পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ; তিনজন ডাক্তার!

ভূঞাপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৩:২৯ পিএম, রোববার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ | ৫৭৬

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর ৫০ শয্যা-বিশিষ্ট সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা সেবায় চিকিৎসা রয়েছেন মাত্র তিনজন। সরকারি নিয়মানুযায়ী এ ধরনের একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিশেষজ্ঞ মিলিয়ে চিকিৎসক থাকার কথা ২৮ জন। সেখানে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৮ জন চিকিৎসকের অনুমোদন থাকলেও মাত্র তিনজন কর্মরত আছেন বলে জানা গেছে।

সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, ভূঞাপুর ৫০ শয্যা-বিশিষ্ট সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট চলছে দীর্ঘদিন ধরে। হাসপাতালটি উপজেলা সীমান্তবর্তী স্থানে হওয়ায় উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী ঘাটাইল, গোপালপুর ও কালিহাতী উপজেলা থেকে প্রচুর রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক, নার্স, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংকটের কারণে কোনো সেবা না পেয়ে বাধ্য হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন বিভিন্ন ক্লিনিকে।

হাসপাতালসূত্রে জানা গেছে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী মেডিসিন, সার্জারি, গাইনি, এনেসথেসিয়া, শিশুরোগ, অর্থোপেডিক্স, কার্ডিওলজি, চক্ষুরোগ, নাক-কান-গলা ও ডেন্টাল সার্জনসহ মোট ৯ জন কনসালটেন্টসহ ২৮ জন চিকিৎসক থাকার কথা। সেখানে কর্মরত চিকিৎসক রয়েছেন ৯ জন।

এর মধ্যে ডেপুটেশনে রয়েছে পাঁচজন। স্বাস্থ্য সহকারী, টেকনিশিয়ান, ল্যাবরেটরি এসিস্ট্যান্ট, সিএইচসিপি ও এমএলএসএস পদে একটি করে পদ থাকলেও কোনো জনবল নেই। অফিস সহকারী তিনজনের মধ্যে রয়েছে একজন। স্বাস্থ্য সহকারী পদ শূন্য রয়েছে পাঁচটি। বৃহ্ৎ এরিয়া জুড়ে হাসপাতালে সিকিউরিটি গার্ড থাকার কথা তিনজন, রয়েছে একজন।

এ ছাড়া হাসপাতালে একটি দীর্ঘ পুুরনো এক্সরে যন্ত্র কোনো রকমে চলে। আল্ট্রাসনোগ্রাম যন্ত্র আছে কিন্তু কোনো সনোলজিস্ট না থাকায় সেটিও বিকল। প্যাথলজিক্যাল ল্যাবও নামেমাত্র চলছে। ফলে হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা ভেঙে পড়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার জাহিদুজ্জামান জুয়েল বলেন, ‘ডিউটি করতে করতে নিজেই রোগী হওয়ার উপক্রম। ডেপুটেশনের চিকিৎসকগণকে হয় বদলি করে দেওয়া হোক, নয়তো হাসপাতালে ঠিকঠাক দায়িত্ব পালন করুক। এতে মানুষ চিকিৎসাসেবা পাবে। কিন্তু ডেপুটেশনে থাকা চিকিৎসকরা যাবেনও না, পদও খালি হবে না।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু সামা বলেন, ‘চিকিত্সক ও অন্যান্য পদের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে।’
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম বলেন, ‘ভূঞাপুর ৫০ শয্যা-বিশিষ্ট সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাতে মানুষ সঠিক চিকিৎসা পায়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।