নাগরপুরে সংবাদ সম্মেলণ

দপ্তিয়র ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

নাগরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৬:৩০ পিএম, শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর ২০১৭ | ৬৭৩

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ৮নং দপ্তিয়র ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান এম এ ফিরোজ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ইউপি সদস্যদের সংবাদ সম্মেলণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে নাগরপুর রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলণ অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলণে ইউপি সদস্যদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, দপ্তিয়র ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আলী জিন্নাহ। ইউপি সদস্য তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমাদের ইউপি চেয়ারম্যান এম ফিরোজ সিদ্দিকি চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তার দুর্নীতির শেষ নেই।

তার সিমাহীন দুর্নীতির কারনে আমরা ৮ জন ইউপি সদস্য মিলে এম এ ফিরোজ সিদ্দিকির দুর্নীতির হাত থেকে আমাদের পরিষদকে বাচাতে তার অনাস্থা চেয়ে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আমরা অবস্থান নেয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান আমাদের সাথে সকল প্রকার যোগাযোগ বন্ধ করে কোন প্রকার আইনের তোয়াক্কা না করে তার ইচ্ছে মতো কাজ করে যাচ্ছেন।

তিনি তার লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান জনগণের নির্ধারিত পরিষদের মাধ্যমে ট্যাক্স বাবদ ৬লাখ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে তিনটি কিস্তিতে স্থানীয় ভাদ্রা কৃষি ব্যাংকে ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা জমা দিলেও ব্যাংকে খোজ নিয়ে দেখা গেছে ব্যাংকে মাত্র ১৩ হাজার ৪শত টাকা জামা রয়েছে।

বাকী টাকা চেয়ারম্যান এম ফিরোজ সিদ্দিকি আত্মসাত করেছেন। এছাড়া আমাদের পরিষদে গরীব মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত ১৯৫টি ভি.জি.ডি কার্ডের মাল দেয়ার সময় ইউপি চেয়ারম্যান প্রতি কার্ডধারীর কাছ থেকে বাধ্যতামূল ভাবে ৫০টাকা করে আদায় করে সাকুল্য টাকা একক ভাবে আত্মসাত করেছেন।

২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরের এ.ডি.পির ৮ লাখ টাকা কোন প্রকার কাজ না করে ভূয়া প্রজেক্টের মাধ্যমে আতœসাত করেন। ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরের ১% পার্সেন্টের ৪ লাখ এবং ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরের ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকাসহ মোট ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা, ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরের একই প্রজেক্ট দেখিয়ে সাকুল্য টাকা আত্মসাত করেছেন।

চেয়ারম্যান এম এ ফিরোজ সিদ্দিকি পরিষদে সরকারী কোন উন্নয়নমূলক কাজে আমাদের সাথে কোন প্রকার মিটিং বা আলাপ আলোচনা না করে বিভিন্ন অজুহাতে আমাদের স্বাক্ষর নিয়ে অবৈধভাবে বিভিন্ন প্রজেক্টে ব্যবহার করেছেন।

আমরা ইউপি সদস্যগণ নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরের এল.জি.এস.পি বরাদ্দ পাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে প্রতি সদস্যদের নিকট থেকে ২০ হাজার টাকা করে নিয়েও আমাদেরকে এল.জি.এস.পি’র বরাদ্দ থেকে প্রায়ই বঞ্চিত করে আসছে।

এছাড়া সরকারী নীতি অনুযায়ী একজন চেয়ারম্যানের সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অফিস করার বিধান থাকলেও ইউপি চেয়ারম্যান এম ফিরোজ সিদ্দিকি আইনের তোয়াক্কা না করে তার বাহাম ভূক্ত লোকজন নিয়ে গভীর রাত ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত অফিস খোলা রাখিয়া সরকারী ইউনিয়ন পরিষদে আড্ডায় লিপ্ত থাকেন।

আমরা ইউপি সদস্যরা ইউপি চেয়ারম্যান এম এ ফিরোজ সিদ্দিকিকে বার বার বোঝানোর চেষ্টা করলেও তাতে কোন লাভ হয়নি। তিনি নিয়মিত ইউনিয়নের সাধারণ জনগণসহ আমাদের সাথে বিভিন্ন ভাবে প্রতারনা করে আসছে।

নিরুপায় হয়ে আমি মো. আলী জিন্নাহসহ ৮জন ইউপি সদস্য মিলে ইউপি চেয়ারম্যান এম ফিরোজ সিদ্দিকির অনাস্থা চেয়ে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিতভাবে স্মারক লিপি প্রদান করেছি।

এব্যাপারে দপ্তিয়র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ ফিরোজ সিদ্দিকির সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমার ইউনিয়নের কয়েকজন ইউপি সদস্য আক্রোশবশত সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন একটি অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে দায়ের করেছে।

ইউপি সদস্যরা পরিষদের যে সকল অর্থ আত্মসাতের বিষয় নিয়ে আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন একটি অভিয়োগ দিয়েছে এসমস্ত বিষয়ে টাকা আত্মসাত করার কোন প্রকার সুযোগ নেই। আর আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা প্রমান করার সকল প্রমান আমার কাছে আছে।