পঞ্চগড়ে অবৈধ ইটভাটায় নষ্ট হচ্ছে ফসল,পরিবেশ দুষনের শঙ্কা


অবৈধ ইটভাটা গিলছে উত্তরবঙ্গ অঞ্চলের উর্বর ফসলি জমি। হেক্টরের পর হেক্টর জমির ওপরের স্তর ভাটার পেটে যাওয়ায় কমছে জমির উর্বরা শক্তি। কিছু নিম্নমানের কয়লা পোড়ানো হচ্ছে বাকি সবই বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছের লাকরী,কাঠ ও বাঁশের মোথা পোড়ানোয় বাড়ছে দূষণ। নষ্ট হচ্ছে ফসলের খেত, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন হাজারও কৃষক নষ্ট হচ্ছে বনায়ন।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের খোলা পাড়ায় এ এস কে ব্রিক্স ( ড্রাম ভাটা) দিব্বি চালিয়ে যাচ্ছে। অধিকাংশ ইটভাটা গড়ে উঠেছে লোকালয়ে। বাদ পড়েনি বিদ্যালয়ের আঙিনায়ও। ফসলি জমি উজাড় করে নতুন নতুন ইটভাটা গড়ে উঠছে এ অঞ্চলে। ড্রাম ভাটা
ফসলহানি,জমি উর্বরা শক্তি ছাড়াও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে পড়ছে মানুষ।
সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়ে বছরের পর বছর আইন অমান্য করলেও আইনের আওতায় আনার চেষ্টা নিচ্ছে না জেলা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্টরা।
তথ্যমতে, বর্তমানে ইট ভাটা ৪০ টির মধ্যে ১৭ টির পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র থাকলেও জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে নিবন্ধন দিয়েছে ২৫ টির । ইট ভাটা কতৃপক্ষ ৮-১০ বছর ধরে নবায়ন ছাড়াই দিব্বি চলছে এ সব ইটভাটা। এতে কিছু অসাধু ব্যাক্তি সুবিধা নিচ্ছে আর কতৃপক্ষের অবহেলায় রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
এগুলোর দু-একটির বিরুদ্ধে মাঝে মধ্যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হলেও বেশির ভাগই নির্বিঘ্নে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। কে কত গুলো ইট পোড়াবে তারও কোন হিসাব নাই কতৃপক্ষের কাছে।কতৃপক্ষ কে বার বার বিষয় টি নজরে আনলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
ইট প্রস্তুতকরণ ও ভাটা স্থাপন-সংক্রান্ত জেলা প্রশাসকের অনুমোদন ছাড়া ভাটা স্থাপন ও ইট পোড়ানো নিষিদ্ধ। এ আইন লঙ্ঘনকারী এক বছরের কারাদণ্ড অথবা এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
কিন্তু পঞ্চগড়ে এ আইন লঙ্ঘন করেই বেশির ভাগ ইটভাটায় ইট বানানো ও পোড়ানোর কাজ চলছে।
পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন,অনাবাদি কিংবা এক ফসলি জমিতে ইটভাটা নির্মাণ করা যায়। কিন্তু পঞ্চগড়ে অধিকাংশ ইটভাটা গড়ে উঠেছে দুই অথবা তিন ফসলি জমিতে। ইট ভাটার বিরূপ প্রভাব পড়ছে এ অঞ্চলের কৃষি ও পরিবেশে।ইটভাটায় কার্বন নিঃসরণের ফলে আবহাওয়ায় বিরুপ প্রভাব পরে ফলে ফসলাদি নষ্ট হয়ে যায়।
ইটভাটা থেকে নির্গত ছাই আশপাশের গাছপালা ও ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে,মানুষ সহ গবাদিপশুর ফুসফুসের নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হয়। ছাই ও বস্তুকণা গাছের পত্ররন্ধ্র বন্ধ করে দিচ্ছে, কার্বনডাইঅক্সাইড ও সালফারডাই অক্সাইড মিশ্রিত ছাই ধান, আম, কাঁঠাল, লিচু, শিম, কুমড়া, সরিষাসহ নানাবিধ ফসলের রেণুকে বিনষ্ট করছে। ফলে ফসলের উৎপাদন মারাত্মকভাবে কমে যাচ্ছে।
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আব্দুল মান্নান
বলেন, অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেয়াসহ আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।