বিদ্যুৎবিহীন রেফ্রিজারেটর আফ্রিকায়!

ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:৪৪ পিএম, বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ | ৪৩০

খাবার সংরক্ষণ আফ্রিকার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের একটি বড় সমস্যা। আবহাওয়ার কারণে এসব অঞ্চলের খাবার দ্রুত পচে যায়। দূরবর্তী এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহও সম্ভব হয় না। তাছাড়া রেফ্রিজারেটরের খরচ বহন করার ক্ষমতাও থাকে আফ্রিকার গরিব দেশগুলোর অধিবাসীদের।

এ সমস্যার সহজ সমাধান এনে দিলেন এক নাইজেরিয়ান। মোহাম্মেদ বাহ্ আব্বা নামের ওই নাইজেরিয়ান খাবার ঠাণ্ডা রাখার প্রাচীন পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে উদ্ভাবন করেছেন সস্তা ও পরিবহনযোগ্য এক রেফ্রিজারেটর। সবচেয়ে বড় কথা এ রেফ্রিজারেটরের জন্য কোনো বৈদ্যুতিক সংযোগের প্রয়োজন নেই এবং আফ্রিকান আবহাওয়ার জন্য এটি অধিক কার্যকরী। আব্বা পেশায় ছিলেন একজন কলেজ লেকচারার।

কিন্তু তার পূর্ব-পুরুষরা কাদা-মাটির পাত্র তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ৯০-এর দশকে নিজের পূর্ব-পুরুষের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে এক ধরনের পাত্র তৈরি করলেন তিনি। এ পাত্র পচনশীল খাবার সপ্তাহেরও বেশি সময় টাটকা রাখতে সক্ষম।

মূলত দু’টি আলাদা আলাদা পাত্রের সমন্বয়ে তৈরি করা হয় পাত্রটি। একটি বড় পাত্রের ভিতর স্থাপন করা হয় অপেক্ষাকৃত ছোট আরেকটি পাত্র। পাত্র দু’টির মাঝের ফাঁকা স্থান ভেজা বালু দিয়ে ভরে ফেলা হয়। সংরক্ষণের জন্য খাবার রাখা হয় ভিতরের পাত্রটিতে। এরপর তা ভেজা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। ছবি-সংগৃহীতপাত্র দু’টির মাঝে রাখা বালু থেকে পানি বাষ্পে পরিণত হয় এবং তা ভিতরের পাত্রের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৫ ডিগ্রি সে.) পর্যন্ত রাখে।

এ তাপমাত্রায় শুধু খাবার নয় বরং প্রতিষেধক ওষুধ ও ভ্যাকসিনও সুরক্ষিত রাখে। পাত্রের ভিতর পাত্র পদ্ধতি চালুর পর থেকে ওই অঞ্চলের কৃষকরা লম্বা সময়ের কথা মাথায় রেখে চাষাবাদ করা শুরু করে। গ্রামের অধিবাসীদের কাছে সুলভ মূল্যে টাটকা খাবার সরবরাহ সম্ভব হয়। ২০১০ সালে আব্বা মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি স্থানীয় মৃৎশিল্পীদের সাহায্যে কয়েক হাজার শীতল পাত্র তৈরি করেন এবং তা আশপাশের গ্রামে বিতরণ করেন।

তিনি অশিক্ষিত গ্রামবাসীকে এ পাত্র তৈরির পদ্ধতি শেখান। টাইম ম্যাগাজিনের হিসাব মতে, ২০১৬ সালে এক লাখেরও বেশি শীতল পাত্র তৈরি হয় এবং তা ওই বছরের সেরা আবিষ্কারগুলোর একটি হিসেবে প্রশংসিত হয়।