গণতন্ত্র কবরে শুয়ে আছে- ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী
মওলানা ভাসানীর মাজার জিয়ারত শেষে ভাসানী অনুসারী পরিষদের ব্যানারে গণস্বাস্থের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্র কবরে শুয়ে আছে। এখন কি হরিবল বলে আগুন দিবেন, নাকি মাটি দিবেন এরই অপেক্ষায় আছে মানুষ। তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্র দেখতে চাই, জবাবদিহিতা দেখতে চাই, মানুষের কথা বলার অধিকার চাই। এ সময় ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রফেসর ড. জিএম শাফিউর রহমান, মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর এবং সদস্য মো. আকতার হোসেন তাঁর সাথে ছিলেন।
মঙ্গলবার(১৭ নভেম্বর) আফ্রো এশিয়া- লাতিন আমেরিকার বুজুর্গপীর ও নির্যাতিত-নিপীড়িত গণমানুষের কণ্ঠস্বর মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও কবর জিয়ারত শেষে ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এ সব কথা বলেন ।
ভাসানীর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না..কাদের সিদ্দিকী
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম বলেছেন, এ দেশে মওলানা আব্দুল হামিন খান ভাসানীর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না। আমরা কেউ এ পর্যায়ে আসতে পারতাম না, বঙ্গবন্ধুও জাতির পিতা হতেন না।
তিনি বলেন, আমার রাজনৈতিক পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক পিতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী। মজলুম জননেতা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী একজন ঐতিহাসিক নেতা। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের সবার ভাসানীর জীবন ও চরিত্র আরও কঠিনভাবে অধ্যায়ন করা উচিত।
বঙ্গবীর বলেন, আমাদের দেশের এই দুর্যোগ থেকে অব্যাহতি পেতে হলে আমাদের আরও দৃঢ়, সৎ ও ত্যাগী হতে হবে। এখন হুজুরের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে হাজারো মানুষ তাঁর কবর প্রাঙ্গণে ছুটে আসেন। কিন্তু আমরা যাঁরা নেতা- তাঁরা অতীতকে স্বীকার করিনা। তাঁদের কিন্তু অনেক দুর্দশা হবে। সে জন্যই বলছি যাঁর যে মর্যাদা বিশেষ করে স্বাধীনতায় যাঁর যে মর্যাদা সবারই তা স্বীকার করা উচিত। দেশকে পরিচালনা করতে হলে সবাইকে নিয়ে অগ্রসর হওয়া উচিত।
বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতিতে বিশ্বস করেনা.. বরকতউল্লাহ বুলু
টাঙ্গাইলের সন্তোষে মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর মজারে পুস্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু বলেন, আজকে ভাসানী বেঁচে থাকলে দেশে ভোটার বিহীন নির্বাচন হতোনা। ভাসানীর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে এই স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটাতে হবে। এ সময় তিনি বলেন, বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতিতে বিশ^াস করেনা। জনগনকে সাথে নিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাস করে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভোটের মাধ্যমে বিএনপি সরকার পরিবর্তনে বিশ্বাস করে। এ সময় কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শিমুল বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় জাসাস’র সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসাইন রোকন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম স্বপন সহ জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ভোটার বিহীন ভোট আর রাষ্ট্রযন্ত্র কাজে লাগিয়ে ক্ষমতায় এসেছে সরকার..জুনায়েদ সাকী
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকী বলেন, ভোটার বিহীন ভোট আর বাষ্ট্রযন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে এ সরকার ক্ষমতায় এসেছে। এ শাসন চালিয়ে যেতে জনগণের নাভিশ্বাস সৃষ্টি করেছে। জীবনযাত্রার ব্যায় বৃদ্ধি পেয়েছে। জনগণের নেই নুন্যতম নিরাপত্তা। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী হয় থানায় নিয়ে পিটিয়ে না হয় ক্রসফায়ারে মানুষ মেরে ফেলছে। ধষৃণ ভয়াবহ রূপ পেয়েছে।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনতা টাঙ্গাইলের সন্তোষে প্রয়াত জননেতার মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও কবর জিয়ারত করতে ভির করেন।
সরকারি স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সকাল সাড়ে ৭ টায় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আলাউদ্দিন পুস্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে মজলুম জননেতার ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এরপর ভাসানীর পরিবারের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অর্পন করা হয়। পরে ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায়েও মওলানা ভাসানীর মাজারে পুস্পার্ঘ অর্পণ ও মোনাজাত করা হয়।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম ও বিএনপির পক্ষ থেকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু ভাসানীর মাজারে পুস্পস্তবক অর্পণ ও মোনাজাত করেন। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাজাহান আনছারী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান মিরনের নেতৃত্বে মাজারে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের ব্যানারে সভাপতি ও গণস্বাস্থের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ভাসানীর মাজারে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকী, ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ মওলানা ভাসানীর মাজারে পুস্পস্তবক অর্পণ ও মোনাজাতে অংশ নেন।
এছাড়াও জেলা জাতীয় পার্টি, কমিউনিষ্ট পার্টি, ভাসানী স্মৃতি সংসদ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, জাসাস, ভাসানী আদর্শ অনুশীলন পরিষদ, ভাসানী স্মৃতি পরিষদ, ন্যাপ ভাসানী, আওয়ামী সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অর্পণ ও মোনাজাত করা হয়। সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে পৃথক বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।
বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং ক্যাম্পাসে অবস্থিত শাহ্ নাসিরউদ্দিন বোগদাদী এতিমখানায় কোরআন খতম ও এতিমদের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭৬ সালের এইদিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বরেণ্য এই নেতা মৃত্যুবরণ করেন।
