বড় ভাইকে ফাঁসাতে ছেলেকে নিয়ে নিজের স্ত্রীকে হত্যা!

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৯:২০ পিএম, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০১৯ | ২২১৪

প্রতিপক্ষ বড় ভাইকে ফাঁসাতে ছেলে ও ভাতিজার সহায়তায় নিজের স্ত্রী চার সন্তানের জননী সুফিয়া বেগমকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেছে তার পাষন্ড স্বামী। ঘাতক স্বামী মো. আলাল উদ্দিন বৃহস্পতিবার বিকেলে টাঙ্গাইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন।

গত সোমবার সকালে মির্জাপুর থানার দেওহাটা ফাঁড়ি পুলিশ উপজেলার আজগানা বিল থেকে সুফিয়া বেগমের মরদেহ উদ্ধার করেন। সুফিয়া বেগম ওই গ্রামের আলাল উদ্দিনের স্ত্রী।

পুলিশ জানায়, আলাল উদ্দিনের সঙ্গে বড় ভাই মিনহাজের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে বড় ভাই মিনহাজকে ফাঁসানোর জন্য আলাল উদ্দিন নিজের স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য নিজের বড় ছেলে মাদক বিক্রেতা শরীফুল ইসলাম ও কালিয়াকৈর উপজেলার মাটিকাটা গ্রামের আলালের স্ত্রীর ভাই মোতালেব হোসেনের ছেলে স্বপন মিয়াকে টাকা ও জমির লোভ দেখান।

পরে গত শনিবার রাতে আলাল উদ্দিন ছেলে শরীফুলকে দিয়ে তার মাকে মাদক আনার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নেন। বাড়ির পাশে আজগানা বিলের কাছে পৌঁছালে সেখানে স্বামী আলাল উদ্দিনকে দেখে স্ত্রী সুফিয়া বলেন তুমি এখানে কেন। এর জবাবে আলাল উদ্দিন স্ত্রীকে বলেন, দুইজনে বিলে গোসল করলে আমাদের রোগ বালাই ভালো হবে। এতে সরল বিশ্বাসে সুফিয়া স্বামীর সঙ্গে বিলের পানিতে নামেন। সেখানে স্বামীর হাতে থাকা চাকু দিয়ে সুফিয়াকে হত্যার চেষ্টা করে। পরে স্বামী আলাল উদ্দিন, ছেলে শরীফুল ও ভাতিজা স্বপন পানিতে নেমে হাত পা ধরে চুবিয়ে সুফিয়াকে হত্যা করে বাড়ি চলে যায়।

গত সোমবার সুফিয়ার ভাই মেছের আলী বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওইদিন রাতে পুলিশ ঘাতক স্বামী আলাল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেন। পরে তার দেয়া তথ্য মতে গতকাল বুধবার রাতে মির্জাপুর থানা পুলিশ আলাল উদ্দিনের বাড়ি থেকে ছেলে শরীফুল ও ভাতিজা স্বপনকে গ্রেপ্তার করে। বুধবার বিকেলে সুফিয়ার স্বামী আলালকে টাঙ্গাইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে সেখানে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দেয়।

অপর দুই ঘাতককে শুক্রবার রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠানো হবে। বড় ভাইকে ফাঁসানোর জন্য ছেলে ও সমুন্ধির ছেলেকে নিয়ে পাষন্ড স্বামী স্ত্রীকে হত্যা করেন বলে ওসি সায়েদুর রহমান জানিয়েছেন।