ক্ষেপণাস্ত্রের বিশাল ভাণ্ডার উন্মোচন করল ইরান, যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৫৬ পিএম, শনিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২১ | ২০৬

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান তীব্র উত্তেজনার মধ্যেই পারস্য উপসাগরীয় উপকূলীয় এলাকার মাটির নিচে ক্ষেপণাস্ত্রের বিশাল ভাণ্ডার উন্মোচন করল ইরানের এলিট ফোর্স বিপ্লবী গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)।

দেশটির রাষ্ট্রীয় টিভিতে একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, ঘাঁটির প্রবেশ মুখের নিচে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইলের পতাকা আঁকা। এমনভাবে আঁকা হয়েছে প্রবেশকারীরা যাতে ভেতরে যাওয়ার সময় পতাকা মাড়িয়ে যেতে পারেন। আইআরজিসির শীর্ষ কর্মকর্তারা সেগুলো দেখছেন।

তারপর তারা একটি সুড়ঙ্গ ধরে এগিয়ে যান। ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র এবং রকেট লাঞ্চার সাজানো ছিল।

‘আমাদের পেছনে একটি কলাম রয়েছে। এটাতে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের পাটাতন দেখতে পাচ্ছেন। কলামের দৈর্ঘ্য কয়েক কিলোমিটার।’ লাঞ্চার গ্যালারির সামনে দাঁড়িয়ে বলছিলেন আইআরজিসি’র প্রধান হোসাইন সালামি। বলেন, আইআরজিসি নেভি শাখার এমন অনেক ঘাঁটি রয়েছে।

‘আজ আইআরজিসি নেভি’র ক্ষেপণাস্ত্রের আওতায় কয়েকশ’ কিলোমিটার। নির্ভুলভাবে টার্গেট করার হার অনেক উন্নত হয়েছে। ব্যাপক বিধ্বংসী ক্ষমতা সম্পন্ন এগুলো’ বলেন সালামি।

উন্মোচন করা ঘাঁটির অবস্থান কোথায় তা জানা যায়নি। গেল সপ্তাহে কাসেম সোলাইমানির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীকে সামনে রেখে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়। এরপরই মাটির নিচের ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি উন্মোচন করল তেহরান।

ঘাঁটি উন্মোচনের কয়েক ঘণ্টা আগে পরমাণু অস্ত্রবাহী বি-৫২ স্ট্র্যাটেজিক বোমারু বিমান মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে ওই অঞ্চলে দুই মাসের মধ্যে চতুর্থবার বিমান দুটি মোতায়েন করল ওয়াশিংটন।

গেল সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যের নিজেদের ঘাঁটি থেকে পরমাণু অস্ত্রবাহী মার্কিন নৌবাহিনীর একমাত্র বিমানবাহী রণতরী ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ওয়াশিংটন। কর্মকর্তারা জানান, ইরানের হুমকির কারণ সিদ্ধান্ত বদলাতে হয়েছে তাদের।

২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানের বিপ্লবী গার্ডের বিদেশ শাখা কুদস বাহিনীর প্রধান কাসেম সোলাইমানিকে ড্রোন হামলায় হত্যা করে মার্কিন বাহিনী। তার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে তেহরান প্রতিশোধমূলক যে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে এমন শঙ্কায় নানারকম তৎপরতা দেখায় ওয়াশিংটন এবং তার মিত্ররা।

সোলাইমানির মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রতিশোধ নেয়ার প্রতিশ্রুতি ফের ব্যক্ত করেন ইরানের কর্মকর্তারা। তারা বলেন, প্রতিশোধের জন্য আরও মোক্ষম সময়ের অপেক্ষায় আছেন তারা।

যে কোনো ধরনের উস্কানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে ইরান। তেহরান বিশ্ব শক্তিকে জানায়, তারা যুদ্ধ চায় না। তবে যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালালে আত্মরক্ষামূলক সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে তারা।

মাটির নিচের ক্ষেপণাস্ত্রের ঘাঁটি উন্মোচনের দু’দিন আগে নিজেদের তৈরি অস্ত্রের মাধ্যমে প্রথমবার সামরিক মহড়া চালায় তেহরান। উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশের সেমনানে চালানো মহড়ায় স্থল, এবং জলের লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন হামলার অনুশীলন করা হয়।