বগুড়ার কুমার পল্লীতে বৈশাখী অামেজ;
ব্যস্ত সময় পার করছে কুমাররা
বাংলা নববর্ষ ও বাঙালী জাতির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ আর মাত্র কয়েকদিন পরেই। আর এ উপলক্ষে বিভিন্ন হাট-বাজার, পাড়া-মহল্লার মোরে মোরে বসবে মেলা। বৈশাখকে বরণ করতে বৈশাখী মেলাকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন বগুড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলার কুমার পাড়ার মৃৎশিল্পীরা।
কুমার পাড়ার মৃৎশিল্পীদের ঘরে ঘরে এখন চলছে কাদামাটির নানা রকম খেলনা তৈরীর কাজ। আর এই কাজে পুরুষদের পাশাপাশি গৃহবধূ, কিশোর, যুবক-যুবতী,এবং বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা সবাই ব্যস্ত সময় পার করছেন। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের সকলেই এখন এ কাজ নিয়ে ব্যাস্ত সময় পার করছেন।
প্রতিটি পরিবারের সদস্যরাই পূর্ব পুরুষের এই পেশাটি ধরে রাখতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে মাটি দিয়ে বিভিন্ন জিনিষ পত্র তৈরি করে আসছেন। কুমার পাড়ায় ঢুকেই চোখে পড়ে প্রতিটি বাড়ির সামনেই শত শত মাটির তৈরী বিভিন্ন সামগ্রী হাঁড়ি পাতিল, দইয়ের ঘটি, সরা, কলসী, ফুলদানিসহ শিশুদের নানা রকম খেলনা। এছাড়া কেউ মাটি কাঁদা করছেন, কেউ আবার মাটির জিনিস পত্র তৈরী করে রোদে শুকাতে দিচ্ছেন।
পুরুষের পাশাপাশি বাড়ীর বউ ঝিয়েরাও এসব জিনিসে নানান রং লাগাতে ব্যস্ত ।এসময় কথা হয় মৃৎশিল্পী গোপালের সাথে তিনি বলেন, প্লাষ্টিকের বিভিন্ন জিনিষ পত্র বাজারে সয়লাব হয়ে যাওয়ায়, এখন আর মাটির তৈরী জিনিষ পত্রের অাগের মতো কদর নেই, তাই অনেকে এ মৃৎশিল্পের এ পেশা ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পরছেন।
এছাড়া বর্তমান প্রজন্ম এ পেশায় আগ্রহী না। পহেলা বৈশাখ নববর্ষ এবং বৈশাখী মেলা উপলক্ষে মাটির তৈরী বিভিন্ন সৌখিন সামগ্রী ও শিশুদের নানা রকম খেলনা বেশী বিক্রি হয়। বিভিন্ন মেলায় বিক্রির জন্য শিশুদের ছোট ছোট হাঁড়ি পাতিল, পুতুল, ব্যাংক, মাছ, হড়িণ, হাতি, ঘোড়াসহ বিভিন্ন রকম খেলনা তৈরীর জন্য আমরা ফালগুন ও চৈত্র মাস থেকে বিরামহীন ভাবে কাজ করি। পরিবাবারের অন্যান্য সদস্যরাও এ কাজে আমাদের সহযোগিতা করে থাকেন।ছয় মাস অন্য পেশায় জড়িত থাকতে হয় ।
তিনি বলেন, আমাদের মাটির তৈরী সৌখিন সামগ্রী ও শিশুদের বিভিন্ন রকমের খেলনা আমরা স্থানীয় মেলায় ও বাজারে বিক্রি করে থাকি ।একটি মাটির ঘোড়া২০ থেকে৬০ টাকা ,হরিণ ১৫থেকে ২৫,কলসি ৬০ থেকে২৫ টাকা,ফুলদানী ৮০থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করে থাকি। এসব মাটির তৈরী সামগ্রী বিক্রী করে,বছরের এই সময়টিতে আমাদের সংসারে কিছুটা হলেও সচ্ছলতা ফিরে আসে বলেও জানান এই মৃৎ শিল্পী।
