থামছেনা শিশু শ্রম, হুমকির মুখে শিশুরা


আজকের শিশুরাই দেশ ও জাতির কর্ণধার। আজকের শিশুরাই আগামী দিনের দেশ, জাতি ও রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করবে। এজন্য শিশুদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা অত্যাবশ্যক। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও মেধার বিকাশের জন্য নানা ধরণের পরিচর্যা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে শিশুরা অশিক্ষা ও দারিদ্র্যের কারণে তাদের মৌলিক অধিকার থেকে নানাভাবে বঞ্চিত হচ্ছে। অভাবের কারণে জীবনের শুরুতেই তারা বিভিন্ন শ্রমের পেশায় জড়িত হতে হচ্ছে।
জাতিসংঘের শিশুসনদের সংজ্ঞা অনুযায়ী ১৮ বছরের কম বয়সী সকলকেই শিশু বলে অভিহিত করা হয়েছে। এ সংজ্ঞাঅনুযায়ীবাংলাদেশেরমোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৫% শিশুর মধ্যে পড়ে যায়। বাংলাদেশের শিশুর সর্বজন স্বীকৃত কোনো নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই। জাতীয় শিশু নীতিতে ১৪ বছরের কম বয়সীদের শিশু বলা হয়েছে। সংবিধিবদ্ধ আইনের ধারা অনুযায়ী ১৭ বছরের কম বয়সীদের শিশু বলা হয়েছে। আবার কোনো কোনো আইনে শিশুদের বয়সসীমা ১১ এর মধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের অধিকাংশ পরিবারই অর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছল। এইসব পরিবারের শিশুদের ছোট বেলা থেকেই উপার্জনের চিন্তা করতে হয়।
বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক শিশুই দৈনন্দিন জীবিকা নির্বাহের জন্য নানা ধরণের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা ও ইউনিসেফ পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায় যে, বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে প্রায় ৩০১ ধরণের অর্থনৈতিক কাজ-কর্মে শিশুরা শ্রম দিচ্ছে। এদের মধ্যে রয়েছে কুলি, হকার, রিকশা চালক, ফুলবিক্রেতা, আবর্জনা সংগ্রাহক, ইট-পাথর ভাঙ্গা, হোটেল বয়, বুননকর্মী, মাদক বাহক, বিড়ি শ্রমিক ও কলকারখানার শ্রমিক ইত্যাদি। শিশু শ্রমকে দারিদ্র্যের ফসল বলা যায়।
কারণ পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণেই শিশুরা বাধ্য হয়ে শ্রমের সাথে জড়িয়ে পড়ে। ইউনিসেফ পরিচালিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায় ৪৩% শ্রমজীবী শিশু পারিবারিক অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে শহরে স্থানান্তরিত হয়ে বিভিন্ন ধরণের কাজের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে।
বাংলাদেশের শিশু শ্রমের কারণগুলো নিচে আলোচনা করা হলো বাংলাদেশের অধিকাংশ শিশুই দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করে। ফলে এই সব পরিবারের শিশুরা তাদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য কর্মে নিযুক্ত হয়।- অনেক সময় অভিভাবকরা আর্থিক সংকটের কারণে তাদের ছেলেময়েদের স্কুলে পাঠাতে ব্যর্থ হয়। বাংলাদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যয়ভার অনেক বেশি। গ্রামাঞ্চলের অনেক পরিবারের শিক্ষা সম্পর্কে অসচেতনতা।–দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অপ্রতুলতা এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি।
শিশুর অধিকার সম্পর্কে আইনগত পদক্ষেপের অভাব। বাংলাদেশের শ্রমবাজারে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে পুরো দেশ ও জাতি অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। যেহেতু শিশুরা আগামী দিনে দেশ ও জাতির হাল ধরবে তাই শিশুদের শ্রম থেকে মুক্তি দিয়ে শিক্ষায় আলোকিত করতে হবে। সেইজন্য দরিদ্র শিশুদের শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য প্রধান মন্ত্রী সহ সিটি মেয়োর দের দৃষ্টি আর্কশন করছি।