চকরিয়া জমজম হাসপাতালকে ধ্বংস করার পায়তারা করছে চার কুচক্রি
কক্সবাজারের চকরিয়া জমজম হাসপাতালের ঐতিহ্য নিয়ে চলছে দ্বন্দ্বের লড়াই। ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালের কয়েকজন শেয়ার হোল্ডারদের মধ্যে কয়েকমাস দরে চলছে দ্বন্দ্ব আর পক্ষে-বিপক্ষে প্রচারণা।
এর ধারা বাহিকতায় ১২ মে বিকাল চার ঘটিকার সময় চকরিয়া ধানসিঁড়ি রেস্তোরেন্টের হল রুমে হাসপাতালের এমডি মোঃ গোলাম কবির’র নেতৃত্বে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অর্ধ শতাধিক সাংবাদিকদের সামনে হাসপাতালের ঐতিহ্য ও চার কুচক্রি ব্যক্তির ষড়যন্ত্রের তথ্য লিখিত আকারে তুলে ধরেন হাসপাতালের এমডি মোঃ গোলাম কবিরসহ বেশিরভাগ শেয়ারহোল্ডারগণ।
এমডি তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন- বর্তমানে ৩০/৩৫ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সমন্বয়ে চলছে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা। এই হাসপাতালের সুনাম ও চিকিৎসা সেবার অগ্রগতির কারণে কয়েকজন কুচক্রির মাথা ব্যথা শুরু হয়েছে।
এমডি গোলাম কবির বলেন- আমি ২০১৪ সালে সকল শেয়ার হোল্ডারের সর্বোচ্চ ভোটে পরিচালক নির্বাচিত হই। বর্তমানে আমাকে ৩য় বারের মতো ব্যবস্থাপনা পরিচালক নির্বাচিত করা হয়। আমার নেতৃত্বে হাসপাতাল যখন দিনদিন অগ্রগতির দিকে যাচ্ছে, আয় উন্নতি বাড়ছে, চিকিৎসা সেবার মান বৃদ্ধি পেয়ে হাসপাতাল যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন আশেক উল্লাহ, রিদুয়ানুল হক, দূর্ণীতিবাজ নুর হোসেন ও নুরুল ইসলাম চার কুচক্রি জোট বেঁধে হাসপাতাল ধ্বংসের প্রচারণায় লিপ্ত হয়ে সম্মানিত বয়োবৃদ্ধ ডা: মাহবুব কামাল চৌং ও দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত ডা: শওকত ওসমানের কাঁধে বন্দুক রেখে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার চেষ্ঠা করছে।
ডা: মাহবুব কামাল চৌং চেয়ারম্যান এবং ডা: শওকত ওসমান ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁরা বর্তমানে ২ জন সম্মানিত শেয়ার হোল্ডার। তিনি বলেন- ডা: শওকত ওসমানকে কেউ এমডি করেন নাই। তাঁরা বয়স্ক এবং অসুস্থতার ভারে চট্টগ্রাম শহরে রোগী দেখার সুযোগ হয় না। জমজম হাসপাতালে এস এমডির দায়িত্ব পালন করবে কীভাবে? তিনি বলেন- গতকাল কুচক্রি আশেক উল্লাহর নেতৃত্বে সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। ঐ সম্মেলনে আমাকে নিয়ে তারা বানোয়াট ও মিথ্যা বক্তব্য উপস্থাপন করেছে। আমি এ বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আশেক উল্লাহর নেতৃত্বে যেসব মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য দেয়া হয়েছে সবগুলো চারজনের আজগুবি সৃষ্টি।
এমডি মোঃ গোলাম কবির আরো বলেন- ২০১৬ সালে রিদুয়ানের নেতৃত্বে এবং ২০১৭ সালে ইঞ্জিনিয়ার নুর হোসেনের নেতৃত্বে আর্থিক বিষয়ে তদন্তের জন্য ২টি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সকল পরিচালকের নিকট জমা আছে। উক্ত রিপোর্ট ২টিতে মোঃ গোলাম কবির টাকা আত্মসাৎ করেছে এমন অভিযোগ নেই। অথচ এই চার কুচক্রি কীভাবে আজ আমার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ তোলে? বরং ডা: শওকত ওসমান ১৬,৬৪,৪১৫/- ষোল লক্ষ ছোষট্টি হাজার চারশ পনের) টাকা, ডা: আব্বাস উদ্দিন ৭,৭৭,৮৪৯/- (সাত লক্ষ সাতাত্তর হাজার আটশ ঊনপঞ্চাশ) টাকা, ডা: মাহবুব কামাল চৌং ৩,৯৭,৭৬৬/- (তিন লক্ষ সাতানব্বই হাজার সাতশ চেষট্টি) টাকা, আশেক উল্লাহ প্রায় ২৮৮,০০০/- (দুই লক্ষ আটাশি হাজার) টাকা, রিদুয়ানুল হক ২,১০,৬৬৭/- (দুই লক্ষ দশ হাজার ছয়শ চেষট্টি) টাকা, নুর হোসেন প্রায় ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা এবং নুরুল ইসলাম প্রায় ৬৫,০০০/ (পয়ঁষট্টি হাজার) টাকা সর্বমোট ৬০,৮৬,৯৩৬/- ( ষাট লক্ষ ছিয়াশি হাজার নয়শ ছত্রিশ) টাকা সরাসরি আত্মসাৎ করেছে বলে অডিট কমিটি ও তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দিয়েছে। এই টাকা আত্মসাৎ এর বিষয়ে শিগগিরই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিন জানান ( সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী)।
এমডি মোঃ গোলাম কবির আরো বলেন- সাংবাদিক সম্মেলনে চার কুচক্রি আদালতের রায় বিষয়ে শতভাগ মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য উপস্থাপন করেছে। এবিষয়ে আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি লিখিতভাবে প্রকৃত ঘটনা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। প্রকৃত ঘটনা হলো- মহামান্য সুপ্রীম কোর্ঠ ৪৫৮০ নং মামলায় ১২/০২/২০১৮ ইং পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানী শেষে মোঃ গোলাম কবির এমডি হিসাবে নুর হোসেন ও ডা: আব্বাছ উদ্দিনগণকে পরিচালক হতে অব্যহতি দেওয়া ছিঠি বহাল রাখেন। উক্ত মামলায় ডা: শওকত ওসমানের এমডি হিসাবে দাবি প্রত্যাখান করেন এবং সুপ্রীম কোর্টের এই আদেশ এখনো বহাল আছে। অপরদিকে ১২/০২/২০১৮ইং সুপ্রীম কোর্টের একই বেঞ্চে২৫২৬ নং মামতলায় (১৬৯/১৬) সিরাজুল ইসলামগং এর মামলাটি ডিসমিস করেন অর্থাৎ সিরাজুল ইসলামের আবেদনটি খারিজ করেন। এই মামলায় মোঃ গোলাম কবিরকে এমডি হতে বাদ দিয়ে ডা: শওকত ওসমানকে এমডি ঘোষণার বিষয়টি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যাচার।
এমডি আরো অভিযোগ করেন- আশেক উল্লাহ, রিদুয়ানুল হক, নুর হোসেনগং কোনো ধরনের ভোটের বিশ^াস করে না। কারণ এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সকল ভোটে উক্ত চক্রটি ৪/৫ টির অধিক ভোট পায় নাই। ৭৫ জন শেয়ারহোল্ডার গত ১৬ বছর ভোট দিয়েছে এখন কেন তারা ভোটার হবে না? ২৫ জন শেয়ার হোল্ডার (কথিত আন-রেজিস্ট্রার্ড) তাদের শেয়ার প্রায় ৫০ জনের সমান। তাদেরকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করা কার স্বার্থে?
তিনি আরো বলেন-গত ১৭/০২/২০১৮ইং চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় ৩ পক্ষের যে বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটি হয়েছে এতে আমাকে এমডি হিসাবে বহাল রেখে বিরোধ নিষ্পত্তির দায়িত্ব দেয়া হয়। উক্ত কমিটি ১১/০৫/২০১৮ইং নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। এই নির্বাচন সমঝোতার নির্বাচন যা আশেক উল্লাহ, রিদুয়ানগণ পরাজিত হওয়ার ভয়ে অংশগ্রহণ হতে বিরত থাকে।
তিনি আরো অভিযোগ করেন- পুলিশি বাধার মুখে সাধারণ সভা পন্ড বিষয়টি সত্য নয়। পূর্ব হতে এই সাধারণ সভা হোটেল মিডওয়েতে নির্ধারিত ছিল। অধ্যাপক এনামুল হক মন্জুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তোলা আশেক উল্লাহর মত জ্ঞান পাপীদের সম্ভব। উক্ত বিষয়ে অধ্যাপক এনামুল হক মন্জুর বিরুদ্ধে ৩বার প্রকাশ্যে তদন্তে কোনো অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রদান করেন। পুনরায় এই ধরনের মিথ্যা অভিযোগ কেউ প্রচার করলে আইনত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।
সর্বোপরি তিনি আশেক উল্লাহগংদের বিবেক বর্জিত মিথ্যাচার হতে সবাইকে সাবধান থাকার বিনীত অনুরোধ জানান এবং সাংবাদিক সম্মেলনে দেয়া তাদের কুরুচিপূর্ন ও মিথ্যা-বানোয়াট বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
