চকরিয়াতে ইভটিজিং রোধে নাই কারো নজরদারি!

এম.জুনাইদ উদ্দিন
প্রকাশিত: ১২:৪৮ পিএম, রোববার, ১৪ জানুয়ারী ২০১৮ | ৬৮৮

ইভটিজিং সময়ের অতিমাত্রায় আলোচিত একটি বিষয়। ইভটিজিং দেশের হাজারো সমস্যাকে ছাপিয়ে এখন প্রধান সামাজিক সমস্যায় রূপ নিয়েছে।

ঢাকাসহ সারাদেশে নারী উত্ত্যক্তকারীদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে নানা কৌশল অবলম্বন করে আসছে সরকার। কিন্তু দিন দিন বেপরোয়াভাবে ইভটিজিংয়ের ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে। অভিভাবকরাও এ নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন। অনেক সময় মা-বাবার সামনেই সন্তানদের বখাটেরা হুমকি দিচ্ছে। থানায় অভিযোগ করলে নেমে আসে নানা নির্যাতন কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না ইভটিজিং।

তেমনি চকরিয়াতেও  আগের চেয়ে বেড়ে গেছে বখাটেদের উৎপাত। বলা যায়, চকরিয়ার বিভিন্ন পয়েন্টে বেপরোয়াভাবে ইভটিজিংয়ের হার বেড়ে যাচ্ছে।

যেমন বিশেষ করে চকরিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ, চকরিয়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে, চকরিয়া আবাসিক মহিলা ডিগ্রি কলেজ, চকরিয়া কেন্দ্রীয় উচ্চ বিদ্যালয়, মগবাজারের পূর্ব পাশে শেখ রাসেল স্কুলের সামনে  ও চকরিয়া বি. এন স্কুল এন্ড কলেজের সামনে বিভিন্ন বখাটে ছেলেদের যত্রতত্র বসে থাকা  কিংবা চলাফেরা মাধ্যমে স্কুল ছাত্রীদের সাইলেন্টলি কিংবা সরাসরি ডিস্টার্ব করে যাচ্ছে এবং সেলুন, চায়ের স্টল, ফুটপাতের দোকান ও অলিগলিতে বখাটেরা নিয়মিত আড্ডা দিচ্ছে।

স্কুল-কলেজগামী ছাত্রীদের দেখে বখাটেরা অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করছে। অনেকেই আবার মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় তাদের ছবি তুলে তা দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। যা আজও দেখা যাচ্ছে। 

এদিকে ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত মিছিল-মিটিং, সভা-সমাবেশ, সেমিনার, মানববন্ধন, প্রবন্ধ প্রকাশ করে এর প্রতিবাদ করলেও ইভটিজিং কিন্তু কমছে না বরং সময়ের সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে ইভটিজিং ক্যান্সার রোগের মত প্রকট আকার ধারণ করছে।কি গ্রাম আর শহর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে এর ব্যাপকতা।

মনে করি দেশব্যাপী ব্যাপকতর এ ইভটিজিংয়ের পেছনে রয়েছে নানান কারণ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হচ্ছে-সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পারিবারিক ও নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, সন্তান বেড়ে উঠা তথা সচেতনতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে মাতা-পিতার অসচেতনতা, শিক্ষা ব্যবস্থায় সুস্থ চরিত্র গঠন উপযোগী যথাযথ ধর্মীয় শিক্ষার কারিকুলাম না থাকা, মেয়েদের উগ্র পোশাক পরে দেহ প্রদর্শনী ও চলাফেরা, ছেলে-মেয়েদের অবাধ মেলামেশা, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নাচ-গানের যথেচ্ছ ব্যবহার, নারীকে পণ্য ও ভোগ্যবস্তু মনে করা, স্যাটেলাইট টিভির অবাধ ও অনিয়ন্ত্রিত প্রদর্শনের মাধ্যমে পর্নোর ছড়াছড়ি এবং সর্বোপরি সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার অভাব।

আরও বলতে গেলে যার জন্য সামাজিক আন্দোলন চালিয়েও সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারি ভাবে স্কুল-কলেজে গোয়েন্দা নজরদারির কথা থাকলেও তা বাস্তবে নেই বললেই চলে। সুতরাং সরকারের পাশাপাশি সত্যিকারার্থেই যদি আমরা ইভটিজিংমুক্ত সমাজ চাই তাহলে ধর্মীয় অনুশাসন অনুশীলন করতে হবে, কেননা ধর্মীয় অনুশীলনই কেবলমাত্র ইভটিজিং বন্ধ করতে পারে এবং এটাই একমাত্র পথ।

পরিশেষে বলতে চাই, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলর, রাজনৈতিক ব্যক্তিগণ ও সরকারি বেসরকারি ব্যক্তিবর্গদের সুনজর থাকলে আশা করি ইভটিজিংয়ের মতো সামাজিক ব্যাধি রোধ করা সম্ভব হবে বলে মনে করি।