সেই পাষন্ড স্বামীর গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন


স্ত্রীর চোখ উপরে ফেলানো সেই পাষন্ড স্বামী ফারুক হোসেনকে দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্ত মুলত শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। বুধবার বেলা ১১ টার দিকে টাঙ্গাইল-ভূঞাপুর সড়কের কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া বাসস্ট্যান্ডে মানববন্ধনে কয়েক শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এতে বক্তব্য রাখেন নারান্দিয়া ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন, মহিলা সদস্য তাসলিমা আক্তার, স্থানীয় ফারুক চৌধুরী, জাহিদ হোসেন, আব্দুল মান্নান তালুকদার প্রমুখ।
জানা যায় টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বুসুন্দী গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে ফারুক হোসেনের সাথে ৫ বছর আগে কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের মাইস্তা দড়িপাড়া গ্রামের মজিবর শেখের মেয়ে আঁখি আক্তারের(২২) বিয়ে হয়। তাদের ফারজানা (৩) নামে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ফারুকের বাবা বিদেশ থাকায় সে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। ফারুক তার স্ত্রী আঁখি আক্তারকে দিয়ে মাদক বিক্রি করতে চাইলে সে অস্বীকৃতি জানায়। এতে ফারুক ক্ষিপ্ত হয়ে প্রায়ই নির্যাতন করতো। স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে এক পর্যায়ে আঁখি তার বাবার বাড়ি চলে আসে। পরবর্তীতে শালিসী বৈঠকের মাধ্যমে মীমাংসা করে আঁখি আক্তারকে ফারুকের বাড়ি পাঠানো হয়। কিন্তু তারপরও ফারুক তার স্ত্রীকে মাদক বিক্রি করতে চাপ দিতে থাকে। কিন্তু সে মাদক বিক্রিতে রাজি না হওয়ায় তার উপর চলে অকথ্য নির্যাতন।
এক বছর আগে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আঁখি বাবার বাড়ি চলে আসেন এবং গাজীপুরে পোষাক তৈরী কারখানায় চাকুরী নেন। ফারুক তাকে ফোন করে চোখ উপড়ে ফেলাসহ প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে। গত রমজান মাসে ফারুক গাজীপুরে আঁখির বাসায় গিয়ে ছুরি দিয়ে হামলা চালালে আঁখি আহত হয়। ওই ঘটনায় গাজীপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়।
গত রবিবার ভোর রাতে ফারুক গোপনে শ^শুড় বাড়ি এসে সিঁধ কেটে আঁখিদের ঘরে প্রবেশ করে। সে সূতা কাঁটার কাঁচি দিয়ে আঁখির চোখে আঘাত করে। এতে তার চোখ উপড়ে যায়। লোকজন আসার আগেই ফারুক পালিয়ে যায়। পরে আঁখিকে রক্তাক্ত অবস্থায় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার আগারগাঁও জাতীয় চক্ষু ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।
আঁখির চাচা আলী আকবর বলেন ফারুকের কাঁচির আঘাতে আঁখির বাম চোখ উপড়ে গেছে। চিকিৎকরা বলেছে তার চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। সে আর ওই চোখ দিয়ে দেখতে পাড়বেনা।
কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ হাসান আল মামুন বলেন,এ ঘটনায় আঁখির বাবা মজিবর রহমান বাদি হয়ে ফারুককে একমাত্র আসামী করে মামলা দায়ের করেছে। তাকে গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা চলছে।