স্থানীয় জনগণ ও বাস্তবতা বিবেচনা করে পরিকল্পনা প্রণয়নে অর্থনীতিবিদদের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থানীয় জনগণ ও বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা, নীতি ও কর্মসূচি প্রণয়নের জন্য দেশের অর্থনীতিবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমি অর্থনীতিবিদদের কাছে এটাই প্রত্যাশা করি দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে আপনাদের পরিকল্পনা ও নীতিমালা প্রণয়ন করবেন।
শুক্রবার (১৭ মে) বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ২২তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলন-২০২৪’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
ভিনদেশীর পরামর্শ এখানে ফলপ্রসূ হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনো একজন দুই-একদিনের জন্য দেশে এসে আমাদের উপদেশ দিয়ে যাবে, ওই উপদেশ আমাদের কাজে লাগবে না। কাজে লাগবে নিজের চোখে দেখা এবং মানুষের জন্য করা। এটাই কাজে লাগবে।
শেখ হাসিনা বলেন, হ্যাঁ বাইরে থেকে আমরা শিখব। কিন্তু, করার সময় নিজের দেশকে দেখে করব, মানুষকে দেখে করব। আমাদের কী সম্পদ আছে সেটা দেখে করব।
গবেষণা আমাদের সবচেয়ে বেশি দরকার উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, আমি অর্থনীতি সমিতিকে বলব আপনারা গবেষণা করছেন, আমাদের গবেষণা দরকার। আমাদের জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে দেশকে মুক্ত রাখার পদক্ষেপ যেমন আমরা নিয়েছি পাশাপাশি দেশের মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার মতো মৌলিক অধিকারগুলো যাতে সুনিশ্চিত হয় সেটা মাথায় রেখেই আমাদের সব নীতিমালা এবং কার্যক্রম আমরা পরিচালনা করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, দেশকে ডিজিটালাইজড করায় এখন প্রত্যন্ত ইউনিয়নে ঘরে বসেও মানুষ ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে বিদেশ থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারছে এবং ২০২৬ সাল থেকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হলে তা কার্যকর শুরু হবে।
সরকার প্রধান বলেন, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা কার্যকর হবার পর যে চ্যালেঞ্জগুলো আসবে সেগুলো মোকাবেলা করা আর যে সুযোগগুলো আসবে সেগুলো কাজে লাগানোর মতো পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০২১ থেকে ২০৪১’ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছি যার লক্ষ্য হচ্ছে ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ একটি উন্নত ‘সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে উঠবে। পাশাপাশি নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, সেখানে উত্থান-পতন, অনেক চড়াই-উৎড়াই থাকবে এবং সেগুলোকে অতিক্রম করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। হতাশ হবার কিছু নেই, কেউ হতাশ হবেন না।
শত প্রতিকুলতা, গুলি, গ্রেনেড, বোমা হামলা-সবরকম বাধা অতিক্রম করেই তিনি এগিয়ে চলেছেন উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, আমার লক্ষ্য হচ্ছে, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে এই দেশকে উন্নত করা। আমরা অনেকদূর এগিয়েছি, ইনশাআল্লাহ এ দেশটা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে সেভাবেই এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, যত বাধাই আসুক সে বাধা বাধা নয়, সে বাধা আমরা অতিক্রম করতে পারব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবা না।’ কাজেই কেউ আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবে না।
দুই দিনব্যাপী দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. আইনুল ইসলাম।
সুত্র:বাসস
