বগুড়ায়

৪০ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা অান্তর্জা‌তিক মানবাধিকার সাংবা‌দিক সংস্থা

খা‌লিদ হাসান,বগুড়া প্র‌তি‌নি‌ধি
প্রকাশিত: ০৬:২০ পিএম, মঙ্গলবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৮ | ৬৫৬
বগুড়ার শিবগঞ্জে ৪০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে “আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থা নামের একটি ভুয়া এনজিও। গত পহেলা ডিসেম্বর ২০১৭ থেকে উপজেলার উথুলী রথবাড়ি নামক স্থানে মৃত জিয়াউল হকের ছেলে নূর আলমের বাসা ভাড়া নিয়ে সংস্থাটি একটি অফিস খুলে বসে।
 
সেখানে দায়িত্বে ছিলেন উৎপল, জুয়েল, খায়রুল, বিপ্লব, ফারুক ও নাজমুল। অফিস নেওয়ার পর থেকেই মোকামতলাসহ আশেপাশের এলাকা থেকে ২৫জন মাঠ কর্মি নিয়োগ দেন ওই সংস্থা। প্রতিটি মাঠ কর্মীর মাসিক বেতন ৬ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা। মাঠ কর্মীদের যোগ্যতা ‘ভাল সেলাইয়ের কাজ জানা। এ সব মাঠ কর্মীদের কাজ ছিলো প্রতিটি এলাকায় দল তৈরি করে সেলাই মেশিনে ১৫ ধরনের কাজ শেখানো।
 
প্রতিটি দলের সদস্য হতে গেলে ১২০০ টাকা দিয়ে সদস্য ফরমের মাধ্যমে ভর্তি হতে হয়। অফিসের স্যারদের কথা মত নিয়োগ প্রাপ্ত ২৫জন মাঠ কর্মি প্রত্যকেই ১২০০ টাকা করে নিয়ে সদস্য সংগ্রহ করে এবং ৩০ থেকে ৪০ জন করে দল তৈরি করা হয়। এভাবে ২৫জন মাঠ কর্মি প্রায় ৫ থেকে ৬ টি দল গঠন করেন। মোট ১৪৫ টি দলের সদস্যর নিকট থেকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা অফিসে জমা হয়। সম্প্রতি ঢাকায় অফিসে মিটিংয়ের কথা বলে কর্মকর্তারা রাতা রাতি উধাও হয়ে যায়। 
 
এ ব্যাপারে মাঠ কর্মি ছোট হরিপুর গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদের মেয়ে শাহনাজ আক্তার রিমু বলেন, আমি অফিসের কাগজের উপর উপজেলা সমাজ সেবা অফিসারের সিল ও মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের অফিসারদের স্বাক্ষর দেখেছি। আমাকে গত ২ মাসের বেতন দিয়েছে ১২ হাজার টাকা, আমি সদস্যদের নিকট থেকে অফিসে ৫টি দল থেকে ১লাখ ২০হাজার টাকা জমা দিয়েছি। হঠাৎ গত মার্চ মাসের ২৪ তারিখে অফিসে গেলে অফিস বন্ধ দেখতে পেয়ে ফারুক স্যারের কাছে ফোন দিলে তিনি বলেন, জরুরী মিটিংয়ের কারনে ঢাকায় অফিসে এসেছি ।
 
আপনারা আপনাদের মত ক্লাস চালিয়ে যান আমরা এসে আপনাদের বেতন দিবো। এখন আর তাদেরকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছেনা যা সকল গ্রুপের সদস্যরা জেনে গেছে। তারা এখন আমাদের বাড়ি বাড়ি আসতেছে তাদেরকে সেলাই মেশিন দেওয়ার কথা ছিলো । তিনি আরো বলেন, আমরা উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার আব্দুল মানিক স্যারের নিকট গিয়ে ছিলাম তিনি বলেন, আমাদের নিকট কিছু লোক এসেছিলো কাগজ নিয়ে আমরা শুধু রিসিফ করেছি মাত্র ।
 
একই কথা বলেন মাঠকর্মি কৃষ্ণপুর গ্রামের নুরজাহান, জাবারিপুর গ্রামের হাসু,কা‌শিপুর গ্রা‌মের মিনু। তারা আরো বলেন আমরা এখন কার কাছে যাবো আত্বহত্যা ছাড়া কোন বুদ্ধি নেই। এ ব্যাপারে মাঠ কর্মী রোমানা আরো বলেন, ম্যানাজার বিপ্লব মাঝেমাঝে ০১৭৫০-৮২৯০৮২ নাম্বান থেকে ফোন দিয়ে বলে, তোমরা কাজ চালিয়ে যাও আমরা আবার আসবো। কিন্তু আমরা ফোন দিলে তাকে পাইনা। আমরা এখন দিশেহারা হয়ে পরেছি।
 
এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার আব্দুল মানিক ওই সংস্থার কাগজপত্র রিসিফ করার কথা স্বীকার করে জানান, আমাদের জনবল সল্পতায় সবকিছু তদারকি সম্ভব হয় না। ‌শিবগঞ্জ থানার ও‌সি শা‌হিদ মাহমুদ খানের কা‌ছে এ বিষ‌য়ে জান‌তে চাই‌লে তি‌নি ব‌লেন এ ব্যাপা‌রে কোন অ‌ভি‌যোগ পাই‌নি। অ‌ভি‌যোগ পে‌লে ব্যবস্থা নি‌বো।