মধুপুরের বাসন্তী রেমা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে ঘর

হাফিজুর রহমান.মধুপুর
প্রকাশিত: ১১:২১ এএম, শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ৪৯১

টাঙ্গাইলের মধুপুরে বন বিভাগ কর্তৃক গারো আদিবাসী বাসন্তী রেমা নামের এক কৃষাণীর কলা বাগানের কলা গাছ কেটে ফেলায় ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাচ্ছে ঘর ও অর্থ।

বন বিভাগ জানায়, মধুপুরের শাল গজারী বনের দোখলা রেঞ্জ অফিসের পূর্ব পাশেই বন বিভাগের রেকর্ডকৃত ৪০ শতাংশ জায়গা স্থানীয় অদিবাসী নারী বাসন্তী রেমা বেদখল করে শোলাকুড়ী ইউনিয়নের শহিদ আলীর কাছে টাকার বিনিময়ে লিজ দিয়েছিলেন। সেখানে শহীদ আলী কলা বাগান করেছিলো।

বাংলাদেশ বন বিভাগের উচ্ছেদ অভিযানের অংশ হিসেবে অরণখোলা মৌজায় সিএস দাগ নম্বর ১৩ পেগামারী এলাকায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর বন বিভাগের দোখলা রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার আব্দুল আহাদ তার অফিসের লোকজন নিয়ে বন বিভাগের সেই বেখল কৃত জায়গার কলা গাছ কেটে জবর দখলমুক্ত করা হয়।

সেখানে সামাজিক বনায়ন সৃজন করতে আকাশমনি গাছের চারা লাগাতে গেলে গারো আদিবাসী বাসন্তী রেমা ও তার আদিবাসী লোকজন নিয়ে রেঞ্জ অফিস ঘেরাও সহ অফিসের কর্মকর্তাদের উপর হামলা চালায়। এবং ২ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। বনের জায়গা থেকে জবর দখলকারীর কলা গাছ কেটে ফেলায় বাসন্তী রেমা সহ আদিবাসীরা ক্ষতিপূরণের দাবীতে মানববন্ধন বিক্ষোভ সমাবেশ করে তারা ।

গারো আদিবাসী ও বন বিভাগ দুই পক্ষের মধ্যেকার এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর ) টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: জামিরুল ইসলাম, টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো: জহিরুল হক, সহকারী বন সংরক্ষক জামাল হোসেন তালুকদার, দোখলা রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল আহাদ, মধুপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ সরোওয়ার আলম খান আবু, মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফা জহুরা, মধুপুর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান যষ্ঠিনা নকরেক, সহকারী পুলিশ সুপার মধুপুর সার্কেল কামরান হোসেন, মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ তারিক কামাল, মধুপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি এ্যাডভোকেট ইয়াকুব আলী, শোলাকুড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন, অরণখোলা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম সহ গারো আদিবাসী নেতা ইউজিন নকরেক, হেলিন জেত্রা, অজয় মৃ, বিল্পব সিম সাং, উইলিয়াম দাজেল, বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জন জেত্রা, সাবেক সহ সভাপতি শ্যামল মানখিন, সহ অন্যারা বৈঠকে বসে সকলের সিদ্ধান্তে বাসন্তী রেমা’র মতামতে তাকে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফিরা জহুরা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল হতে একটি বাড়ী করে দিবে, মধুপুর উপজেলা চেয়ারম্যান তাকে ১৫ হাজার টাকা দিবে, শোলাকুড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন ৫ হাজার টাকা দিবে।

এসময় টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা তিনি বাসন্তী রেমা কে অর্থিক সহয়তা দিবে বলে জানিয়েছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: জামিরুল ইসলাম জানান,মধুপুরের বন বিভাগের জবর দখলকৃত কোন জায়গা উদ্ধার অভিযান করতে হলে জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় আদিবাসী নেতা সহ জবরদখলকারী কে আগে থেকে জানাতে হবে। ইচ্ছে করলেই আর তারা আদিবাসীদের উপর উচ্ছেদ অভিযান করবে না এই সকল সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যাতে বন বিভাগের সাথে বনে বসবাসরত আদিবাসীদের সাথে যাতে কোন প্রকার বিরোধ না হয়।

এদিকে দোখলা ডাক বাংলোর সামনে অবস্থান নেওয়া বিক্ষোবদ্ধ স্থানীয় আদিবাসীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করে। বৈঠক শেষে শান্তিপূর্ণ সমাধানের কথা শুনে তারা সন্তুুষ্ট হয়ে বাড়ী ফিরে যান।

ভোগক্তভোগী বাসন্তী রেমা জানান, আমি সকলের সিদ্ধান্ত খুশি মনে গ্রহন করেছি।