চতুর্থ শ্রেণীর স্কুলছাত্রী গণধর্ষণের শিকার, ধর্ষকসহ গ্রেফতার ২


টাঙ্গাইলের গোপালপুরে চতুর্থ শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ধর্ষকরা দুই লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে ভিডিওটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
এ ঘটনায় মূল ধর্ষকসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার পাথালিয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন উত্তর পাথালিয়ার হাসান আলীর ছেলে মজনু (২৭) এবং তার সহযোগী জোছনা বেগম (৪০)। পরে তাদেরকে আজ শুক্রবার সকালে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বাবা-মা ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ায় উত্তর পাথালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ওই ছাত্রী নানীর কাছে থেকে লেখাপড়া করতো। গত ১৬ এপ্রিল ওই ছাত্রী উত্তর পাথালিয়া গ্রামের পড়শি ফজলু মিয়ার বাড়ির ফ্রিজে রাখা দুধ আনতে যায়।
ফজলু মিয়ার স্ত্রী জোছনা বেগমের যোগসাজশে একই গ্রামের হাসেন আলীর ছেলে মজনু এবং শামসুল হকের ছেলে সোহাগ ওই স্কুল ছাত্রীকে কৌশলে ঘরে আটকিয়ে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে। এ সময়ে তারা গণধর্ষণের দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও করে।
ধর্ষকরা প্রভাবশালী হওয়ায় এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ায় ওই ছাত্রীর দরিদ্র নানী সাহেরা বেগম ঘটনাটি চেপে যান। স্থানীয় হাসপাতালে গোপনে ধর্ষিতার চিকিৎসা নেওয়া হয়।
ধর্ষিতার মা অভিযোগ করে বলেন, তাদের দারিদ্র্যের ও অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে ধর্ষকরা পুণরায় শিশুটিকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য বাড়িতে এসে ধামকি দিতে থাকে। এমতাবস্থায় শিশুটির স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে শিশুটিকে টাঙ্গাইল শহরের এক আত্মীয় বাড়িতে নিয়ে লুকিয়ে রাখা হয়।
এ মতাবস্থায় ধর্ষকরা গত ৯ জুন ধর্ষকের নানী বাড়ি গিয়ে নানী সাহেরা বেগমের হাতে ধর্ষণের প্রমাণ হিসাবে মোবাইলের মেমোরি কার্ড তুলে দেয় এবং টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে এ ভিডিও ইন্টারনেটে আরো ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখায়।
এ ব্যাপারে গোপালপুর থানার ওসি হাসান আল মামুন বলেন, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে ধর্ষিতার মা তিনজনকে আসামি করে গোপালপুর থানায় গণধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাতে ধর্ষক মজনু এবং তার সহযোগী জোছনা বেগমকে গ্রেফতার করে। অপর ধর্ষক সোহাগ পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তাকে গ্রেফতারের অভিযান অব্যহত রয়েছে। গ্রেফতারা পুলিশের কাছে ঘটনার সত্যতা শিকার করেছে। পরে তাদেরকে আজ শুক্রবার সকালে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়।