মাছ চাষে বছরে ২০লাখ টাকা লাভ করেন নাটোরের আবুল কালাম আজাদ

নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৪:২৪ পিএম, মঙ্গলবার, ২৮ আগস্ট ২০১৮ | ১১৪৬

মাছ চাষ করে বছরে প্রায় বিশ লাখ টাকা লাভ করেন নাটোরের বাগাতিপাড়ার আবুল কালাম আজাদ। তিনি এলজিইডি বিভাগের সাবেক পিডি ছিলেন (বর্তমানে অবসরে)। উপজেলার নূরপুর মালঞ্চি গ্রামের মরহুম কোবাদ আলী প্রামানিকের ছেলে প্রকৌশলী আবুল কালাম আজদ।

বাগাতিপাড়া সদর ইউনিয়নের বিলগোপাল হাটিতে প্রায় ত্রিশ বিঘা জমিতে তমালতলা এগ্রো ফিশারিজ নামে প্রজেক্ট করেছেন। ২০০০সালে শুধুমাত্র মাছ চাষের মধ্যে দিয়ে প্রজেক্টির প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করা হয়। বর্তমানে অবসরকালীন জীবনে তিনি একেবারে বসে না থেকে কর্মব্যস্ততার মধ্যে রয়েছেন। তাকে দেখে অনেক বেকার যুবক মাছ চাষ ও খামার গড়ে তুলতে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, ছোট-বড় সাতটি পুকুর রয়েছে তমালতলা এগ্রো ফিশারিজ নামে প্রজেক্টটিতে। ত্রিশ বিঘা ভ‚মির প্রজেক্টেরে বাইশ বিঘা জলাধার। এখানে মাছের ডিম থেকে ধানী, ধানী থেকে রেনু এবং রেনু থেকে বড় মাছের চাষ করা হয়। এলাকার অন্য মাছ চাষিরাও পুকুরে ছাড়তে পোনা মাছ নিয়ে যান। তমালতলা এগ্রো ফিশারিজের মাছ স্থানীয় তমালতলা বাজার ছাড়াও নাটোর এবং রাজশাহীর বাঘা, আড়ানী, পুঠিয়া, বানেশ্বর সহ ঢাকার বাজারে বিক্রি করা হয়।

এছাড়াও পুকুর পাড়ে তিনি তৈরী করেছেন হাঁস-মুরগী এবং ডেইরী খামার। খামারে টার্কি জাতীয় মুরগি ও দেশীয় হাঁস দেখা যায়। দুধ উৎপাদনের জন্য পালন করা হচ্ছে ফ্রিজিয়াম জাতের গবাদি পশু। উৎপাদিত মাছ, হাঁস-মুরগি, দুধ মানুষের প্রেটিন চাহিদা পুরনে ভ‚মিকা রাখছে। আবার এখানে এলাকার বেশ কিছু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। মাসিক বেতনে এবং দৈনিক হাজিরায় সারা বছর প্রায় পনের থেকে বিশ জন শ্রমিক কাজ করেন।

পুকুর ধারে বিভিন্ন জাতের ঘাস রোপন করে গবাদিপশুকে খাওয়ানো হয়। নিজ ফসলী জমিতে প্রয়োগ করেন গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির বিষ্টা। মাছের খাদ্য হিসেবে দেওয়া হয় খৈল, ভুট্টা সহ সুষম জাতীয় খাবার। গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি এবং মাছ চাষ করে বছরে প্রায় বিশ লাখ টাকা লাভ করেন বলে দাবি করেন প্রজেক্টের স্বত্বাধিকার আবুল কালাম আজাদ।

তমালতলা এগ্রো ফিশারিজের জেলে মাজেদুর রহমান বলেন, ‘এই প্রজেক্টটি এলাকাতে হওয়ায় মানুষের ব্যাপক সুবিধা হয়েছে। আমরা বেশ কয়েকজন জেলে দৈনিক চুক্তিতে মাছ ধরার কাজ করি।

ম্যানেজার আব্দুস সাত্তার জানান, তমালতলা এগ্রো ফিশারিজ হওয়াতে তিনি সহ এলাকার বেশ কিছু মানুষের বেকার সমস্যার সমাধান হয়েছে। তারা সারা বছর এখানে কাজ করতে পারেন। তাদের উপার্জনে বেশ কয়েকটি পরিবার চলছে।

তমালতলা এগ্রো ফিশারিজের পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘প্রথমে শুধুমাত্র মাছ চাষের মধ্যে দিয়ে প্রজেক্টি শুরু করি। বর্তমানে মাছ চাষের সাথে সাথে হাঁস-মুরগি, গবাদি পশু পালন করি। পুকুরের ধার দিয়ে শতাধিক আম গাছ রোপন করা হয়েছে। তাতে করে আমার বছরে প্রায় বিশ লাখ টাকা লাভ থাকে।

উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মোঃ অহেদুজ্জামান বলেন, আবুল কালাম আজাদ একজন সফল মাছ চাষি। তিনি দীর্ঘ দিন থেকে বিভিন্ন জাতের মাছ চাষ করছেন। আমাদের দপ্তর থেকে পরামর্শ দেয়া সহ বিভিন্ন সময়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। আমরা তাঁর আরো সফলতা কামনা করি।