পূর্নতা পেতে যাচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ের স্মৃতি সৌধটি

হাসেম আলী, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৮:৪৮ এএম, বুধবার, ২৪ অক্টোবর ২০১৮ | ২২৩

প্রায় দেড় বছর পর পূর্নতা পেতে যাচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণ ও শহীদের স্মরণে স্মৃতি সৌধটি। এরই মধ্যে টাইলস লাগানোর কাজ শেষে হয়েছে। এতে স্বস্তি ফিরে এসেছে শহিদ পরিবার ও মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে।

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল পাকবাহিনী প্রথম হানা দেয় ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে। ওই দিন বিভিন্ন পেশাজীবিদের ধরে নিয়ে যায় পীরগঞ্জ-ঠাকুরগাঁও সড়কের ভাতারমারী ইক্ষু খামার এলাকায়।

সেখানে বেনোয়েট দিয়ে খুচিয়ে ও ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি সুজা উদ্দিন আহম্মেদ, অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা, ব্যবসায়ী মোজাফ্ফর হোসেন, আব্দুল জব্বারসহ ৯ জনকে।

মুক্তিযুদ্ধে শহীদের স্মৃতি সংরক্ষণে শহীদ পরিবার ও এলাকাবাসী দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে পীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণে একটি প্রকল্প গ্রহন করে।

পীরগঞ্জ-ঠাকুরগাঁও সড়কের ভাতারমারী ফার্ম এলাকায় স্মৃতি সৌধ নির্মানে টেন্ডার প্রক্রিয়াসহ যাবতীয় কাজ কাগজে কলমে সম্পন্ন করে উপজেলা পরিষদ। কাজ না করেই ২০১৭ সালের ২ এপ্রিল প্রকল্পের কাজ শুরু এবং ২৫ মে শত ভাগ কাজ সমাপ্ত দেখিয়ে ঠাকুরগাও রোড় গবিন্দনগর এলাকার আরফান ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দকৃত সমুদয় অর্থ উত্তোলন করা হয়। কয়েক মাস আগে বিষয়টি জানা জানি হলে বিক্ষোভে ফেটে পরে শহিদ পরিবারের সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধারা।

এ নিয়ে গনমাধ্যমে ব্যাপক লেখা লেখিও হয়। পরে বাধ্য হয়েই উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জিয়ার তত্বাবধানে জুন মাসে স্মৃতি সৌধ নির্মান কাজ শুরু হয়। এতে এলাকাবাসী ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেখা দেয়। নির্মান কাজ শুরু করা হলেও শেষ না করেই কয়েক দিন পরে বন্ধ করে দেওয়া হয় নির্মান কাজ। এতে আবারো হতাশা দেখা দিয়েছে সংশ্লিষ্টদের মাঝে।

এ নিয়ে নানা সমালোচনার মুখে পড়তে হয় এর সাথে জড়িতদের। সংবাদকর্মী ও সংশ্লিষ্টদের চাপে আবারো স্মৃতি সৌধের কাজ শুরু করেন। ক’দিন থেমে থেকে চলতে থাকে নির্মান কাজ। এরই মধ্যে টাইলসের কাজ শেষ হয়েছে। পূর্নতা পেতে যাচ্ছে স্মৃতি সৌধটি। যদিও শহিদদের নাম সম্বলিত ছবি সাটানোর কাজ বাকি রয়েছে। আশা করা হচ্ছে শীঘ্রই এ কাজটিও শেষ করা হবে। এতে স্বস্তি ফিরেছে শহিদ পরিবার ও মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে।

শহিদ সন্তান বদরুল হুদা বলেন, কাজটা প্রায় শেষ। আমরা এতে খুশি হয়েছি। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ বলেন, দেরিতে হলেও স্মৃতি সৌধটির কাজ হচ্ছে। এতে ভাল লাগছে। এটি এ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল।

পীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল ইসলাম বলেন, স্মৃতি সৌধটি দৃষ্টি নন্দন করতেই বিলম্ব হয়। সকল শহিদদের ছবি না পাওয়া যাওয়ার কারণেই বিলম্ব হচ্ছে।