টেকনাফে নববধূ খুন। স্বামী আটক, শ্বশুর পলাতক

জেলা সংবাদদাতা,কক্সবাজার
প্রকাশিত: ০৯:৩৯ পিএম, বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ | ৪৪৪
তসলিমা আক্তার। -আলোকিতপ্রজন্ম.কম

কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ে প্রেম করে বিয়ের পরও নববধুর কপালে সুখ সইলনা। অবশেষে শ্বাশুড় বাড়ির লোকজনের হাতেই প্রাণ হারাতে হল তাকে। পিতার মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ স্বামীকে আটক করলেও সন্দেহভাজন শ্বাশুড় পলাতক রয়েছে।

জানা যায়,গত ২৬ ফেব্রুয়ারী ভোররাত ৪টারদিকে উপজেলার হোয়াইক্যং খারাইগ্যাঘোনার আলী আকবরের পুত্র নুরুল বশর প্রকাশ ভাইয়া (২৫) এর স্ত্রী হ্নীলা জাদিমোরাস্থ নয়াপাড়ার জালাল আহমদের মেয়ে তসলিমা আক্তার (১৮) এর মৃত দেহ পাওয়া যায়। তাকে গোপনে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার উখিয়া থানা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ স্বামীকে আটকে রাখে।

এরপর পোস্ট মর্টেম শেষে লাশ স্থানীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়। এই ঘটনায় নিহত তসলিমার পিতা বাদী হয়ে টেকনাফ মডেল থানায় (মামলা নং-৪৩/২৬-০২-২০১৮ইং) একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে ২৭ ফেব্রুয়ারী দুপুরে থানার এসআই মহির উদ্দিন খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং স্বামীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক স্বামী বিভিন্ন ধরনের উলট-পাল্ট তথ্য দেওয়ায় সন্দেহ আরো বাড়ছে।

এই ব্যাপারে নিহত তসলিমার পিতার সাথে কথা বলতে চাইলে মুঠোফোন বন্ধ থাকায় কোন ধরনের বক্তব্য ও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এইদিকে নিহত তসলিমার মামা কালা মিয়া ওরফে কালা ভাই বলেন, তারা উভয়ে আমার আত্নীয়। মেয়ে বেড়াতে আসার সুযোগে তাদের মধ্যে সম্পর্কের মাধ্যমে বিয়ে হয়। কিন্তু ছেলের পিতা মেনে না নিয়ে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার আশ্রয় নিয়েছে বলে মনে করেন।

টেকনাফ মডেল থানার ওসি রনজিত কুমার বড়ুয়া জানান,আটক স্বামীকে সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়,তসলিমা বিয়ের পূর্বে মামার বাড়িতে (নাইয়্যুর)দাওয়াত উপলক্ষ্যে বেড়াতে গিয়েই নুরুল বশরের সাথে পরিচয়ের সুত্রধরে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ছেলে নুরুল বশর পিতার অবাধ্য হয়েই তসলিমাকে বিয়ে করে। এই কারণে পিতাসহ পরিবারের অন্যরা তসলিমা ও বশরকে মেনে নেয়নি।

এই কারণে তাদের সংসারে প্রায় সময় ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকত। ২৫ ফেব্রুয়ারী ঘটনার দিন সকালে নুরুল বশর ও পিতা আলী আকবরের মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। এরপর নুরুল বশর রাতে নাফনদীর ওই পারের প্রজেক্টে মাছ শিকারে যায়। ভোরে এসে স্ত্রীর এই অবস্থা দেখে এক সহযোগী নিয়ে হাসপাতালে দেখতে গিয়েই সন্দেহভাজন হিসেবে আটক হয়। এই ঘটনার পর পরই শ্বাশুড় আলী আকবরসহ পরিবারের সবাই পলাতক রয়েছে।