নাগরপুরে স্কুল ছাত্রী পপি হত্যা
বিয়ের জন্য চাপ দেয়ায় গামছা পেচিয়ে শ্বাসরোধ ও গলা কেটে হত্যা


টাঙ্গাইলের নাগরপুরে স্কুল ছাত্রী খালেদা আক্তার পপি (১৪) হত্যা রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডে রহস্য উদঘাটনসহ ঘাতক গোলাম মোস্তফা রাকিব (২২) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।
রোববার ভোর সাড়ে চারটার দিকে তার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়ে। এ সময় হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ও একটি মোবাইল ফোন সেট উদ্ধার করেছে পুলিশ। রাকিব উপজেলার সহবতপুর উত্তরপাড়া গ্রামের ওয়াজেদ আলী মিয়ার ছেলে ও পেশায় একজন নির্মান শ্রমিক।
গ্রেফতারের পর ঘাতক রাকিব রোববার বিকেলে টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আব্দুল্লাহ্ আল মাসুমের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধি দেয়। বিয়ের জন্য ক্রমাগত চাপ দেয়ায় সে এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে আদালতকে জানায় রাকিব।
নাগরপুর থানার ওসি মাইন উদ্দিন জানান, উপজেলার জাঙ্গালিয়া মুক্তিযোদ্ধা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী ও তারাবাড়ি গ্রামের আবুল কালাম ওরফে খালেকের মেয়ে পপির সাথে রাকিবের মোবাইল ফোনে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি পুলিশ প্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে তাকে গ্রেফতার করে। সে (রাকিব) আদালতকে জানায় পপি তাকে বিয়ের জন্য অনবরত চাপ সৃষ্টি করতে থাকে।
রাকিব বিবাহিত ছিল বিধায় বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়। ঘটনার দিন ৫ আগষ্ট খালেদা আক্তার পপি তার বাড়ি থেকে বের হয়ে এসে মোবাইল ফোনে রাকিবকে ডেকে এনে ওই দিনই বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। নাছোড় বান্দা পপির হাত থেকে রেহাই পেতে পপিকে দুনিয়া থেকে সড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা আটে সে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী রাকিব পপিকে টাঙ্গাইল শহরে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে নানা অজুহাতে সময় পার করতে থাকে। পরে রাতে টাঙ্গাইল থেকে টাঙ্গাইল-আরিচা আঞ্চলিক মহাসড়কে নলসন্ধা গ্রামে জিয়াখাল নামক স্থানে একটি নির্জন বাশঝাড়ে পপিকে নিয়ে যায় রাকিব।
সেখানে প্রথমে তাকে গলায় গামছা পেছিয়ে শ্বাসরোধ ও পরে ছুড়ি দিয়ে গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরদিন ৬ আগষ্ট খবর পেয়ে পুলিশ তার মরদেহটি উদ্ধার করে।এ ঘটনায় মৃতের বাবা মো. আবুল কালাম খালেক বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামী করে নাগরপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি নথিভূক্ত হওয়ার পর পুলিশ এ হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এর আগে গত ২৫ আগষ্ট জাঙ্গালিয়া তাড়াবাড়ি গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে মো. ছানোয়ার হোসেন বাঘেরবাড়ী গ্রামের চুন্নু মিয়ার ছেলে রুবেল ও আয়নাল হকের ছেলে হাছানকে পুলিশ গ্রেফতার করে। বর্তমানে এরা জেল হাজতে রয়েছে।