নাগরপুরের সলিমাবাদ ইউনিয়ন যমুনার কবলে

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: ০৬:৫৯ পিএম, বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০১৭ | ৬৯১

রাখাইনের মত বর্বর যমুনা নদী, আমরা রোহিঙ্গাদের মত অসহায়,” এমনই বলেন যমুনাপাড়ি ভাঙ্গন এলাকার মানুষ। তারা আরো বলেন, রোহিঙ্গারা শরনার্থী হয়েছে বাংলাদেশের কাছে আর আমাদের শরনার্থী হতে হয় আরেক অসহায় আত্মীয়র বাড়িতে।

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা শেষ করে সর্বনাশা যমুনা নদী এবার ভাঙ্গন শুরু করেছে টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার সলিমাবাদ ইউনিয়ন পাইকশা মাইঝাইল গ্রাম। সলিমাবাদ ইউনিয়নের মোট আয়তন ১৭ কিমি. (৭ বর্গমাইল), প্রায় ৬০৪২ টি বাড়ি এবং প্রায় ২৩,৪৫৬ জন মানুষ বসবাস করে(আদমশুমারি ২০১১ অনুসারে)।

এই ইউনিয়নে গড়ে উঠেছে স্কুল কলেজ মাদরাসা, মসজিদসহ কয়েকটি হাট বাজার। ঐতিহ্যবাহী তেবাড়িয়া হাটে গরু ক্রয় বিক্রয়ের জন্য নাগরপুর, চৌহালী, দৌলতপুর উপজেলা ছাড়াও দূরদূরান্ত থেকে আসে ক্রেতা-বিক্রেতারা। সলিবামাদে রয়েছে ৪০০ বছরের পুরোনো মসজিদ যাকে মানুষ গায়েবি মসজিদ হিসেবেই জানে।

এ সকল স্থাপনা যমুনার কড়াল গ্রাসে বিলিন হবার পথে। গত এক বছরে ভাঙ্গনের ফলে পাইকশা মাইঝাইল গ্রামের প্রায় ৮০০ একর আবাদী জমি ২০০ বাড়ি গাছপালাসহ নদী গর্ভে চলে গেছে এখন হুমকির মুখে আছে পাইকশা মাইঝাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বসতবাড়ি হারিয়ে এই এলাকার মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে।

প্রতিদিন অগণিত বাড়ি স্থান্তর করতে হচ্ছে ভাঙ্গনের ফলে। বর্তমান হারে ভাঙতে থাকলে তেবাড়িয়া কলেজ, এসটিআই উচ্চ বিদ্যালয়, তেবাড়িয়া হাট এবং ৪০০ বছরের পুরোনো মসজিদ যমুনায় নিমজ্জিত হতে খুব বেশি দিন লাগবে না। এই এলাকার নদী ভাঙন রোধে আদৌ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। নদী ভাঙনের ফলে যেমন বাড়ছে মানুষের ভোগান্তি সমান হারে কমছে দেশের সম্পদ তথা আবাদী জমী।

র্সনাশা সর্বগ্রাসা নমুনা নদী উর্বর এঁটেল মাটির আবাদী জমি ও সবুজ গাছপালায় ভরপুর গ্রাম ঘরবাড়ি নিমিষেই রূপান্তর করছে নদীগর্ভের বালিতে। মানুষের সুষ্ঠু জীবন যাপন ও দেশের ভূসম্পদ রক্ষার্থে সরকারের অনতি বিলম্বে হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করছে পাইকশা মাইঝাইল তথা সলিমাবাদবাসী।