কুলছুম বেগম (আসামী আলামিনের মা) জানান, তার ছেলে নির্দোষ। তিনি নিজেই ছেলেকে পুলিশে দিয়েছেন। তাছাড়া মামলায় বাড়ির দক্ষিণ পাশে পালানের উপর হুমকীর কথা উল্লেখ করা হলে প্রকৃতপক্ষে তা ঘটেনি উল্লেখ করে বলেন, টাঙ্গাইল থেকে একজন মামলা যেভাবে লিখেছেন সেভাবেই মামলা লেখা হয়েছে।

অপর বাদী মিলনের চাচা নাজিম উদ্দিনের স্ত্রী মর্জিনা বেগম জানান, মিলনের পরিবারের পক্ষ থেকে করা একটি মামলায় তাঁদের নাম থাকায় তাঁরাও পাল্টা মামলা করেছেন। প্রধান আসামী মামুনের মা ও অপর মামলার বাদী মোছা. আফরোজা বেগম বলেন, তারা যাতে মামলায় না ঠেকেন এজন্য মামলা করেছেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মির্জাপুরের দেওহাটা ফাঁড়ীর উপপরিদর্শক (এস আই) রফিকুল ইসলাম জানান, মামলার পলাতক আসামী কবির হোসেনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। পুলিশ ঘটনার সঠিক তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সচেষ্ট রয়েছে।