পরিচ্ছনতায় নেমেছেন শিক্ষকরা

সখীপুরের ১৪৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭৯ টিতে নেই দপ্তরি

স্টার্ফ রিপোটার
প্রকাশিত: ০২:২০ পিএম, শনিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ৪৪৮

করোনার কারণে দীর্ঘ ৫৪৩ দিনপর সরকারী নির্দেশনায় আগামী ১২ সেপ্টেম্বর খুলছে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। খোলার আনন্দেই চলছে দেশ জুড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধোয়ামোছাসহ নানা প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম।

তবে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার ১৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭৯টি বিদ্যালয়ে দপ্তরি নেই। যার ফলে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকরাই নেমেছেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে।

সখীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানায়, বিশ^ মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সরকারি ঘোষণার পর থেকে উপজেলার ৫০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২৭টি মাদরাসা, কারিগরিসহ ১০টি কলেজ (উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত)সহ ১৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তবে এ উপজেলার ৭৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই দপ্তরি।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের চাম্বলতলা, বেলতলী ধলীপাড়াা, দেবলচালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা শ্রেণিকক্ষ ধোয়ামোছা করছেন। চাম্বলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছেন মাত্র তিনজন শিক্ষক। এরই মধ্যে একজন করছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন। 

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শেফালী আক্তার বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে নেই দপ্তরি। এ কারণে আমরা নিজেরাই বালতিতে পানি নিয়ে বেঞ্চ পরিষ্কার করছি। শ্রেণিকক্ষ আর আঙিনা ঝাড়– দিয়েছি। এরপরও ঝোপঝাড় পরিষ্কারের জন্য নেয়া হয়েছিল দুইজন শ্রমিক। 

চাম্বলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিরিনা আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লকের (শৌচাগারে) কাজ চলছে। করোনার কারণে এক বছর ধরে ঠিকাদার কাজ করছে না। এর ফলে স্কুল খুললে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের পাশের বাড়িগুলোর শৌচাগার ব্যবহার করতে হবে। বিদ্যালয়ে দপ্তরি না থাকাসহ শৌচাগার নিয়ে চরম সমস্যায় পরবেন তারা। 

এক অবস্থা বেলতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। ওই বিদ্যালয়ে চারজন শিক্ষক ঝাড়– দিচ্ছেন শ্রেণিকক্ষ।

 শিক্ষক কামরুননাহার বলেন, দপ্তরি না থাকায় নিজেদেরই শ্রেণীকক্ষ ঝাড়– দিতে হচ্ছে। এরপরও দীর্ঘ দেড় বছর ধরে বন্ধ থাকায় বিদ্যালয়ের নলকূপটি বিকল হয়ে আছে। সেটি মেরামতের কাজ চলছে।

সখীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল বলেন, উপজেলার দপ্তরিহীন পরিচালিত ৭৯টি বিদ্যালয়ে দ্রুত দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরী নিয়োগের জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও তাঁরা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, তাপমাত্রার মেশিন আর একটি আলাদা আইসোলেশন কক্ষ ঠিক করে রেখেছেন। স্কুল খোলার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সব কার্যক্রম চালানো হবে।

এ বিষয়ে সখীপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রাফিউল ইসলাম বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রস্তুত রাখতে সব ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরী না থাকার বিষয়টিও জানানো হয়েছে। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দপ্তরি নেই, তাদের দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে শ্রমিক নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। স্কুল খোলার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান তিনি।